Home সারাদেশ কলাপাড়ায় ম্যাজিক জালে’র ব্যবহার বেড়েছে।। হুমকির মুুখে জলজপ্রাণিসহ প্রকৃতি

কলাপাড়ায় ম্যাজিক জালে’র ব্যবহার বেড়েছে।। হুমকির মুুখে জলজপ্রাণিসহ প্রকৃতি

35

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চায়না দুয়ারী জালের ব্যবহার ক্রমশ বেড়েই চলছে। এটা চাঁই বা কারেন্ট জালের চেয়েও ভয়ংকর ফাঁদ। এই জাল এমনভাবে বোনা হয়েছে একটি গিঁট থেকে আরেকটি গিঁটের দূরত্ব খুব কম। মূলত মশারি তৈরির নেটের আদলে এই জাল বোনা। এ জন্য এতে মাছ একবার ঢুকলে আর বের হতে পারে না। এ জালটি ‘ম্যাজিক জাল’ নামেও পরিচিত রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের খাল, বিলে এখন এই জালের ছড়াছড়ি। এতে ধরা পড়ছে নানা জাতের সদ্যজন্ম নেওয়া ছোট ছোট দেশী মাছের পোনা। একই সাথে ধ্বংস হচ্ছে জলজ প্রাণী। এসব জালের ব্যবহার বন্ধ করা না গেলে দেশী মাছসহ জলজপ্রাণি, প্রকৃতি যেমন হুমকির মুুখে পড়বে, তেমনি প্রকৃত মৎস্যজীবীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে সচেতন মহল ও মৎস্য গবেষকরা জানিয়েছেন।
শহর কিংবা গ্রামের বাজারে ঘুরলেই দেখা যায়, সিং, মাগুর, কই, টাকি, পুটি, ভেদা, শোল ও বোয়ালসহ নানা প্রজাতির ছোট ছোট দেশীয় মাছের পোনা বিক্রি করা হচ্ছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে টেংরা মাছের পোনা। এ মাছ বিক্রি হচ্ছে খুবই অল্পমূল্যে। তবে মাছ ব্যবসায়িরা জানান, ম্যাজিক জালে এসব পোনা মাছ ধরা পড়ছে। মাছ কিনতে আসা মো.আবুল কালাম নামের এক ব্যাক্তি বলেন, প্রতিদিনই এসকল মাছ বাজারে দেখছি। এভাবে ছোট মাছ ধ্বংস করা হলে অচিরেই দেশীয় প্রজাতির মাছ এ এলাকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
কামারুজ্জামান শহীদ মাতব্বর বলেন, এভাবে নির্বিচারে দেশী ছোট মাছ নিধন হলে ভবিষ্যতে মাছ খুজে পাওয়া মুশকিল হবে।
নাগরিক উদ্যোগ আহবায়ক কমরেড নাসির তালুকদার বলেন, বহুকাল ধরে পরিচিত একটি প্রবাদ বাক্য শুনে এসেছি মাছে ভাতে বাঙালী। তবে মাছ শুন্য থালায় সে কথা এখন মানতে নারাজ নতুন প্রজন্ম। ভাতের সাথে মাছ খাওয়া এখন আকাশ কুসুম ব্যাপার।এর প্রধান কারন নামে-বেনামে অনেক বিদেশী জাল দিয়ে জেলেরা নির্বিচারে ছোট মাছ ধ্বংস করছে।
আন্তর্জাতিক মৎস্য গবেষনা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশ, ইকোফিশ-২ সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, চায়না দুয়ারী একটি অবৈধ জাল। এটি বিভিন্ন নামে অবাধে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এই জালে দেশি প্রজাতির মাছসহ বিলুপ্ত প্রায় কচ্ছপ প্রচুর পরিমানে মারা পড়ছে। এখনি এধরণের অবৈধ জাল বন্ধ করা না গেলে ভবিষ্যতে দেশী প্রজাতির মাছ সহ কচ্ছপ একেবারে বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ কাজে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণার পাশাপাশি প্রশাসনিক অভিযান জরুরী বলে মনে করেন তিনি।
এবিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় আমরা সারা বছরই কাজ করছি। যে সকল জেলেরা এই ধরনের কাজে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।