Home জাতীয় ইয়াসমিন হত্যা দিবস পালন করেছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম

ইয়াসমিন হত্যা দিবস পালন করেছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম

32

স্টাফ রিপোটার: নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস (ইয়াসমিন হত্যা দিবস) উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ ২৫ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম এর কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা রওশন আরা রুশো, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. দিলরুবা নূরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ মনীষা চক্রবর্ত্তী। সমাবেশ পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক রুখশানা আফরোজ আশা।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ইয়াসমিনের ওপর সংগঠিত বর্বরোচিত ঘটনার পর কেটে গেছে ২৮ বছর। নারী নির্যাতনের সংখ্যা, ধরন ও তীব্রতা বেড়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সরকারি উদ্যোগ আরো কমে গেছে। সরকারি বেসরকারি তথ্য বলছে, পাঁচ বছর আগের তুলনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এখন মাসে গড়ে ৩৫০টি মামলা বেড়েছে। বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, প্রতারণা, যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের আরেকটি বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে অনলাইন প্লাটফর্ম। আর অন্যদিকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কার্যক্রমে মন্ত্রণালয়ের বাজেট গত ছয় বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম। এ সময়ে বাজেট কমেছে ৬৩ শতাংশ।’
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘বিচারহীনতা ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক বলয় অপরাধ প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ধর্ষণের মামলায় ৯৭ শতাংশেরই কোন সাজা হয় না। ফলে অপরাধী আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অর্থ ও ক্ষমতার বলয়ে থাকলে খুন-ধর্ষণ যেকোন অপরাধ করে পার পেয়ে যায় Ñ এই হচ্ছে বাস্তবতা! মুনিয়া হত্যা, তনু হত্যার বিচার না হওয়া সেটাই প্রমাণ করে।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘পুঁজিবাদী ভোগবাদী সমাজে ও মৌলবাদী দৃষ্টিভঙ্গীতে নারী মানুষ হিসেবে অধিকার ও মর্যাদা পান না। মৌলবাদী দৃষ্টিভঙ্গীতে নারী ভোগের বস্তু। ফলে আভরণে ঢেকে, নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করে ভোগের সর্বোত্তম ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করা হয়। অন্যদিকে পুঁজিবাদে নারীর সস্তা শ্রম ও দেহ পন্যে পরিণত হয়। নারী মুনাফা লাভের এক বড় ধরণের মাধ্যম বা পণ্যে পরিণত হয়।। বাংলাদেশে এই দুইয়ের প্রভাব ব্যাপকভাবে উপস্থিত।’
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘নারী নির্যাতন সমাজ বিচ্ছিন্ন কোন বিষয় নয়। যে সমাজে বৈষম্য প্রকট, সে সমাজে নির্যাতন একটি স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস এই অন্যায়কে গুড়িয়ে দেয়ার শিক্ষা দিয়ে যায়। নারী শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিরোধ প্রয়োজন। ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়।’
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে পল্টন, জিরো পয়েন্ট, বায়তুল মোকাররম হয়ে প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।