ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই শুভক্ষণে আমি স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল সদস্য এবং এদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। এ দিবসের মাধ্যমে মাটি ও মানুষের আরো কাছাকাছি যাওয়া এবং জনগণকে সেবা প্রদানের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সেবা ও উন্নতির দক্ষ রূপকার, উন্নয়নে-উদ্ভাবনে স্থানীয় সরকার’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নয়ন দর্শনের মাধ্যমে এদেশে স্থানীয় সরকারের মূল ভিত্তিভূমি রচিত হয়, যা তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদে এবং প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সুস্পষ্ট করেন। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার একটি অন্যতম পরিকল্পনা ছিল- ‘নতুন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো রাস্তা, ড্রেন ও সেচ ব্যবস্থার অবকাঠামো তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ, জনস্বাস্থ্য, স্যানিটেশন শিক্ষা এবং সমাজকল্যাণ পরিষেবা সরবরাহ করার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।’ সে পরিক্রমায় সারাদেশে সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বহুমাত্রিক সুবিপুল কার্যক্রমে কর্মতৎপর ও নিবেদিত।
জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার বিগত সাড়ে ১৪ বছরে পল্লী খাতে ৭৫ হাজার ৮২৫ কি.মি. সড়ক উন্নয়ন এবং ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৭ মিটার নতুন ব্রিজ/ কালভার্ট নির্মাণ/ পুনর্নির্মাণ করেছে। আমরা ১ লাখ ২১ হাজার ৬২৩ কি.মি. পাকা সড়ক ও ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৭৯ মিটার ব্রিজ/ কালভার্ট রক্ষণাবেক্ষণপুনর্বাসন করেছি।১ হাজার ৭৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ৪০৬টি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ/ সম্প্রসারণ করেছি। তাছাড়া ২ হাজার ৮৭৪টি গ্রোথ সেন্টার ও হাট-বাজার উন্নয়ন, ১ হাজার ৪৯১টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ/ পুনর্নির্মাণ এবং বিভিন্ন সড়কে ৬ হাজার ৯৯১ কি.মি. বৃক্ষরোপণ করেছি। পাশাপাশি, নাগরিক জীবন মান উন্নয়নে ১১ হাজার ২৬৮ কি.মি. সড়ক ও ফুটপাত, ৪ হাজার ৬২৫ কি.মি. ড্রেন, ১৭ হাজার ৯৭২ মিটার ব্রিজ ও কালভার্ট, ৪৭টি বাস ও ট্রাক টার্মিনাল, ৫৭ হাজার ২২৪টি ল্যাট্রিন ও কমিউনিটি ল্যাট্রিন, ৫৫টি কমিউনিটি সেন্টার, ৫টি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিট এবং ২৬৯টি ডাস্টবিন নির্মাণ করেছি। এছাড়া ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদখাতে ১ হাজার ৮৯৫.৮৬ কি.মি. বাঁধ পুনর্নির্মাণ/ উন্নয়ন, ১ হাজার ৮৭৪টি পানি সম্পদ অবকাঠামো/ রেগুলেটর নির্মাণ, ৭ হাজার ২০৫ কি.মি. খাল খনন/ পুনঃখনন এবং ২০টি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে।
আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ দেশের জনগণ। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমে জনগণকে আরো সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের দাবি-সমস্যার কথা শুনতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্থানীয় সরকারকে স্মার্ট ও সেবামুখী করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত- সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।
আমি ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’- এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”