Home জাতীয় দেশে ফেরানো হলো আনারকলিকে, নেওয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা

দেশে ফেরানো হলো আনারকলিকে, নেওয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা

55

ডেস্ক রিপোর্ট: জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত উপপ্রধান কাজী আনারকলির বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদক মারিজুয়ানা রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

ওই নারী কূটনীতিকের কর্মকাণ্ডে মারাত্মক ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে বাংলাদেশের ‘বদনাম’ করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নিউইয়র্ক সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন মঙ্গলবার টেলিফোনে বলেন, ‘আমি ইন্দোনেশিয়া গিয়েছিলাম। ওই সময় আমাদের রাষ্ট্রদূত পুরো ঘটনাটা বলেছেন। সে (আনারকলি) একজন ড্রাগ অ্যাডিক্ট। আমি তাকে দেশে ফেরত পাঠাতে বলেছি। রাষ্ট্রদূত তাকে ফেরত পাঠায়। তার অপকর্মের পুরোনো ইতিহাস আছে।’

একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সে ড্রাগ অ্যাডিক্ট। তাকে রিহ্যাবে (মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র) পাঠানো দরকার। দেশের বদনাম করে ফেলেছে। ইন্দোনেশিয়ানরা খুব ভদ্রলোক। বিপুল পরিমাণ মারিজুয়ানাসহ হাতেনাতে ধরা পড়ার পরও তা বাইরে প্রকাশ করেনি। এখন রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে পুরো রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘লস অ্যাঞ্জেলেসে থাকাকালেও সে অপকর্ম ঘটিয়েছে। সেখান থেকে তাকে বের করে দেয়। সে মাদকাসক্ত, অসুস্থ। তার চিকিৎসা দরকার। সরকারের আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা এটা ইনভেস্টিগেট করছি। নিউজটা আমরা দেখেছি, নিউজটা শুধু দেখার বিষয় নয়, আমরা সেই কর্মকর্তার বিষয় কয়েকদিন আগ থেকেই জানি। আমরা তদন্ত করছি। এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর।’

বাসায় ‘বিপুল পরিমাণ মারিজুয়ানা রাখার’ অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ায় আনারকলি আটক হওয়ার পর তাকে জাকার্তা থেকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে মঙ্গলবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ জাকার্তায় আনারকলির অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালায় ইন্দোনেশিয়া সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। এরপর তাকে আটক করা হলেও ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনৈতিক দায়মুক্তির কারণে ছেড়ে দেয়া হয়।

তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে এই কূটনীতিকের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র ক্যাডারের যে হাই স্ট্যান্ডার্ড, এটার সঙ্গে আমরা কখনোই কমপ্রোমাইজ করব না। তদন্তে যদি সে দোষী সাব্যস্ত হয়, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এ বিষয়ে এটুকু বলতে পারি।’

কূটনৈতিক দায়মুক্তি থাকলেও আনারকলির বাসায় অভিযান চালানোর বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, এখানে কোনো ভুল নাই। এবং সেই বাসায় আরেকজন বিদেশি নাগরিক ছিলো বলে আমরা শুনেছি। সেক্ষেত্রে পুলিশ যেতে পারে।’

‘তবে আমরা ধন্যবাদ জানাই ইন্দোনেশিয়া সরকারকে, তারা সহযোগিতা করেছেন আমাদের। এবং আমাদের ডিপ্লোম্যাট আমাদের কাস্টডিতে আছেন, আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছেন। এটা আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। তবে আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি, এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। এবং সঠিক পথেই সেটা যাবে।’

তবে কূটনৈতিক দায়িত্ব থেকে আনারকলিকে ফেরত আনার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে বাসার গৃহকর্মী নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে তাকে ফেরত আনা হয়েছিলো। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ওই রাজ্যে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল ছিলেন ২০তম বিসিএসের পররাষ্ট্র ক্যাডারের এই কর্মকর্তা।
যুগান্তর