Home সারাদেশ কলাপাড়ায় বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা।। বাড়ি বাড়ি গিয়ে...

কলাপাড়ায় বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা।। বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিয়েছে রান্না করা খাবার

37

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। কারো বাড়ির উনুনে উঠেনি হাড়ি। তাদের দিন কাটছে অনাহারে। ঠিক সে মুহুর্তে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভীন সীমা। তিনি কখনো বৃষ্টিতে ভিজে পুড়ে নৌকায়, আবার কখনো কোমর সমান পানিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুস্থ, অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন রান্না করা খাবার। এ সময় খাবার পানি,স্যালাইন এবং পানি বিশুদ্ধকরন ঔষধ বিতরণ করেন। গত তিনদিন ধরে উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরাম’র উদ্যোগে এ সহায়তা করে যাচ্ছেন। তবে ওইসব বানভাসি মানুষ দুঃসময় এ খাদ্য সহায়তা পেয়ে খুশি।
স্থানীয়রা জানান, বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে প্রতিদিন লালুয়া,ধানখালী ও চম্পাপুর ইউনিয়নের গ্রামের পর গ্রাম দুই দফা জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্রতিদিন মানুষের ঘড়-বাড়ি, ফসলি ক্ষেত তলিয়ে যায়। চারিদিকে শুধু অথৈ পানি। ভাটার সময় পানি কমে গেলেও ফের জোয়ারের সময় ডুবে থাকে এসব গ্রাম। এমনকি এসব গ্রামের পরিবারগুলোর রান্না ব্যবস্থাও নেই। পুকুরসহ টিওবয়েল ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।
লালুয়া ইউনিয়নের রাবনাবাদ নদীর পাড়ে চর চান্দুপাড়া গ্রামের গৃহবধু রওশনারা বেগম বলেন, জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে তার বসতবাড়ি। কয়েকদিন ধরে রান্না করেতে পারেনি তিনি। আইজ মোগে খিচুরী আর পানি দেছে। হেইয়া খাইয়া থাকমু।
হাতে রান্না করা খাবার পেয়ে ধানখালী ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামের ৭০ উর্ধ্বো বৃদ্ধ মো.বজলু হাওলাদার বলেন, জোয়ারের পানিতে ঘরের মালামাল ভাসাইয়া লইয়া গ্যাছে। আমি বুড়া মানু মোর ঠান্ডা লাগে। দিন রাইত চহির উপর উড্ডা বইয়া থাহি।
একই গ্রামের শাহিনুর বেগম বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধইর‌্যা মোগো জোয়ারের পানিতে বাড়ি-ঘর ডুইব্যা রইছে, ভাডার সময় হুগায়। এ্যাহন প্রত্যেক ঘরে ঘরে বুড়া আর পোলা পানের ঠান্ডা জ্বর-কাশি অইয়া গ্যাছে। হাঁস-মুরগী, ছাগল কোমনে গ্যাছে কইতে পারিনা। কোন সময় যানি ঘরডা পইড়া যায় হেই ডরে থাহি। যহন মোরা নিরুপায় হইয়া পরছি তহন ভাইস চেয়ারম্যান আমাগো খাওন আর ঔষধ দিয়া সহযোগিতা করছেন। এমন কথাই বলেছেন ওই গ্রামের আরো অনেকে।
উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরাম’র সভাপতি ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভীন সীমা বলেন, উপজেলার লালুয়া, ধানখালী ও চম্পাপুরে ইউনিয়নের বিভিন্ন পানি বন্দী গ্রামের ১৭৬০ পরিবারের মাঝে নারী উন্নয়ন ফোরামের পক্ষ থেকে রান্না করা খাবার, পানি,স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরন ঔষধ বিতরণ করা হয়েছে। এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তবে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানের জন্য অনুরোধ জানান তিনি।