Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ডেঙ্গু রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির

ডেঙ্গু রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির

34

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। দেশের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানির কারণে উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগী। একইসাথে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। এদিকে ক্যাম্পাসে এডিস মশার প্রজনন রোধে সর্বাত্মক পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি গ্রহণ ও ডেঙ্গুতে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি।

বুধবার (১৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সালেহ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা যৌথ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, সারা দেশে ডেঙ্গু রোগ (জ্বর) আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল ও শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলোর পার্শ্ববর্তী জায়গায় জলাবদ্ধতা সহ নানান ধরনের অপরিচ্ছন্নতা এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে।

তারা আরও জানান, এই পরিস্থিতিতে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডেঙ্গু মশার প্রজনন রোধে সর্বাত্মক পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসাথে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, সামান্য বৃষ্টিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ চলাচলের রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে পানির জমে জলাবদ্ধতা প্রতি বছরের ঘটনা। ফলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্যদের চলাচলসহ নানা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়াও বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মন্দির এর পেছনে, লাইব্রেরি সংলগ্ন শিক্ষকদের ডরমেটরি, নারী শিক্ষার্থীদের হল এর পেছনের দিক, শিক্ষকদের কোয়াটার এর পেছনে, লেকপাড় সংলগ্ন রাস্তাসহ প্রস্তাবিত নতুন একাডেমিক ভবনের নির্মান স্থান এবং নিউমার্কেট এর বেশ কয়েকটি দোকানের পেছনের অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে প্রায়ই। এতে করে মশার উপদ্রব বাড়ার আশংকা থেকেই যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি চলাচলের যেই রাস্তা আগে ছিল তা আর নেই। এদিকে বালি ফেলে ভরাট করা হয়েছে সেন্টাল ফিল্ড। এর ফলে ঠিকঠাক পানি চলাচল করতে না পারায় অনেক সময় আমাদের দোকানের নিচেও পানি চলে আসছে। প্রশাসনকে বলেও কাজ হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাফিউল কায়েস জানান, ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা গত দুই দশকের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় জমেছে থাকা পানির উৎসই এডিস মশার বংশ বৃদ্ধির একমাত্র কারণ। এদিকে অল্প পরিমাণে বৃষ্টি হলেই আমাদের ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকার ঘটনা এখন একটি নিত্যকার ঘটনায় পরিনত হয়েছে। এতে করে মশার পরিমাণও কিছুটা হলেও বেড়েছে। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই একটি স্থায়ী সমাধান করা।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু সালেহ বলেন, এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক জায়গায়ই পানি জমে আছে। প্রশাসনকে আমরা বিষয়টি অবহিত করেছি। পরবর্তীতে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করব। একইসাথে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় একটি পরিষ্কার অভিযান পরিচালনা করব যাতে কোথাও পানি জমে না থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামরুজ্জামান বলেন, ক্যাম্পাসের কিছু জায়গা নিচু, সব জায়গায় পানি জমে আছে। আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করছি। দুই-তিন দিনের মধ্যে ফগার মেশিন আমরা হাতে পাব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য একিউএম মাহবুব বলেন, আমি ফগার মেশিন ক্রয়ের জন্য বলেছি।

প্রসঙ্গত, গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা ১৮১ জন। এদিকে এই বছরের প্রথম সাড়ে ৬ মাসেই সরকারি তথ্যে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৬৭ জন।