Home রাজনীতি জনগণকে ঋণের বোঝায় জর্জরিত করে শেখ হাসিনা উল্লাস করছেন–রিজভী

জনগণকে ঋণের বোঝায় জর্জরিত করে শেখ হাসিনা উল্লাস করছেন–রিজভী

38

স্টাফ রিপোটারঃ পদ্মা সেতুর আলোকোজ্জ্বল উদ্বোধনের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জনগণকে ঋণের বোঝায় জর্জরিত করে শেখ হাসিনা উল্লাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কীসের জন্য এ সিদ্ধান্ত? অন্যদিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধার সহধর্মিনী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কাতরাচ্ছেন হসপিটালের বেডে। অথচ সরকার উনার চিকিৎসা করার ন্যূনতম সুযোগ দিচ্ছে না।’

সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন,আপনি (শেখ হাসিনা) যে আলোকোজ্জ্বল উদ্বোধনের কথা বলছেন ৬৪ টা জেলায়। এটা কিসের জন্য? এগুলো কার টাকায় করবেন? বিভিন্ন দেশের ডেভলপমেন্ট দেখেছি। ’৭২ সালে সাগরের নিচ দিয়ে রেল লাইন নিয়ে গেছে সেখানে এত ঢাকঢোল দেখেনি। ঊনবিংশ শতাব্দীতে লন্ডনে মাটির নিচ দিয়ে ট্রেন লাইন নিয়ে গেছে সেখানে তো এত ঢাক ঢোল পিটাতে শুনিনি। আপনি এত ঢাকঢোল পেটাচ্ছেন কিসের জন্য? যদি আপনার নিজের টাকায় তৈরি করা হতো বা আপনার প্রতৃক সম্পত্তি টাকা দিয়ে করা হতো তাহলে একটা কথা ছিল। পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে সাধারণ জনগণের টাকা দিয়ে। রিকশাওয়ালা, সিএনজি ওয়ালা,বা‌সের ড্রাইভার, ব‌্যবসায়ীদের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন,‘প্রথমে যারা পদ্মা সেতুর কাজ নিয়েছিল রয়েল ব্যাংক। তারা আপনাদের দুর্নীতির কারণে সরে গেছে। আপনার মন্ত্রী দুর্নীতির কথা বলেছেন। আপনার উপদেষ্টা এই দুর্নীতির সাথে জড়িত। জনগণের ওপর অনেক ঋণ চাপিয়ে দিয়ে সেতু করে এখন বলছেন নিজের অর্থায়নে করেছেন। নিজস্ব অর্থায়নের বলতে কী বুঝান? তাহলে ঋণ নিয়েছেন কেন? এই মিথ্যা কথা কেন বলছেন? আপনার তো মিথ্যার উপর দিয়ে এ চলছেন।

বাংলা একাডেমি মহাপরিচালকের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বাংলা অভিধান এর কিছু নতুন শব্দ সংযোজন করেন। প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জ থেকে কিছু নতুন শব্দ আমদানি করেছেন এগুলো এখন অভিধানে সংযোজন করা দরকার। গোপালগঞ্জের শব্দ টুস করে, চুবানি আমার মনে হয় এ শব্দগুলো আপনার ওখানে (বাংলা একাডেমীতে) সংযোজন করা দরকার।

তিনি বলেন,’বাংলাদেশে এখনো উন্নত চিকিৎসা নেই। যদি থাকতো তাহলে মানুষ কেন ঝাকে ঝাকে ভারত সিঙ্গাপুর এবং অন্যান্য রাষ্ট্রে যায়? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পায়ে হেঁটে জেলখানায় গেলেন। আর হুইল চেয়ারে করে বের হলেন। আপনি কী নির্যাতন করেছেন? আপনি খাবারের মধ্যে কী বিষ দিয়েছেন? গোটা জাতি এই প্রশ্ন রাখেন। প্রধানমন্ত্রী আপনি কি শূন্যতা সৃষ্টি করতে চান? একটা কথা আছে প্রকৃতি শূন্যতা ঘৃণা করো। আপনি মনে করেছেন বেগম খালেদা জিয়া আর মনে হয় উঠে দাঁড়াবেন না। দেশনায়ক তারেক রহমান দেশে আসতে পারবেন না। এই শূন্য মাঠে আমি এক মহারানী। আপনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। শেখ হাসিনা আপনি ঝড়ের পূর্বাভাস বুঝতে পারছেন না। যখন শূন্যতা শুরু হয় চারদিক থেকে ঝড় আসতে শুরু করে। আর এই কালবৈশাখীর ঝড়ে খড়কুটোর মতো আপনার সরকার উড়ে যাবে। আপনি টের পাবেন না। আপনি টুস করে বলেছেন তো? আপনার সরকার ধপ করে পড়ে যাবে।

তিনি বলেন, মহিলাদের একটা প্রোগ্রাম করেছে আর আপনি চারপাশে পুলিশ মোতায়েন করেছে আপনার এত ভয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে ও আপনার ভয় যায় না। আপনি বিরোধী দল দমন করার চেষ্টা করছেন। তাদের সভা-সমাবেশ করতে দিতে চান না এই ভয়ে যে আপনার কু-কীর্তি ফাঁস হবে বলে। বেগম খালেদা জিয়া নারী ক্ষমতায়ন, যুবকদের বেকারত্ব থেকে মুক্ত অসংখ্য কাজ করেছেন। এই জন্যে আপনি শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি এত ক্ষোভ যে, আমি এত কিছু করলাম মেট্রোরেল করলাম। পদ্মা সেতু করলাম, তাও দেশের জনগণ বেগম খালেদা জিয়ার এত ভক্ত কেন? এই হিংসা থেকে আপনি বের হতে পারেননি। বের হতে না পারলে এই দুর্ভাগ্য প্রধানমন্ত্রীর।

সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ,সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।