Home জাতীয় দেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠী বাড়ছে, বড় অংশ এখনও কর্মক্ষম

দেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠী বাড়ছে, বড় অংশ এখনও কর্মক্ষম

39

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠী বাড়ছে। তাদের পরিচিতি সিনিয়র সিটিজেন (অভিজ্ঞ নাগরিক)। সাধারণত ৬৫ বছরের উর্ধের ব্যক্তি এই হিসাবের মধ্যে পড়েন। কখনও বলা হয় ৬০ বছরের উর্ধে। দেশের সবচেয়ে বড় অর্জন উন্নতদেশের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ও অন্যান্য) প্রবীণ জনগোষ্ঠী যখন নিষ্ক্রিয় তখন বাংলাদেশের প্রবীনগণ কর্মক্ষম থাকেন। এই জরিপ জাতিসংঘ জনসংখ্যা বিষয়ক সংস্থার। দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ায় প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব- গত দশ বছরে প্রবীণদের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে, যা মোট জন সংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ। এদের বয়স ৬০ বছরের বেশি। প্রবীণ বা বয়স্কদের এই সংখ্যা অন্তত দেড় কোটি।

জাতিসংঘের সূত্র জানায়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর। ৫০ বছর পর আয়ু বেড়েছে ৭২ দশমিক ৬ বছর, যা ওই সময়ের চেয়ে ২৫ বছর বেশি। একই সময়ে পৃথিবীর মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে ১২ বছর। বৈশ্বিক গড় আয়ুর চেয়ে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু দ্বিগুণেরও বেশি। দেশে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা যে বেড়ে যাচ্ছে তা পথঘাটে জনচলাচল দেখলেই বোঝা যায়। প্রবীণদের একটি অংশ সরকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারী, যারা পেনশন পাচ্ছেন। এই সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। সরকারী উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনায় কোন কাজে তারা অগ্রাধিকার পান। বাকিরা অনেকটাই অবহেলিত। নিয়মিত রোজগার নেই। জমি জিরাত থাকলে কৃষিকাজ। পরিবারের সদস্যরা ভালভাবে দেখে না। আবার জমি জিরাত সন্তানদের মধ্যে বণ্টন করে দিলে অবহেলা। না করে দিলেও মানসিক চাপ। কখনও ঘর ছাড়া। শহরাঞ্চলে জায়গা জমি ভূসম্পত্তি বাড়ি ফ্ল্যাট নিজের দখলে না রাখলে আরেক বিপদ। পরিকল্পিতভাবে কোন এক সময়ে বৃদ্ধাশ্রম গমনে বাধ্য করা হয়। দখলে রাখলেও নানা কৌশল প্রয়োগ। স্নেহ ভালবাসার মমত্ববোধের পরীক্ষা। চুন থেকে পান খসলে বিপদ।

চলতি বছর ৯ ফেব্রুয়ারির ঘটনা- মেহেরপুর জেলার এক অশীতিপর বৃদ্ধকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় পুত্রবধূ নাতি। জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে আকুতি জানান। জেলা প্রশাসক ওই প্রবীণকে আশ্বস্ত করেন। ওই বয়স্ক ব্যক্তি সুযোগ পেয়েছিলেন। সকলের তো তা হয় না। উল্টো ঘটনাও আছে। দেশের সকল শিশু পরিবারে প্রবীণ নিবাস গড়ে তোলা হয়েছে। বগুড়া বিশেষায়িত শিশু পরিবারে প্রবীণদের বসবাসের জন্য দশটি আসন রাখা আছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জানান, ক’জন প্রবীণ এসেছিলেন। কয়েকদিন থেকে ফিরে গেছেন। প্রবীণরা অবহেলা পেয়েও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ওই কর্মকর্তা জানান, প্রবীণদের ভাল রাখার বিষয়ে সমাজের দায়িত্ব আছে। দাদা দাদি নানা নানির সঙ্গে নাতি নাতনির চিরকালীন যে মধুর সম্পর্ক তা চিরন্তন। প্রবীণদের দুর্বল এই জায়গাটি সহজে সরে না। আজ যে সন্তান বাবা মায়ের প্রতি ভিন্ন আচরণ করছেন তাকেও একদিন প্রবীণ হতে হবে। এই বাস্তব বিয়টি ভুলে যাওয়ায় প্রবীণদের কখনও মনোবেদনায় থাকতে হয়। তারপরও বাংলাদেশের প্রবীণদের বড় একটি অংশ শরীরের শক্তি অনুযায়ী এখন নিজে কাজ করেন। কর্মক্ষম থাকেন, যা বিশ্বের উন্নত দেশে প্রশংসিত হয়েছে।-জনকণ্ঠ