Home জাতীয় “দেশব্যাপী ৬৪ জেলার বায়ুমান সমীক্ষা ২০২১” শীর্ষক বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে...

“দেশব্যাপী ৬৪ জেলার বায়ুমান সমীক্ষা ২০২১” শীর্ষক বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে ক্যাপস

60

সৈয়দ আমিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি : “দেশব্যাপী ৬৪ জেলার বায়ুমান সমীক্ষা ২০২১” শীর্ষক বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে স্টামফোর্ড বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারী ) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তন, ঢাকা-তে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ফলাফল প্রকাশ করে।

ক্যাপসের গবেষণা শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ আল নাঈম এর সঞ্চালনায় উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক আলী নকি।

এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।

এছাড়াও এতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী সারওয়ার ইমতিয়াজ হাশমী, পবা’র যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ লেনিন চৌধুরী, প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ রাশিদা বেগম এবং বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর পরিচালক ও আইন উপদেষ্টা, অ্যাডভোকেট মারুফা গুলশান আরা।

বাংলাদেশের বায়ুদূষণ প্রসঙ্গে স্টামফোর্ড বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ক্যাপস এর গবেষণা অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০২.৪১ মাইক্রোগ্রাম, যা দৈনিক আদর্শ মানের চেয়ে প্রায় ১.৫৭ গুণ বেশি। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৬৪ জেলার মধ্যে গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশী দূষণ পরিলক্ষিত হয় যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২৬৩.৫১ মাইক্রোগ্রাম।
গাজীপুরের পরের অবস্থানে রয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা ঢাকা (২য়) ও নারায়ণগঞ্জ (৩য়) যার বায়ুমান ছিল যথাক্রমে ২৫২.৯৩ এবং ২২২.৪৫ মাইক্রোগ্রাম। উল্লেখিত সবচেয়ে দূষিত তিনটি শহরের বায়ুমান ছিল বাংলাদেশের আদর্শমানের চেয়ে প্রায় ৪-৫ গুণ বেশী। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কার কাজ, আশেপাশের প্রায় ১২০০ ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো এই প্রধান তিনটি শহরের বায়ু দূষণের অন্যতম কারন হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। গবেষণার তথ্যানুযায়ী ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম এবং ১০ম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম এবং কিশোরগঞ্জ।
অন্যদিকে সবচেয়ে কম দূষিত শহরের মধ্যে রয়েছে মাদারীপুর যার বায়ুমান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম। মাদারীপুরের পরের অবস্থানে রয়েছে পটুয়াখালী এবং মেহেরপুর। বায়ু দূষণ কম হওয়ার কারন হিসেবে সরোজমিনে এসব এলাকায় প্রচুর পরিমাণ গাছপালা এবং প্রাকৃতিক জলাধার লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই ছাড়াও এইসব এলাকায় রাস্তা সংস্কার কাজের পরিমাণ খুব একটা চোখে পড়েনি বলে উল্লেখ করেন ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
অন্যদিকে ৭ ধরনের ভূমির ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশী বায়ু দূষণ ছিল মিশ্র এলাকায় যার মান প্রতি ঘনমিটারে ১১১.৯০ মাইক্রোগ্রাম। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাণিজ্যিক (১১১.৪ মাইক্রোগ্রাম), রাস্তার সংযোগস্থল (১১০.৮ মাইক্রোগ্রাম), আবাসিক, শিল্প (১০৬.৭ মাইক্রোগ্রাম) এবং সংবেদনশীল এলাকা (৯৭.৩ মাইক্রোগ্রাম)। এদিক থেকে তুলনামূলক কম দূষণ পরিলক্ষিত হয় গ্রামীণ এলাকায় যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৯৪.০২ মাইক্রোগ্রাম।
