Home বাণিজ্য ও অর্থনীতি এবার চালু হচ্ছে টাকা-রুপি ভিত্তিক ডেবিট কার্ড

এবার চালু হচ্ছে টাকা-রুপি ভিত্তিক ডেবিট কার্ড

31

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রুপিতে লেনদেন শুরু হওয়ায় লাভ-ক্ষতির অংক কষতে শুরু করেছে দুই দেশ। যদিও বাংলাদেশ যে পরিমাণ ভারতীয় রুপি রপ্তানির মাধ্যমে পাবে সেটাই আমদানিতে ব্যবহার করতে পারবে। এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। এর বাইরে টাকা-রুপি ভিত্তিক ডেবিট কার্ড চালু হচ্ছে। এটা উভয় দেশে ব্যবহার করা যাবে। ফলে প্রতি বছর কমবেশি ২৫ লাখ নাগরিক চিকিৎসা ও ভ্রমণসহ নানা কাজে ভারতে যান, তারাও সরাসরি রুপি ব্যবহার করতে পারবেন। সরাসরি টাকা-রুপির ডেবিট কার্ডের ফলে ৬ শতাংশ বিনিময় লোকসান সাশ্রয় হবে বলে জানা গেছে। খবর আমাদের সময়.কম

বাংলাদেশ প্রতি বছর ভারতে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। আমদানি করে ১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। বাংলাদেশ ওই দুই বিলিয়ন ডলারের সম পরিমাণ রুপি এখন চাইলে সরাসরি পাবে। ওই রুপি আবার ভারত থেকে সরাসরি আমদানিতে ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু বাকি আমদানিতে ডলারই ব্যবহার করতে হবে। তবে একইভাবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের এখনই টাকায় লেনদেন শুরু হচ্ছে না। সেটা হলে বাংলাদেশের বেশি সুবিধা হতো।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের এই রুপিতে লেনদেনের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের চারটি ব্যাংক অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশের দুইটি সোনালী এবং ইস্টার্ন ব্যাংক। আর ভারতের দুইটি স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং আইসিআইসিআই ব্যাংক। একাউন্ট খুললেই রুপিতে লেনদেন করা যাবে। যদিও এখন পর্যন্ত রুপিতে একাউন্ট ও এলসি খোলার আবেদন পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে যমুনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আমিন জানান, এতে সুবিধা হবে যে, আমরা যেটুকু রপ্তানি করব সেটুকুর বিনিময়ে রুপি পাব। সেটা দিয়ে আমরা আমদানি ব্যয় শোধ করতে পারব ভারতের সঙ্গে। ওই পরিমাণ ডলারের ওপর চাপ কমবে। আমাদের আমদানি রপ্তানির ভারসাম্য নেই। আমরা বেশি আমদানি করি। কম রপ্তানি করি। এটা ভারসাম্যপূর্ণ হলে লাভ বেশি হতো। তবে টাকা-রুপির ডেবিট কার্ডও ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তবে ভারতীয় রুপি আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাস্কেটে নেই। ইউয়ান আছে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, শুরুতে রুপিতে খুব বেশি লেনদেন হবে না। ধরুন ভারতে যে পোশাক রপ্তানি করে সে কাঁচামাল আমদানি করে অন্য দেশ থেকে ডলারে। সেতো রুপি নেবে না। কারণ রুপিতে নিলে তাকে তো আবার কাঁচামাল আমদানি করতে রুপিকে আবার ডলারে কনভার্ট করতে হবে। আর সেটা হলে তার তো ক্ষতি হবে। শুধু ভারতের সঙ্গে যার আমদানি ও রপ্তানি দুটি ব্যবসা আছে সে রুপি নেবে। এটা সর্বোচ্চ দুই মিলিয়ন ডলার হতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যা আমদানি করি তার বিনিময়ে ভারত তো বাংলাদেশি টাকা নেবে না। কারণ আমরা তো ডেফিসিট কান্ট্রি। ডেফিসিট কান্ট্রির মুদ্রা দিয়ে ভারত কী করবে। আমাদের রপ্তানি যদি বাড়ে তখন সেটা হয়তো হবে। কিন্তু এতে ভারতের লাভ হবে। রুপির গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। আর তাকে ডলারে পেমেন্ট করতে হবে না। রুপির বাজারও সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি এখানে ঝুঁকিও দেখছেন। তার মতে, রুপি আমাদের টাকার মতোই এখনো একটি দুর্বল মুদ্রা। এখন আমরা রপ্তানি করে রুপি আনলাম। ডলারের সঙ্গে যদি রুপির দামের অবমূল্যায়ন হয় তাহলে তো আমার ক্ষতি। ডলার আনলে সেই ঝুঁকি নেই।

সিপিডির ডিস্টিংগুইশড ফোলো অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভারতে রপ্তানি করে যে রুপি পাবো সেটা থেকে আমদানি করতে পারব। আমরা তো ডলার কনভার্ট করে রুপি বানিয়ে আমদানি করব না। তাতে তো আমাদের লোকসান। আমরা তো ডলার ছাড়াও ইউরো ব্যবহার করি। এখন রুপি হলে আমাদের বৈদেশিক বাণিজ্যে বিদেশি মুদ্রা ব্যবহারের পোর্টফলিও আরেকটু স্ট্রং হবে। তবে এক্সচেঞ্জ রেটটা কী হবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা যেন উইন উইন হয়। তা না হলে রিস্ক থেকে যাবে।