Home জাতীয় কসবায় বেপরোয়া পাহাড় খেকোরা

কসবায় বেপরোয়া পাহাড় খেকোরা

44

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: কসবায় একের পর এক পাহাড় কেটে সাবাড় করছে পাহাড় খেকোরা। নেপথ্যে কাজ করছে এলাকার প্রভাবশালী মহল। এতে করে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র হুমকির মুখে। পাহাড় কাটায় স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের উদাসিনতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয় লোকজন ও সচেতন মহল। পরিবেশ অধিদপ্তরকে ফোন দিলেও তড়িৎ কোনো ব্যবস্থা গ্রহন না করার অভিযোগ রয়েছে।
গত কিছুদিন যাবত উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে পাহাড় কেটে মাটি দিয়ে নিচু জমি ও জলাশয় ভরাট করার সময় স্থানীয়রা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.নুরুল আমিনকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার সময় ত্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন দিলে সেখান থেকে জরুরী মেসেজ পেয়ে কসবা থানা পুলিশ রাত ১১ টায় ঘটনাস্থলে যান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থলে একটি টিলার আড়ালে মাটি কাটায় ব্যবহৃত ভেকু মেশিনটি লুকিয়ে রাখে। অপরদিকে ৮টি ট্রাক্টর রাতের আধারে এদিক-সেদিক ছুটে চালকসহ জড়িতরা পালিয়ে যায়। পুলিশ মাটি কাটায় জড়িত জয়নগর বাজারের জাহাঙ্গীর আলমের ফার্নিচারে দোকানে গিয়ে মাটি কাটতে নিষেধ করেন। এছাড়া ওই এলাকায় একাধিক চক্র পাহাড়ের মাটি কাটায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম মধুপুর এলাকায় কাতার প্রবাসী মাসুদ মিয়ার পাহাড় কেটে জয়নগর বাজারের পাশে নিচু জমি ভরাট করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম ও বোরহান উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে গত ৩-৪ দিন যাবত রাতের আধারে এই পাহাড়ের মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। মাটি দিয়ে নিচু ফসলী জমি ও জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা পাহাড় কাটা বন্ধের বিষয়ে কোনো ভুমিকা না রাখার অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন ভ’মি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় থাকা স্বার্থান্বেষী প্রভাবশালী মহলের লোকজন পাহাড় কাটায় মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
অভিযোগ পেয়ে গত রবিবার জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পরিদর্শক জুবায়ের হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কিন্তু ওই রাতেই আবারো মাসুদ মিয়ার পাহাড়ের মাটি কেটে ৬টি ট্রাক্টর দিয়ে সরাতে থাকলে ত্রিপল নাইনে ফোন দিলে তারা কসবা থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে রাত সোয়া ২টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে শ্রমিকরা দ্রুত গা ঢাকা দেয়। পুলিশ চলে আসার পর রাতভর পাহাড়ের অবশিষ্ট অংশ কেটে মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
জাহাংগীর হোসেন ও বোরহান উদ্দিন জানায়, প্রবাসী মাসুদ মিয়া তাদের আত্মীয় হওয়ায় রাতের আধারে পাহাড়ের মাটি কেটে নিয়ে তাদের নিজস্ব ফসলী জমি ভরাট করা হচ্ছে। তারা গত ১৪ ডিসেম্বর উপজেলা প্রশাসনের বরাবর আবেদন করে মাটি কেটেছেন বলে জানায়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কসবা উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক প্রভাষক মুন্সি রুহুল আমিন টিটু বলেন, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। এখানে প্রশাসনের উদাসীনতাও এর জন্য দায়ী।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলমগীর ভূইয়া জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাটি কাটায় জড়িতরা পালিয়ে যায়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ’মি) সনজীব সরকার বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে আবেদন জানালেও কোনো অনুমতি দেইনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তরের সহযোগিতায় গতকাল বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের উদ্যোগে দুই শতাধিক মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। দুপুরে জেলার সরাইল উপজেলার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো চত্বরে এই কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ ও জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শফিকুল আলম এমএসসি। এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের ইউনিট লেভেল অফিসার উপ-পরিচালক খ: এনায়েতুল্লাহ একরাম পলাশ, পিএস টু চেয়ারম্যান জেলা পরিষদ ও জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট শরিফুল আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সাবেক যুব প্রধান মো: সালাহ্ উদ্দিন ভূইয়া, বর্তমান যুব প্রধান তানভীর রশিদ, ইউনিটের হিসাবরক্ষক মো: আরিফুর রহমান মনিরসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের যুব ও স্বেচ্ছাসেবক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট সর্বদাই জেলার শীতার্ত মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত জেলার অসহায় ও নিম্ন আয়ের পরিবারের সহযোগিতায় শুরু থেকেই কাজ করে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট। কোভিড-১৯ আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীদের জন্য বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার সেবা প্রদান, ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম, জনসচেতনতাবৃদ্ধি, টিকাদান কার্যক্রমে স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতা, স্বাস্থ্যকর্মী, ব্যবসায়ী ও সাধারন জনগনের মাঝে স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ বিতরণ করাসহ ইউনিটের প্রশিক্ষিত যুব ও স্বেচ্ছাসেবকরা দিনরাত সরকারের সাথে একত্রে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি শীতার্ত অসহায় দুস্থ জনগণকে সহায়তা দিতে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের মানবিক সহায়তার হাত প্রসারিত করার উদাত্ত আহ্বান জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাগলা কুকুরের কামড়ে দেড় শতাধিক আহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী ও শিশুসহ দেড়শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে থেকে বিকাল পর্যন্ত শহরের নয়নপুর, পুনিয়াউট, পৈরতলা,মধ্যপাড়া, দক্ষিণ পৈরতলা বাস্ট্যান্ড, সরকার পাড়া, বনিকপাড়াসহ কয়েটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শহরের একাংশে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আহতরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। উত্তেজিত জনতা ওই কুকুরটিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
কুকুরের কামড়ে গাজীউর রহমান (৭০), হনুফা (৮০), শফিক (৫৮), সিয়াম (১১), মিম আক্তার (৭), আবির (১৬), মোহন মিয়া (২২), ধন মিয়া (৬৫), হামিদ মিয়া (৯), সানিতা বেগম (৪), তানিয়া বেগম (২০), সাহেদ মিয়া (৪৮), জাহাঙ্গির মিয়া (৪০), রবিউল হোসেন (৮), ইমরান মিয়া (১২), আকাশ মিয়া (১৫), পাপিয়া বেগম (৩৩), হোসনা বেগম (২৫), তাহমিনা বেগম (১৯) সহ দেড় শতাধিক লোক আহত হয়।
দক্ষিণ পৈরতলা বাস্ট্যান্ডের বি,বাড়িয়া এক্সপ্রেসের টিকেট বিক্রেতা আরমান (৩৭) জানান, আমি টিকেট বিক্রি করে কাউন্টারের সামনে দুপুরের দিকে দাঁড়ানো অবস্থায় একটি কুকুর হঠাৎ করে এসে পায়ে দুটো কামড় দেয়। আমি কুকুরটিকে ছাড়াতে গেলে হাতেও কামড় দেয়। সাথে সাথে আমি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন নিয়েছি।
দক্ষিণ পৈরতলা গ্রামের গৃহবধু দোলন মল্লিক (২৮) জানান, ব্যাংকের কাজ সেরে বাড়ি যাবার পথে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পেছন থেকে একটি কুকুর এসে আমার পায়ের উপরের অংশে কামড় বসায়। আমি দ্রুত স্থান ত্যাগ করলে সেটি চলে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান,বুধবার দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত একটি পাগলা কুকুর শহরের কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে কামড়ে আহত করেছে। পরে উত্তেজিত জনতা কুকুরটিকে পিটিয়ে মেরেছে। আহতরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাইজুর রহমান ফয়েজ জানান,বুধবার দুপুর থেকে পাগলা কুকুরের কামড়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন প্রচুর মানুষ। একপর্যায়ে হাসপাতাল ভরে যায়। আমরা সকলকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন দিয়েছি। হাসপাতালে যথেষ্ট পরিমান ভ্যাকসিন সরবরাহ আসায় আক্রান্তদের সেবা দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা আছে। আহতদেরকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে প্রয়োজনমতো।