অধ্যাপক মজুমদার আরো বলেন, ৬৪টি জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ১০টি (১৫.৬২%) জেলায় বায়ুর মান আদর্শ মাত্রার মধ্যে ছিল। এই জেলা গুলোর অবস্থান নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায়, ফলে দূষণের বিস্তৃতি কম হওয়ার একটি কারন হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাকি ৩৬টি (৫৬.২৫%) জেলার বায়ুমান মধ্যম মানের দূষিত অবস্থানে এবং ১৮টি (২৮.১৩%) জেলায় অতিরিক্ত মানের দূষিত বায়ু পরিলক্ষিত হয়েছে বলে ক্যাপসের গবেষণায় উঠে এসেছে।
অধ্যাপক মজুমদার আরো বলেন, বৃষ্টি, প্রাকৃতিক জলাধার এবং সবুজায়ন সমন্বিতভাবে বাংলাদেশের বায়ু দূষণ প্রাকৃতিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে। অপরদিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের সমন্বিত, বিজ্ঞানভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক কোন প্রকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
সভাপতির বক্তব্যে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আলী নকি বলেন, ক্যাপসের এই গবেষণা প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য সহজ ভাষায় জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। একই সাথে সরকার ও গণমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার ব্যাপারে মতামত ব্যক্ত করেন।
বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, বায়ু দূষন মহানগর থেকে ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশ যা নিরব কিন্তু ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের কারণ। বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রনে জনগণকে সম্পৃক্ত করে আরও তথ্য সংগ্রহ ও কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যাবস্থা চালু করতে নির্মল বায়ু আইন প্রবর্তন ও পরিবেশ আদালত কার্যকর করা আবশ্যক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন- বায়ু দূষনের কারনে খাদ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে উদ্ভিদ নিজেও বিপদে পড়ে এবং উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল প্রাণীরাও বিপদে পড়ে। এছাড়াও উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও প্রজনন বাধাগ্রস্ত হয়। উদ্ভিদের জৈবনিক প্রক্রিয়া ঠিক না থাকলে পৃথিবীতে খাদ্য শৃংখল ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী সারওয়ার ইমতিয়াজ হাশমী বলেন, ক্যাপস প্রকাশিত গবেষণা তথ্য হতে বাংলাদেশের জেলা ভিত্তিক বায়ুদূষণের একটি ধারণা পাওয়া যায় এবং এটি একটি বেইসলাইন হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ক্যাপস এর এই গবেষণার ব্যপ্তি বাড়ানো যেতে পারে।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ লেনিন চৌধুরী বলেন, পরিবেশগত রোগসমূহের জন্য যে কয়টি বিষয় দায়ী তার মধ্যে অন্যতম হল বায়ু দূষণ। ক্যাপস এর গবেষণাটিকে ভিত্তি রেখা ধরে পরবর্তীতে স্বাস্থ্যের উপর বায়ুদূষণের প্রভাব নিয়ে গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ রাশিদা বেগম বলেন, বায়ু দূষনের একটি অন্যতম নেতিবাচক প্রভাব হল প্রজননে নানা বিপত্তি। মহিলা ও পুরুষ উভয়ের বন্ধ্যাত্বের জন্য অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ দায়ী। এছাড়া বায়ু দূষণ গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি, বাচ্চার স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে বাঁধা দেয়।
বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর পরিচালক ও আইন উপদেষ্টা, অ্যাডভোকেট মারুফা গুলশান আরা বলেন, বায়ু দুষণ নিয়ন্ত্রণ রোধে যে আইন গুলোর খসড়া তৈরি করা আছে, সে আইন গুলোকে দ্রুত পাস করতে হবে।
তিনি ফৌজদারি, দেওয়ানী, পারিবারিক মামলার পাশাপাশি পরিবেশ সম্পর্কিত মামলা গুলোকেও গুরুত্ব দেওয়ার উপর জোর দেন।

ক্যাপসের দেশব্যাপী ৬৪ জেলার বায়ু দূষণ সমীক্ষার মূল প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ

১. ভূমিকা:

