Home সারাদেশ জামালপুর-৫ আসনে ভোটের দিন নৌকা ও ঈগল প্রতীকে প্রার্থীর মধ্যে সংঘাতের শঙ্কা

জামালপুর-৫ আসনে ভোটের দিন নৌকা ও ঈগল প্রতীকে প্রার্থীর মধ্যে সংঘাতের শঙ্কা

21

সুমন আদিত্য,জামালপুর প্রতিনিধিঃ ভোটের দিন যত ঘনিয়ে আসছে জামালপুর-৫ (সদর) আসনে নির্বাচনী উত্তাপ ততই ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী এবং একই দলের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনুর মধ্যে এই উত্তাপ। দুই প্রার্থীর’ই নির্বাচনী প্রচারণা কেন্দ্র ভাংচুর ও কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ইতিমধ্যে ঘটেছে। এতে মামলাও হয়েছে। এদিকে ভোটের দিনে সংঘাত বাড়তে পারে আশঙ্কা করছেন সাধারণ ভোটারেরা।

জামালপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ নৌকা প্রতীকে ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এফবিসিসিআই এর পরিচালক রেজাউল করিম রেজনু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীরা জেলা শহরসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রর্থনা করছেন। তবে দুই প্রার্থীর’ই নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্র ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

গণমাধ্যোম সূত্রে জানা যায়, ‘গত বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) শাহবাজপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কৈডোলা এলাকায় নৌকার প্রচার কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে এবং দুই পক্ষের সংঘর্ষে নৌকার চারজন কর্মী গুরুতর আহত হয়। এঘটনায় জাকির হোসেন নামে একজন বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২৫-৩০ জনকে অজ্ঞতানামা করে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা সবাই ঈগল প্রতীকের সমর্থক ও কর্মী। আসামিদের মধ্যে ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আকন্দ বাবুকে প্রধান আসামী ও জেলা আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে আরও বেশি উত্তাপ ছড়িয়ে পরে এই আসনে।

গত বুধবার (২৭ডিসেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার ঘোড়াধাপ ইউনিয়নের রাজাপুর এলাকায় আরো একটি নৌকার নির্বাচনী প্রচারণা কেন্দ্রে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

এদিকে গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে সদর উপজেলার বাঁশচড়া ইউনিয়নের কাশারুপাড়া গ্রামে ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্র ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ঘটনা ঘটে।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়,’জামালপুর-৫ সদর আসনে সাতজন প্রার্থী রয়েছেন। এদের মধ্যে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের দুই প্রার্থী নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াচ্ছেন। দুই প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মীরা ভোটারদের ধারে ধারে ঘুরে ভোট চাচ্ছেন এবং শহর-গ্রামের রাস্তাঘাটে নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে গেছে।

সাধারণ ভোটারা বলছেন,’নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে হবে নির্বাচন। অন্য প্রার্থীদের তেমন সাঁড়া নেই। নির্বাচনে দুই প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। ভোটের দিন দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে।’

পৌরসভার একজন ভোটার বলেন,’ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে নৌকা আর ঈগল প্রতীকের। ভোটকেন্দ্রের ভিতরে কেউ যদি সমস্যা করে তাহলে দুই পক্ষের মধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। তাই পুলিশ বেশি থাকলে এ ধরনের সমস্যা হবে না।’

নৌকার প্রার্থী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতিযোগিতা থাকবেই। এ আসনটি নৌকার ঘাঁটি। যেখানেই যাচ্ছি ভোটারদের কথা একটাই, তাঁদের কাছে ভোট চাইতে হবে না, তাঁরা নৌকারই ভোটার। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে চ্যালেঞ্জে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজাউল করিমের নির্বাচনের সমন্বয়কারী ইকরামুল হক নবীন বলেন,’নৌকার সমর্থকেরা আমাদের কেন্দ্র ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও কর্মী ও সমর্থকদের নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হলে আমাদের বিপুল ভোটে বিজয়ী হব।’

এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনু গত ৩০ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের সময় জামালপুর-৫ আসনে সংঘাতের আশংকা করে নির্বাচনের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলেন এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক চেয়েছেন।