Home রাজনীতি চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই–প্রধানমন্ত্রী

চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই–প্রধানমন্ত্রী

32

ডেস্ক রিপোর্ট: আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই, সেটা বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানার পরও কেন তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।তিনি বলেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপি (পুলিশের সঙ্গে) সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। বিএনপি কি জানে না যে, সেখানে জিয়ার কবর বা কবরে জিয়ার লাশ নেই? যদি তাই হয়, তাহলে তারা এই নাটক কেন করে? খালেদা জিয়া তা ভাল করেই জানেন।
তিনি বলেন, আমি শুধু এইটুকু চাই, যারা ষড়যন্ত্রকারী, চক্রান্তকারী, যে উদ্দেশ্য নিয়ে জাতির পিতাকে ১৫ আগস্ট হত্যা করেছে, তাদের উদ্দেশ্য তো ছিল বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানো, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন ব্যর্থ হোক, স্বাধীনতার আদর্শ ধ্বংস হয়ে যাক, সেটাই করতে দেব না।’
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর তারা ইতিহাস বিকৃত করেছিল। আমার দেখা নয়া চীন, কারাগারের রোজনামচা, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, ১৪ খন্ডে এসবির গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকেই সত্যিকারের রিপোর্ট বের হয়ে আসছে।
তিনি আজ গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়া অথবা তারেক জিয়া জিয়াউর রহমানের লাশ দেখেছিলেন কিনা প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাস্তবতা হলো বুলেটে জর্জরিত লাশও সহজেই শনাক্ত করা যেত। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে যে বাক্সের মধ্যে লাশ আনা হয়েছিল সে বাক্সের মধ্যে কেউ জিয়ার লাশ দেখতে পায়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি সেই সময় এইচ এম এরশাদের কাছ থেকে শুনেছেন যে, বাক্সের মধ্যে যে লাশটি ছিল তা সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিল। কিন্তু জিয়া সে সময় রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আর রাষ্ট্রপতি কখনো সামরিক পোশাকে থাকেন না।
তিনি জানতে চান, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা কি জানেন না যে, রাষ্ট্রপতি সামরিক পোশাক পরিধান করেন না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা মনে করেছিল যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে কিছু স্থানীয় সহযোগিদের সহায়তায় হত্যা করতে পারলেই দেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ হয়ে যাবে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমান দেশের কোথাও কখনও সরাসরি যুদ্ধ করেননি এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে জিয়া খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতার উৎস ছিলেন বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান জেলের ভেতর জাতীয় চারনেতা হত্যার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।
তিনি বলেন, সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে তারা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রতিবন্ধী নারী বাসন্তীকে মাছ ধরার জাল পরিয়ে বিশ্বব্যাপী তার সেই ছবি প্রচার করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সেই সময় মাছ ধরার একটি জালের দাম ছিল ১৫০ টাকা, আর একটি শাড়ীর দাম ছিল ৬ থেকে ৭ টাকা। তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার জন্য যারা সপ্তম নৌবহর পাঠাতে চেয়েছিল তারাই ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার অপশাসনের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার দেশকে যে জায়গায় এনেছিলেন সেখান থেকে খারাপ অবস্থার দিকে চলে গিয়েছিল।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাদের খান, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল ও উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন ও উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা।
সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।