বিশ্বব্যাপী অসংক্রামক রোগে যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয় এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু বায়ু দূষণের কারণে হয়ে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতিবছর ৪.২ মিলিয়ন মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের পরিবেশ দূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দেশের বিভিন্ন শহরে বসবাসের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রথম বারের মত দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় বায়ু দূষণের উৎস, পরিমাণ এবং ক্ষতিকারক দিকগুলো নির্ণয় করার জন্য স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক প্রফেসর ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার এর নেতৃত্বে ৮১ সদস্যের একটি গবেষক দল বায়ু মানের বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণা করেন।

২. গবেষণার উদ্দেশ্যঃ

গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল- ক) দেশব্যাপী বায়ু দূষনের বেইসলাইন তথ্য সংগ্রহ করা খ) জেলা গুলোর বায়ু দূষনের ক্রম এবং গ) জেলা ভিত্তিক দূষনের মানচিত্র তৈরি করা।

৩. গবেষণা পদ্ধতি:

গবেষণা প্রতিষ্ঠান বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) সমগ্র দেশব্যাপী গত ৬ জানুয়ারি থেকে ৬ এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত ৬৪ জেলার জেলা শহর গুলোতে ৭ ধরনের ভূমির ব্যবহারের উপর নির্ভর করে ৩১৬৩টি স্থানের বস্তুকণা২.৫ (বস্তুকণা২.৫ বা PM2.5 হচ্ছে অতিক্ষুদ্র ধূলিকণা যার আকার ২.৫ মাইক্রন এর সমান বা তার নিচে) মান পর্যবেক্ষণ করে তা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পর্যালোচনা করে। এই গবেষণায় ৬৪টি জেলা থেকে সংবেদনশীল এলাকা মোট ৫৩১টি (১৬.৭৯%), আবাসিক এলাকা ৪৪০টি (১৩.৯১%), মিশ্র এলাকা ৪০৭টি (১২.৮৭%), বাণিজ্যিক এলাকা ৫৭৫টি (১৮.১৮%), রাস্তার সংযুক্তি এলাকা ৩৫৮টি (১১.৩২%), শিল্প এলাকার ৪৩২টি (১৩.৬৬%) এবং গ্রামীণ এলাকা থেকে ৪২০টি (১৩.২৮%) তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এই স্থানগুলো থেকে স্বয়ংক্রিয় এয়ার কোয়ালিটি মনিটর (AEROQUAl S-500, New Zealand) ব্যবহার করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় এবং পরবর্তীতে SPSS ও ArcGIS সফটওয়্যার ব্যবহার করে বায়ুর মান বিশ্লেষণ করা হয়।

৪. গবেষণার ফলাফল:

৪.১ বায়ুমানের ভিত্তিতে জেলা গুলোর দূষণের অবস্থান:

স্টামফোর্ড বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) ৬৪ জেলার বায়ুমান বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পর্যালোচনা করে। গবেষণা থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার সর্বমোট ৩১৬৩টি স্থানের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০২.৪১ মাইক্রোগ্রাম, যা দৈনিক আদর্শ মানের (৬৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে প্রায় ১.৫৭ গুণ বেশি। পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৬৪ জেলার মধ্যে গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশী দূষণ পরিলক্ষিত হয় যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২৬৩.৫১ মাইক্রোগ্রাম। গাজীপুরের পরের অবস্থানে রয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা ঢাকা (২য়) ও নারায়ণগঞ্জ (৩য়) যার বায়ুমান ছিল যথাক্রমে ২৫২.৯৩ এবং ২২২.৪৫ মাইক্রোগ্রাম। উল্লেখিত সবচেয়ে দূষিত তিনটি শহরের বায়ুমান ছিল বাংলাদেশের আদর্শমানের চেয়ে প্রায় ৪-৫ গুণ বেশী। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কারকাজ, মেগা প্রকল্প, আশেপাশের ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো এই প্রধান তিনটি শহর দূষণের অন্যতম কারন হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। গবেষণার তথ্যানুযায়ী ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম এবং ১০ম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম এবং কিশোরগঞ্জ। অন্যদিকে সবচেয়ে কম দূষিত শহরের মধ্যে রয়েছে মাদারীপুর যার বায়ুমান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম। মাদারীপুরের পরের অবস্থানে রয়েছে পটুয়াখালী এবং মেহেরপুর। বায়ু দূষণ কম হওয়ার কারন হিসেবে সরোজমিনে এসব এলাকায় প্রচুর পরিমাণ গাছপালা এবং প্রাকৃতিক জলাধার লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই ছাড়াও এইসব এলাকায় রাস্তা সংস্কার কাজের পরিমাণ খুব একটা চোখে পড়েনি। ৭ ধরনের ভূমির ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে, সবচেয়ে বেশী বায়ু দূষণ ছিল মিশ্র এলাকায় যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১১১.৯০ মাইক্রোগ্রাম। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাণিজ্যিক (১১১.৪ মাইক্রোগ্রাম), রাস্তার সংযুক্তি (১১০.৮ মাইক্রোগ্রাম), আবাসিক, শিল্প (১০৬.৭ মাইক্রোগ্রাম) এবং সংবেদনশীল এলাকা (৯৭.৩ মাইক্রোগ্রাম)। এদিক থেকে তুলনামূলক কম দূষণ পরিলক্ষিত হয় গ্রামীণ এলাকায় যার মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৯৪.০২ মাইক্রোগ্রাম।

