Home জাতীয় ধর্ষণকাণ্ডের দরুন ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

ধর্ষণকাণ্ডের দরুন ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

36

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৪০ তম সম্মেলন পরবর্তী ৪র্থ জাতীয় পরিষদ সভা ৩জুন শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি মোঃ ফয়েজ উল্লাহ’র সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক দীপক শীলের সঞ্চালনায়, সারাদেশের জাতীয় পরিষদ সদস্যদের উপস্থিতিতে সংগঠনকে সুসংগঠিত এবং গতিশীল করার লক্ষ্যে সভায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের তৎকালীন প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আকিফ আহমেদ কর্তৃক ধর্ষণের বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও লিঙ্গ সংবেদনশীল সেলের যৌথ তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপিত হয়, এই গোটা বিষয়ে তদন্ত কমিটি কিছু সুস্পষ্ট অপরাধ লক্ষ করে, প্রথমত একটা ধর্ষণের ঘটনা জানার সাথে সাথে ছাত্র ইউনিয়নের মতো সংগঠনে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার জন্যে অপেক্ষা করার কোন প্রয়োজন থাকতে পারে না, বরং যত দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব সেই ঘটনার তদন্ত করে তার শাস্তি নিশ্চিত করা বা সংগঠনের বক্তব্য পরিস্কার করার দরকার ছিলো যা উক্ত ঘটনায় মারাত্মক ভাবে অনুপস্থিত। অভিযোগের সঠিক তারিখ বার বার লুকানোর চেষ্টা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। ১৪ তারিখে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিলেও সেটাকে শেষ পর্যন্ত ২০ তারিখ দেখানো হয়েছে। ভিক্টিমের অভিযোগের তারিখও বদলানো হয়েছে। ১৯ তারিখের লিখিত অভিযোগ ২০ তারিখ দেখানো হয়েছে। যা স্পষ্টতই একটি অপরাধ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ তদন্তের নামে যেই প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছে তাকে গ্রাম্যসালিশী প্রক্রিয়ার সাথে তুলনা করা যায়। ভিক্টিম ও অভিযুক্তকে একই সাথে বসিয়ে এই রকম ভাবে তদন্ত করার কোন সুযোগ থাকতে পারে না। এমনকি তদন্ত কমিটি আইনজীবীর সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে যে এটি একটি ফৌজদারী অপরাধ, বাংলাদেশের আইনেরও পরিপন্থী কাজ এই ঘটনা। ভিক্টিমকে নানা হেনস্তার মাধ্যমে অসুস্থ করে তোলা হয়েছে তদন্তের নামে, যা আরো একটি অপরাধ বলে বিবেচিত। এই সকল ঘটনার তদন্তের নামে বা পরবর্তীতে যে সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে তাতে প্রমাণ হয় যে ধর্ষনের মতো একটি ঘটনা ঘটার পর উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার যোগ্যতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতৃত্বের নেই। নারী সম্পর্কে এবং ধর্ষণ-নিপীড়ন সম্পর্কে তাদের বোঝাপড়া যথেষ্ট নয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করা উচিত বলে তদন্ত কমিটি মনে করে।
অভিযুক্ত ব্যাক্তি নিজে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পরেও দ্রুত সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা পরিলক্ষিত হয় যা বড় ধরনের অপরাধ বলে চিন্হিত করে তদন্ত কমিটি।
সম্পুর্ন ঘটনায় যেই বিবৃতি সংগঠনের পেজ থেকে দেওয়া হয়েছে তার প্রক্রিয়া ও বিবৃতির ভাষায় নানা মাত্রিক অসংগতির মাধ্যমে অভিযুক্তর অপরাধকে লঘু প্রমানের চেষ্টা করা হয় এবং ভিক্টিম ব্লেইমিং এর সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়।

এই সকল বিষয় বিশ্লেষণ করে তদন্ত কমিটি তার প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদকে বিলুপ্তের সুপারিশ করে। উপস্থিত জাতীয় পরিষদ সদস্যদের সম্মতিতে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়।

এছাড়াও দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় কমিটির কাজে অনুপস্থিত থাকায়, কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মীম আরাফাত মানব, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুনিরা দিলশাদ ইলা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসমানী আশাকে অব্যহতি প্রদান করা হয়। এবং উক্ত পদ সমূহ পরবর্তীতে কো-অপ্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।