Home জাতীয় কর্মচারীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে ডিসি আব্দুল জলিল কর্মকর্তা নই, আমরা গণকর্মচারী,জনগণের সেবক

কর্মচারীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে ডিসি আব্দুল জলিল কর্মকর্তা নই, আমরা গণকর্মচারী,জনগণের সেবক

34

মো.পাভেল ইসলাম রাজশাহী: রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেছেন, ‘কর্মকর্তা বলতে কোনো শব্দ নেই, আমরা গণকর্মচারী, মানে সরকারের কর্মচারি। মানুষের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন হয়। আমরা মানুষের কর্মচারি। আমরা মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য এই চাকরিতে এসেছি। এই সেবার মনোভাব যদি না থাকতো, তাহলে অন্য কিছু করতে পারতাম। আমি ব্যবসা করতে পারতাম। কিন্তু যেহেতু রাষ্ট্রের মানুষের ট্যাক্সের পয়সায় আমার বেতন হয়,তাই মানুষের কাজ করার জন্য আমরা এই চাকরিতে এসেছি।’

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে রাজশাহীতে নিয়োগ পাওয়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নতুন কর্মচারীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মচারিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘মোট ছয় দফায় আমি আমার অফিসে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির ১১৬ জন কর্মচারী নিয়োগ করেছি। এছাড়াও আবেদন বাবদ মোট ১১৭ টাকার বিনিময়ে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় রাজশাহীতে ৬০ জন চাকরি দিয়েছি। কোনো নিয়োগ পরীক্ষায় রিটেন থেকে শুরু করে ভায়ভা পর্যন্ত আমি কোনো ধরনের কোনো আপোষ করিনি। আমি আমার অফিসারদের বলেছি, একটা স্বচ্ছ ও ফেয়ার রিক্রুটমেন্ট চাই। আপনারা সাদা মনে আমার ইচ্ছাটা পূরণ করবেন। তারা আমার এই বিশ্বাস এবং আস্থার মূল্য এমনভাবে দিয়েছে,আমি যতটা ফেয়ার চেয়েছি তারা এর চেয়েও বেশি ফেয়ার করেছে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক বলেন,আমি ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের ভায়ভাটা নিয়েছি। নিয়েছি এই কারণে ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের চাকরি নিয়ে বিগত দিনে অনেক ধরনের কথাবার্তা ছিল। অনেক দুর্নাম ছিল নিয়োগ নিয়ে। হয়তো কিছু সত্য,হয়তো কিছু অতিরঞ্জিত। মানুষকে সার্ভিস দিতে হলে আমাকে একটা স্বচ্ছ নিয়োগ দিতে হবে। অর্থাৎ মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে যদি একটা সরকারি কর্মচারী নিয়োগ না দেই, তাহলে তাকে দিয়ে সুশাসন কিংবা আইনের কাছাকাছি নিয়ে আমি তাকে দিয়ে কাজ করাতে পারব না। সে জন্য স্বচ্ছভাবে নিয়োগ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি যদি টাকা নিয়ে কাউকে নিয়োগ দিয়ে বলি- কাজ করবা স্বচ্ছভাবে, মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিবে না। ও কি আমার এই কথা শুনবে? আমাকে মনে মনে তারা বলবে বাটপার। বলবে, এই লোক নিজে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে এখন আমারে বলছে পয়সা ছাড়া সার্ভিস দিতে। আমি তখনই তোমাকে স্বচ্ছভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিতে পারব, যদি আমি তোমাকে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ দিই। তাহলে এই অধিকার সম্পূর্ণটাই আমার আছে। আমরা স্বচ্ছভাবে নিয়োগ দিয়েছি, এখন তোমাদের সেবক হিসেবে দেখতে চাই।’

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের রাজশাহীর উপ-পরিচালকের কার্যালয় আজ এই ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন- পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের রাজশাহীর উপপরিচালক ড. কুস্তরী আমিনা কুইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মো. ফারুক।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিবার পরিকল্পনা সহকারি পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার পরিকল্পনা সহকারি এবং আয়া পদে নিয়োগের জন্য গত বছরের আগস্টে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরিবার পরিকল্পনা সহকারির এক পদের বিপরীতে ১ হাজার ৪৬৬ জন, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকের ১১ পদের জন্য ১ হাজার ৪৬৩ জন, পরিবার পরিকল্পনা সহকারির ৪৫ পদের বিপরীতে ২ হাজার ৭৬৩ জন এবং দুটি আয়া পদের বিপরীতে ১৭৯ জন আবেদন করেন। সকল প্রক্রিয়া শেষে গত নভেম্বরে নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদান করেন।