৪.২ ভালো বায়ুমানের জেলা সমূহ (প্রতি ঘনমিটারে ০-৬৫ মাইক্রোগ্রাম):

৬৪টি জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ১০টি (১৫.৬২%) জেলায় বায়ুর মান ভালো পাওয়া যায় (প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রাম নিচে) এবং সেই জেলা গুলো হলো কুড়িগ্রাম (৬৩.৩৩ মাইক্রোগ্রাম), নাটোর (৬৩.১৯ মাইক্রোগ্রাম), জয়পুরহাট (৫৮.২৪ মাইক্রোগ্রাম), রাজবাড়ী (৫৮.২২ মাইক্রোগ্রাম), রাজশাহী (৫৬.৪১ মাইক্রোগ্রাম), পাবনা (৫৬.২২ মাইক্রোগ্রাম), সিরাজগঞ্জ (৫৫.২ মাইক্রোগ্রাম), মেহেরপুর (৫৩.৩৭ মাইক্রোগ্রাম), পটুয়াখালী (৫১.৪২ মাইক্রোগ্রাম), এবং মাদারীপুর (৪৯.০৮ মাইক্রোগ্রাম)। ভৌগোলিকভাবে এই জেলা গুলোর অবস্থান নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায়, ফলে দূষণের বিস্তৃতি কম হওয়ার একটি কারন হতে পারে। রাজশাহী শহরে ভালো মানের বায়ু পরিলক্ষিত হওয়ার পেছনে রাজশাহী শহরের কর্তৃপক্ষের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে।

৪.৩ মধ্যম মানের দূষিত বায়ুর জেলা সমূহ (প্রতি ঘনমিটারে ৬৬-১২০ মাইক্রোগ্রাম):

