Home সারাদেশ ঘূর্ণিঝড় ”মোখা”র প্রভাবে মোংলা বন্দরে ঢুকতে পারছেনা দুই বিদেশী জাহাজ

ঘূর্ণিঝড় ”মোখা”র প্রভাবে মোংলা বন্দরে ঢুকতে পারছেনা দুই বিদেশী জাহাজ

29

জেটিতে নিরাপদে চার যুদ্ধ জাহাজ

মোংলা থেকে মোঃ নূর আলমঃ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায় পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ”মোখা” উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ১৪ মে দিনের যে কোন সময়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। মোংলা সমুদ্র বন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত বহাল রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে মোংলা বন্দরে ঢুকতে পারছেনা ২ বিদেশি জাহাজ। বন্দর জেটিতে নিরাপদ আশ্রয়ে নোঙ্গর করেছে নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ডের চারটি যুদ্ধ জাহাজ। মোংলা বন্দরের সাত ও আট নম্বর জেটিতে শুক্রবার রাতে এই চারটি জাহাজ নোঙ্গর করে। এর মধ্যে আছে নৌ বাহিনীর ‘বি এন এস বঙ্গবন্ধু’ ও ‘বি এন এস স্বাধীনতা’ এবং কোস্টগার্ডের ‘তাজউদ্দিন’ ও ‘সৈয়দ নজরুল’ জাহাজ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহিন মজিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা’র কারণে সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে জাহাজ গুলি বন্দরের জেটিতে নিরাপদে নোঙ্গর করেছে। দূর্যোগ কেটে গেলে পুনরায় এসব জাহাজ তাদের গন্তব্যে ফিরে যাবে। এছাড়া আরও কয়েকটি যুদ্ধ জাহাজ মোংলার নৌ ঘাটি ও কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা সদও দফতর) ঘাটিতে নিরাপদে নোঙ্গরে আছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে এই সমুদ্র বন্দরে জারি করা হয়েছে বন্দরের নিজস্ব এলার্ট ‘২’। একই সাথে ঝুঁকি এড়াতে দুটি বিদেশি জাহাজকে বন্দরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছেনা। জাহাজ দুটি হচ্ছে-ভিয়েতনাম পতাকাবাহী ওশানস লাইন ও মার্শাল আইল্যান্ড পতাকাবাহী ইকো গ্যালাক্সী। এই দুই জাহাজে গ্যাস আমদানি করা হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহিন মজিদ এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গ্যাস নিয়ে ওশান লাইনস জাহাজটি বন্দর এলাকায় যমুনা এলপিজির জেটিতে এবং ইকো গ্যালাক্সী জাহাজের গ্যাস পেট্রোম্যাক্স এলপিজিতে শনিবার (১৩ মে ) আসার কথা ছিল। কিন্তু দূর্যোগের কারণে মোংলা বন্দরের বাইরে হিরণ পয়েন্টে অবস্থান করছে জাহাজ দুটি। অবস্থা আরও বেশি খারাপ হলে ওই দুটি জাহাজকে চট্টগ্রাম বন্দরে চলে যাওয়ার জন্য বলা হবে। এছাড়া পণ্য খালাস শেষে শনিবার দুপুর ৩টায় মার্কেন্টাইল-৪৪, জাহান ব্রাদার্স, ইন্দিগো ওমেগা এবং ক্যায়সা ওয়ান নামে চারটি বিদেশি জাহাজ মোংলা বন্দর ত্যাগ করবে বলেও জানান তিনি। ক্যাপ্টেন শাহিন মজিদ আরও বলেন, এই মূহুর্তে বন্দরে ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। কিন্তু ১৩ মে শনিবার সকাল থেকে সেসব জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া জাহাজের পাশে অবস্থান করা পণ্য নিতে আসা ছোট লাইটার, বার্জ ও কোস্টারগুলোকেও নিরপাদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর দাশ বলেন যদিও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে, তারপরেও এটিকে আমরা হালকা ভাবে দেখছিনা। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মাইকিং চলছে। সাইক্লোন শেল্টার এবং শুকনা খাবার প্রস্তুত রাখা আছে। মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন পৌর এলাকায় ৩২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। মাইকিং করা হচ্ছে এবং সাইক্লোন শেল্টারের জন্য শুকনা খাবার প্রস্তুত আছে। কাউন্সিলরগণ স্ব স্ব এলাকায় জনসচতেনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছেন। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৭০ কিলোমিটার যা দমকা হাওয়া অথবা ঝড়ো আকারে ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ। মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হারুনুর রশিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোংলা সমুন্দ্র বন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। মোংলা সমুদ্র বন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।