Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ

131

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের জোট জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের নতুন কমিটি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এছাড়া কমিটি ঘোষণার দু’দিনের মধ্যেই এক সদস্য পদত্যাগ করেছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কমিটিতে যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিতেই সাবেক নেতৃবৃন্দ তাদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন। এদিকে জোটভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যদের মতামত না নিয়ে লেজুড়বৃত্তির আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া জোটের সদস্যরা চেনেন না এমন ব্যক্তিকে শীর্ষ পদে বিজয়ী করার মতো ঘটনাও ঘটেছে৷ অন্যদিকে সম্মেলন বিকাল পাঁচটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলে রাত পৌনে ১২টার দিকে শুরু করা হয়।

ক্ষোভ জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেট অর্গানাইজেশনের (জেইউডিও) সদস্য মোহাম্মদ রায়হান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘কমিটির উপরে খুশি না অবশ্যই। তাই তাদের অভিনন্দন জানানোর প্রশ্ন আসে না। সাংস্কৃতিক জোট সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে তার গ্রহণ যোগ্যতা হারাতে যাচ্ছে এটা নিশ্চিত। সামনের দিনে সাংস্কৃতিক জোটকে হয়তো আর দশটা সাধারণ মেরুদন্ডহীন সংগঠনের মতোই দেখবে সবাই। এই কমিটি যেন জোটের লিগ্যাসিতে ফুলস্টপ দিয়ে দিল।’

এদিকে সাংস্কৃতিক সংগঠন চারণ’র হয়ে কাজ করতে আপত্তি থাকায় আজ রবিবার জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন নবনির্বাচিত কমিটির কার্যকরী সদস্য আ র ক রাসেল। তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে চারণের পক্ষে সোহাগী সামিয়াকে নতুন কার্যকরী সদস্য করা হয়েছে। তবে নতুন একজনকে কার্যকরী সদস্য হিসেবে মনোনীত করার বিষয়ে কমিটির অন্য সদস্যদের মতামত নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

পদত্যাগের বিষয়ে আ র ক রাসেল বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাচনে চারণের পক্ষে ভোট দিতে বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়। তখন আমি আপত্তি জানাই। তবে কনোজ দাদা আমাকে সাময়িক সময়ের জন্য ভোট দিতে বলেন।’

‘পরে তিনি আবার চারণের প্রতিনিধি হিসেবে আমার নাম প্রস্তাব করেন। তখনও আমি আপত্তি জানিয়েছি, তবে তিনি আমাকে থামিয়ে রেখেছেন। এরপর নির্বাচন শেষে কনোজ দাদা আমাকে চারণের হয়ে কাজ করতে বলেন। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাংস্কৃতিক সংগঠন চারণ করা সম্ভব নয়। তাই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি’, যোগ করেন রাসেল।

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের নবনির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া জাহান বলেন, ‘পদত্যাগকারী সদস্য জোটের সভাপতির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তাই আমার পক্ষে তার পদত্যাগের সঠিক কারণ বলা সম্ভব নয়। সে যেহেতু চারণের সদস্য ছিলেন, চারণের সাথেও তার কোনো কথা হয়েছে কি না, সেটাও জানি না।’

এ বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি শরণ এহসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সার্বিক বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সদ্য সাবেক সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, ‘গত দু’বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, জোটের নতুন কমিটিতে যারাই নির্বাচনে হেরেছে তারাই এসব ক্ষোভ প্রকাশ করে কাদা ছোড়াছুঁড়ি করেছে। আমার কাছে বিষয়টি অপরিণত মানসিকতা এবং শিশুতোষ আচরণের মতো মনে হয়েছে। আর পদত্যাগের বিষয়টি আসলে তার ব্যক্তিগত বিষয়। এ বিষয়ে কিছু মন্তব্য করতে চাইনা।

নতুন কমিটিতে নতুন সদস্য সংযুক্তের বিষয়ে বলেন, ‘জোট কোনো সংগঠন নয়। এটি কয়েকটি সংগঠনের জোট। প্রত্যেক সংগঠন একজন করে প্রতিনিধি পাঠায়। এখানে কোনো সংগঠন থেকে যে প্রতিনিধিকে পাঠানো হলো, সে যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে, সেক্ষেত্রে সংগঠনকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নতুন সদস্য সংযুক্ত করা স্বাভাবিক। বিষয়টি ওই সংগঠনের ব্যাপার। এখানে জোটের অন্যান্য সংগঠনের মতামত দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।’

এর আগে, গত শুক্রবার জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের ২০২৩-২০২৪ সেশনের নতুন কমিটিতে সভাপতি পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী শরণ এহসান এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জাহান নির্বাচিত হয়েছেন।