৩৬টি (৫৬.২৫%) জেলার বায়ুমান মধ্যম মানের দূষিত অবস্থানে ছিলো যার মধ্যে রয়েছে- যশোর (১১১.১২ মাইক্রোগ্রাম) , মুন্সিগঞ্জ (১০৩.৭২ মাইক্রোগ্রাম), মানিকগঞ্জ (১০১.৯১ মাইক্রোগ্রাম), শেরপুর (১০০.৪২ মাইক্রোগ্রাম), নেত্রকোনা (৯৯.৬৩ মাইক্রোগ্রাম), বরগুনা (৯৮.৫৮ মাইক্রোগ্রাম), খাগড়াছড়ি (৯৮.১৭ মাইক্রোগ্রাম), সিলেট (৯৭.০২ মাইক্রোগ্রাম), গোপালগঞ্জ (৯৪.৪৭ মাইক্রোগ্রাম), নরসিংদী (৯৩.৬৫ মাইক্রোগ্রাম), গাইবান্ধা (৯৩.৩৩ মাইক্রোগ্রাম), রাঙ্গামাটি (৯২.০৭ মাইক্রোগ্রাম), চুয়াডাঙ্গা (৯০.৩ মাইক্রোগ্রাম), সুনামগঞ্জ (৮৯.০৫ মাইক্রোগ্রাম), পিরোজপুর (৮৭.৯৩ মাইক্রোগ্রাম), বগুড়া (৮৭.০২ মাইক্রোগ্রাম), কুমিল্লা (৮৬.৭৭ মাইক্রোগ্রাম), মাগুরা (৮৬.০১ মাইক্রোগ্রাম), লালমনিরহাট (৮৬.০১ মাইক্রোগ্রাম), বান্দরবন (৮৪.০৪ মাইক্রোগ্রাম), নওগাঁ (৭৯.৪৭ মাইক্রোগ্রাম), চাঁপাইনবাবগঞ্জ (৭৯.০৪ মাইক্রোগ্রাম), ঝালকাঠি (৭৭.০৫ মাইক্রোগ্রাম), ভোলা (৭৮ মাইক্রোগ্রাম), নীলফামারী (৭৬.৮৭ মাইক্রোগ্রাম), শরীয়তপুর (৭৬.৫ মাইক্রোগ্রাম), দিনাজপুর (৭৪.৯৭ মাইক্রোগ্রাম), ঝিনাইদহ (৭৪.৫৮ মাইক্রোগ্রাম), বরিশাল (৭৩.৬৪ মাইক্রোগ্রাম), সাতক্ষীরা (৭২.৪৪ মাইক্রোগ্রাম), ফরিদপুর (৭২.২৪ মাইক্রোগ্রাম), বাগেরহাট (৭১.১১ মাইক্রোগ্রাম), রংপুর (৭০.১৩ মাইক্রোগ্রাম), নড়াইল (৭০.০৭ মাইক্রোগ্রাম), কুষ্টিয়া (৭০.০৩ মাইক্রোগ্রাম) এবং খুলনা (৬৭.০১ মাইক্রোগ্রাম)।

৪.৪ অতিরিক্ত দূষিত বায়ুর জেলা সমূহ (প্রতি ঘনমিটারে ১২১ মাইক্রোগ্রাম এর উপরে):

৬৪টি জেলার মধ্যে ১৮ টি (২৮.১৩%) জেলায় গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর পরিমাণ ছিলো প্রতি ঘনমিটারে ১২১ মাইক্রোগ্রাম এর চেয়ে বেশি অর্থাৎ অতিরিক্ত মানের দূষিত বায়ু পরিলক্ষিত হয়েছে। সর্বোচ্চ দূষণ পাওয়া যায় গাজীপুর এলাকায় যেখানে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২৬৩.৫১ মাইক্রোগ্রাম, ২য় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা প্রতি ঘনমিটারে ২৫২.৯৩ মাইক্রোগ্রাম এবং তৃতীয় অবস্থানে নারায়ণগঞ্জ প্রতি ঘনমিটারে ২২২.৪৫ মাইক্রোগ্রাম। এছাড়াও অতিরিক্ত দূষণ পাওয়া যায়, হবিগঞ্জ (২২০.১১ মাইক্রোগ্রাম), নোয়াখলী (২০৪.০১ মাইক্রোগ্রাম), টাঙ্গাইল (১৮৬.৩২ মাইক্রোগ্রাম), কক্সবাজার (১৮৩.৪১ মাইক্রোগ্রাম), চাঁদপুর (১৭০.৪২ মাইক্রোগ্রাম), চট্টগ্রাম (১৬৫.৩১ মাইক্রোগ্রাম), কিশোরগঞ্জ (১৬৫.১৩ মাইক্রোগ্রাম), মৌলভীবাজার (১৫৪.৮১ মাইক্রোগ্রাম), লক্ষ্মীপুর (১৪৯.০২ মাইক্রোগ্রাম), পঞ্চগড় (১৪২.৩১ মাইক্রোগ্রাম), ময়মনসিংহ (১৩৮.১১ মাইক্রোগ্রাম), ব্রাহ্মণবাড়িয়া (১৩৪.৭২ মাইক্রোগ্রাম), ফেনী (১২৮.৪১ মাইক্রোগ্রাম), ঠাকুরগাঁও (১২৫.৩২ মাইক্রোগ্রাম) এবং জামালপুর (১২১.৬১ মাইক্রোগ্রাম)।

