Home সারাদেশ কপোতাক্ষ নদ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন-সমাবেশ

কপোতাক্ষ নদ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন-সমাবেশ

32

স্টাফ রিপোটার: কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে পরিবেশ আন্দোলন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, দখল, দূষণ ও ভরাট হওয়ার কারণে কপোতাক্ষ নদের স্বাভাকি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগের ঝুঁকি বেড়েছে। দূর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় কপোতাক্ষ নদের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
আজ শনিবার খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার মাহমুদ কাটী গ্রামে ভাঙন কবলিত কপোতাক্ষের পাড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ আহ্বান জানান তারা। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র-এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো.নূর আলম শেখ, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জেল সোহেল, অ্যাডভোকেট প্রশান্ত মণ্ডল, অনির্বাণ লাইব্রেরির সহসভাপতি ডা. বাসুদেব রায় ও সাধারণ সম্পাদক প্রভাত দেবনাথ প্রমুখ।
বাপা সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল এমনিতেই দুর্যোগের ঝুঁকিতে আছে। এরপর কপিলমুনিতে সেতু নির্মাণের নামে পিলার স্থাপন করে ২০ বছর ধরে নদীর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করায় নদীটি মৃতপ্রায়। এ ছাড়া দখল, দূষণের যে চিত্র দেখা গেছে তা উদ্বেগজনক। তিনি আরো বলেন ড্রেজিংয়ের নামে নদীকে খাল বানানোর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো কপোতাক্ষ নদ। শুধু নিজের বাড়ি রক্ষার কথা ভাবলে হবে না। নদীর কথা ভাবতে হবে। নদীকে ভালো বাসতে হবে। নদী বাঁচলে আমাদের বাড়িঘর-জীবনজীবিকা সবই বাঁচবে। ঐতিহ্যবাহী কপোতাক্ষ নদ রক্ষায় বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। অনাদিকাল থেকে নদীর পানির দ্বারাই আমাদের সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি, কৃষি ও মানবজীবন সিঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের নদীর সংখ্যা দেড় হাজার থেকে আড়াই শতে নেমে আসছে। তাই নদী রক্ষায় আমাদেরকে এখনই সচেতন হতে হবে, প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। কপোতাক্ষ নদের প্রবাহ স্বাভাবিক না রাখতে পারলে সাতক্ষীরা, খুলনা, যাশোর ও ঝিনাইদহ জেলার কপোতাক্ষ পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকায় বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
মানবন্ধনের আগে বাপা সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিলের নেতৃত্বে ঢাকা থেকে আগত প্রতিনিধি দল খুলনার পাইকগাছা উপজেলার মামুদ কাটী ছাড়াও রামনাথপুর, রাড়ুলী ও কপিলমুনি এবং সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কপোতাক্ষের বাস্তব অবস্থা ঘুরে দেখেন। তারা দীর্ঘ দুই যুগ ধরে কপিলমুনি-কানাইদিয়া সেতুর পিলার বসিয়ে রেখে নদীর গতিপ্রবাহ নষ্ট করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা কপোতাক্ষ নদের বালিয়া অংশ থেকে আগড়ঘাটা পর্যন্ত খনন কাজ দ্রুত শুরুর দাবি জানান।
এদিকে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, কপোতাক্ষের অব্যাহত ভয়াবহ ভাঙ্গনে শুধু বাপ-দাদার ভিটা মাটিই নয়, ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, কবর স্থান সহ হাজার হাজার ফলজ ও বনজ বৃক্ষ। আবার নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। আবার অনেকে উদ্বাস্তু হয়ে শহরে আশ্রয় নিয়েছে।