Home জাতীয় জ্ঞান—বিজ্ঞান ও মনুষ্যত্ব ধ্বংসের শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবি

জ্ঞান—বিজ্ঞান ও মনুষ্যত্ব ধ্বংসের শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবি

29

ডেস্ক রিপোর্ট: ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম—২০২১’ বাস্তবায়নের ফলে সৃষ্ট নানা সংকটে উদ্বিগ্ন হয়ে ঢাকাসহ সারা দেশের সচেতন অভিভাবকমহল এবং নাগরিক সমাজ প্রতিবাদে নামেন। অভিভাবকদের উদ্বিগ্নতা, শঙ্কা কোন কিছুকেই সরকার আমলে না নিয়ে উল্টো দমন—পীড়ন এবং অপপ্রচারের ঘৃণ্য পথ অবলম্বন করছে। গত ২৪ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন’ এর ব্যানারে অভিভাবক এবং নাগরিক সমাজ এক মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে। এটি একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচী যা সংবিধান প্রদত্ত নাগরিক অধিকার।

এর আগের দিন রাত থেকেই পুলিশ প্রশাসন গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীর কবীরসহ অন্যান্য আয়োজকদের ভয়ভীতি এবং হুমকি প্রদান করে এবং কর্মসূচী না করার জন্য বলে। পরদিন পুলিশের বাধার মুখে খুবই অল্প সময়ের জন্য মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এরপরই আমরা জানতে পারি, ‘সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের’ নেতা জাহাঙ্গীর কবিরকে গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি আগের দিনই আটক করে। তিনি সহ আরও ৫ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দেয়া হয়। পরবর্তীতে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। উল্লেখ্য যে, মামলাটি দায়ের করেছেন জাতীয় পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা বোর্ড (এনসিটিবি) এর একজন সহকারি সচিব।

এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফন্ট’র সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, “জাতীয় শিক্ষাক্রম—২১ বাস্তবায়নের ফলে সৃষ্ট নানা সংকটে উদ্বিগ্ন অভিভাবক এবং নাগরিকদের গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। এর মধ্যে দিয়ে সরকার আবারও প্রমাণ করলো যে কোন ধরণের ভিন্ন মতকে গ্রহণ তো দূরের কথা, তারা বলপূর্বক দমন করতে বদ্ধপরিকর। এমনকি একজন অভিভাবক তার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার কথা পর্যন্ত বলতে পারবে না। বাস্তবে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম—২০২১’ অত্যন্ত অগণতান্ত্রিক উপায়ে রচিত হয়েছে। শিক্ষাক্রমের মতো একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুমোদনের পূর্বে সংসদে পর্যন্ত আলোচনা হয়নি। এ ব্যাপারে একাধিক সংসদ সদস্য পর্যন্ত উষ্মা প্রকাশ করেন।”

তাঁরা আরও বলেন, “বাস্তবে কোন ধরণের আয়োজন ও পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই সরকার এ শিক্ষাক্রম চালু করেছে। গত ১ বছরের অভিজ্ঞতাই প্রমাণ করে এ শিক্ষাক্রমটি কত ভঙ্গুর ও শিক্ষাবিধ্বংসী। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠে অমনোযোগীতা, মোবাইল আসক্তিসহ নানা সমস্যা বেড়েছে। এটি বিভিন্ন গ্রুপওয়ার্ক এবং প্রজেক্টনির্ভর হওয়ার ফলে ইতিমধ্যেই বেড়েছে শিক্ষাব্যয়। বাস্তবে এ শিক্ষাক্রমে শিক্ষার আর্থিক দায়িত্ব সরকার নেয়নি, গোটা বিষয়টিই নির্ভর করছে অভিভাবকদের সামর্থের উপর। কমেছে বিজ্ঞান ও তত্ত্বীয় শিক্ষার পরিধি। এর ফলে উদ্বিগ্ন হয়েছেন অভিভাবকরা। সরকার তা আমলে নেয়নি বরং সরকার তাদের সাইবার নিরাপত্তা আইনের মত গণবিরোধী আইন দিয়ে গ্রেফতার করেছে। যা সরকারের গণবিরোধী ও ফ্যাসিবাদী চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ।”

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সরকারের প্রতি গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম—২০২১’ বাতিলের আহ্বান জানান।