৪.৫ বিভাগীয় জেলা শহর গুলোতে বায়ুর মানঃ

৮ টি বিভাগীয় জেলা শহরগুলোর গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর মান ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১১৫.০৭ মাইক্রোগ্রাম, যা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর আদর্শ মানের চেয়ে প্রায় ১.৭৭ গুণ বেশি। ক্যপসের গবেষণা থেকে উঠে আসে ৮টি বিভাগীয় শহরের মধ্যে বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা শহর, সেখানে গড়ে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর উপস্থিতির পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ২৫২.৯৩ মাইক্রোগ্রাম এবং বায়ু দূষণের তালিকায় সর্বনিম্নে রয়েছে রাজশাহী শহর, সেখানে গড়ে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৫৬.৪১ মাইক্রোগ্রাম। দূষণ অনুযায়ী বিভাগীয় জেলা শহর গুলোর ক্রম হচ্ছে- ঢাকা>চট্টগ্রাম>ময়মনসিংহ>সিলেট>বরিশাল>রংপুর> খুলনা>রাজশাহী

৪.৬ বিভাগ ভিত্তিক বায়ু দূষণঃ

২০২১ সালে বাংলাদেশের ৮ টি বিভাগের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর মান প্রতি ঘনমিটারে ১০৩.৬২ মাইক্রোগ্রাম ছিলো, যা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর আদর্শ মানের চেয়ে প্রায় ১.৫৯ গুণ বেশি। আরো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ বিভাগের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর পরিমান যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ৬৬.৮৪, ৬৮.৯৪, ৭৬.৫৯, ৯১.৫২ এবং ১১৪.৯৩ মাইক্রোগ্রাম, যা বায়ু দূষণ নির্দেশনা অনুযায়ী মধ্যম পর্যায়ের দূষণ এলাকার অন্তর্ভুক্ত অপরদিকে, ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর ঘনত্ব যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ১৩৩.৮৫, ১৩৬.০২ এবং ১৪০.২৪ মাইক্রোগ্রাম, যা বায়ু দূষণ শ্রেণী অনুযায়ী অতিরিক্ত মানের দূষিত বায়ু দূষণের পর্যায়ে রয়েছে।

৪.৭ বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার বায়ু দূষণের ক্রম:

২০২১ সালে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ১৯টি জেলার গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর মান প্রতি ঘনমিটারে ১০৬.৮২ মাইক্রোগ্রাম ছিলো, যা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর আদর্শ মানের চেয়ে প্রায় ১.৬৪ গুণ বেশি। গবেষণা থেকে দেখা যায়, উপকূলীয় এলাকার মধ্যে শুধুমাত্র পটুয়াখালির বায়ুমান ভালো বায়ুর পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত ছিল কিন্তু ফেনী, লক্ষীপুর, চট্রগ্রাম, চাঁদপুর, কক্সবাজার, নোয়াখালী এলাকার গড় বায়ুমান ছিল যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ১২৮.৪, ১৪৯, ১৬৫.৩, ১৭০.৪, ১৮৩.৪ এবং ২০৪ মাইক্রোগ্রাম, যা বায়ুদূষণ মাত্রা অনুযায়ী অতিমাত্রার দূষণ এলাকার অন্তর্ভুক্ত। অপরদিকে, খুলনা, নড়াইল, বাঘেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল, শরিয়তপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, বরগুনা, এবং যশোরের গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর মান যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ৬৭.০১, ৭০, ৭১.১, ৭২.৪৪, ৭৩.৬, ৭৬.৫, ৭৭.০৫, ৭৮, ৮৭.৯৩, ৯৪.৪৭, ৯৮.৬ এবং ১১১.১ মাইক্রোগ্রাম, যা বায়ুদূষণ মাত্রা অনুযায়ী মধ্যম পর্যায়ের দূষণ এলাকার অন্তর্ভুক্ত।

