Home সারাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলে লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে মানুষ জীবিকা হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে

জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলে লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে মানুষ জীবিকা হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে

40

‘পরিবেশ ও উপকূল’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী

স্টাফ রিপোটার: গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ‘পরিবেশ ও উপকূল’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সারাদেশে পরিবেশগত সংকট বাড়ছে। সাগরে পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলে লবণাক্ততা বাড়ছে। ফলে মানুষ জীবিকা হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। নীরবে ঘটে যাওয়া এই বিপর্যয় বিশ^বাসীর সামনে তুলে ধরতে প্রয়োজন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা।
আজ মঙ্গলবার দু’দিনের অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং সুন্দরবন ও পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার্স মো. নূর আলম শেখ, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার (স্কাস) চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, একাত্তর টেলিভিশনের সহযোগি প্রধান বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান, ডিইউজে’র সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, কক্সবাজার জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রামের সাংবাদিক মিন্টু চৌধুরী, কোষ্টাল ভয়েস অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক কৌশিক দে, উন্নয়নকর্মী মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমূখ।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ কাওসার রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে। একইসঙ্গে প্রকৃতির সাথে আমরা বিরূপ আচার-আচরণ করছি, যার প্রভাবে প্রকৃতি আমাদের সাথে বৈরিতা বাড়াচ্ছে। নদীকে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছি। ধীরে ধীরে নদীর সাথে আমাদের দূরত্ব বাড়ছে। ফলে নদী বিধৌত এলাকায় বন্যা ও নদী ভাঙ্গন চলছে। অন্য এলাকায় খরা দেখা দিচ্ছে। আবার চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন শহরে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুকি মোকাবেলাসহ পরিবেশ সুরক্ষায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার উপর জোর দিতে হবে।
বাপা নেতা নূর আলম শেখ বলেন, পরিবেশ সংক্রান্ত স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হিসেবে উন্নত বিশে^র কাছ থেকে ক্ষতিপুরণ আদায়ের জন্য আমরা লড়াই করছি। আবার পরিবেশ সংক্রান্ত আইনগুলোর সঠিক প্রয়োগের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। কারণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ আইন থাকলেও সেই সকল আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। আইন ও নীতিমালার তোয়াক্কা না করে প্রভাবশালীরা নদী ও জলাশয় দখল করে নিচ্ছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে এমন বিষয়গুলো জনসমুক্ষে তুলে ধরার মাধ্যমে সাংবাদিকরা সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের সমন্বিত পদক্ষেপের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা। তিনি বলেন, গত এক দশকে কক্সবাজারসহ সমগ্র উপকূলের পরিবেশে বড়ধরণের পরিবর্তন এসেছে। সাগর-নদী, পাহাড়, বনসহ প্রাকৃতিক সম্পদের উপর আগ্রাসন চলছে। এর বিরুদ্ধে পরিবেশ কর্মী ও নাগরিক সমাজের আন্দোলনকে আমলে নিচ্ছে না প্রভাবশালীরা। দখল-দূষণ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে দায়িত্ব পালনকারি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উপকূলের সকল জেলা ও উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এই প্রশিক্ষণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৩২ জন সাংবাদিক অংশ গ্রহণ করেন। এরআগে খুলনা অঞ্চলের ৩১ জন ও দ্বিতীয় দফায় বরিশাল অঞ্চলের ২৭ জন সাংবাদিক অংশ নেন।