৪.৮ বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকার বায়ু দূষণের ক্রম:

পাহাড়ি জেলার মধ্যে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবন, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জকে বিবেচনায় রাখা হয়। সামগ্রিকভাবে হবিগঞ্জ এবং মৌলভীবাজার জেলায় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা২.৫ এর পরিমাণ ২২০.১১ এবং ১৫৮.৮১ মাইক্রোগ্রাম পাওয়া যায় যা নির্ধারিত মান মাত্রার ৩.৩৮ এবং ২.৪৪ গুণ বেশি। তথ্যানুযায়ী খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবন, সিলেট এবং সুনামগঞ্জ এর মান প্রতি ঘনমিটারে ৯৮.১৭, ৯২.০৭, ৮৪.০৪, ৯৭.০২ এবং ৮৯.০৫ মাইক্রোগ্রাম পাওয়া যায়।

৪.৯ বায়ুদূষণ রোধে সুপারিশমালা:

অঞ্চলভেদে বায়ু দূষণের উপযুক্ত কার্যকরী পদক্ষেপ গুলো হাতে নেওয়া যেতে পারে। এই সংবাদ সম্মেলন থেকে কিছু সাধারন পদক্ষেপের দাবি জানানো যাচ্ছে-

স্বল্পমেয়াদী পদক্ষেপঃ

১. শুষ্ক মৌসুমে সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা এবং পরিবেশ অধিদপ্তর এর সমন্বয়ে দূষিত শহর গুলোতে প্রতি দিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
২. নির্মাণ কাজের সময় নির্মাণ স্থান ঘেরাও দিয়ে রাখতে হবে ও নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নিতে হবে।
৩. রাস্তায় ধূলা সংগ্রহের জন্য সাকশন ট্রাকের ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. অবৈধ ইটভাটা গুলো বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিকল্প ইটের প্রচলন বাড়াতে হবে।
৫. ব্যক্তিগত গাড়ি এবং ফিটনেস বিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে প্রয়োজনে নম্বর প্লেট অনুযায়ী জোড়-বিজোড় পদ্ধতিতে গাড়ি চলাচলের প্রচলন করা যেতে পারে।

মধ্যমেয়াদী পদক্ষেপঃ

৬. সরকারী ও বেসরকারি উদ্দ্যোগে প্রচুর পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে এবং ছাদ বাগান করার জন্য সকলকে উৎসাহিত করতে হবে।
৭. আলাদা সাইকেল লেনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. দূষিত শহর গুলোর আশেপাশে জলাধার সংরক্ষণ করতে হবে।
৯. আগুনে পোড়ানো ইটের বিকল্প হিসাবে সেন্ড বক্ল এর ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে।
১০. সিটি গভর্নেন্স এর প্রচলনের মাধ্যমে উন্নয়ন মূলক কার্যকলাপের সমন্বয় সাধন করতে হবে। সেবা সংস্থার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্বল্প সময়ে সম্পন্ন করতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপঃ
১১. নির্মল বায়ু আইন-২০১৯ যতদ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করতে হবে।
১২. পরিবেশ সংরক্ষণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। নিয়মিত বায়ু পর্যবেক্ষন স্টেশন (ক্যামস) এর ব্যাপ্তি বাড়িয়ে ঢাকা শহরের সব এলাকাকে এর আওতাধীন করতে হবে। এছাড়াও বায়ু দূষণের পূর্বাভাস দেওয়ার প্রচলন করতে হবে।
১৩. গনপরিবহ সহ ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন করা।
১৪. সর্বোপরি সচেতনতা তৈরির জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে বায়ু দূষণ সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য নির্ভর অনুষ্ঠান প্রচারের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশের বায়ু দূষণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
১৫. পরিবেশ ক্যাডার সার্ভিস এবং পরিবেশ আদালত চালু ও কার্যকর করতে হবে।