Home রাজনীতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চমক হিসেবে লিটনের নাম

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চমক হিসেবে লিটনের নাম

42

মো.পাভেল ইসলাম রাজশাহী: খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। জাতীয় চার নেতার অন্যতম এ এইচ এম কামরুজ্জামানের সন্তান। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যাদের বিতর্কহীন এবং শুধুমাত্র রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যেই নিবেদিত তাদের মধ্যে খায়রুজ্জামান লিটন অন্যতম। তিনি রাজশাহীকেন্দ্রিক রাজনীতি করলেও জাতীয় চার নেতার অন্যতম এ এইচ এম কামরুজ্জামানের সন্তান হিসেবে জাতীয় রাজনীতিতে তার প্রভাব প্রতিপত্তি আছে। আর এবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি চমক হিসেবে আসতে পারেন। আওয়ামী লীগের অনেকেই মনে করছেন যে, যাদের নাম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচিত হচ্ছে তাদের কেউই হয়তো শেষ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের ভেতর একটি মজার কৌতুক আছে যে, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাদের নাম আলোচিত হয় তারা কেউ সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন না। অতীতে বিভিন্ন সময় দেখা গেছে যে, যাদের নাম নিয়ে নেতাকর্মীরা সরব ছিলেন তারা সাধারণ সম্পাদক পদ পাননি।

ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে বাকশাল গঠিত হবার পর সাজেদা চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরবর্তীতে তিনি সাধারণ সম্পাদক হন। সাজেদা চৌধুরীর সাধারণ সম্পাদকের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে সবচেয়ে আলোচিত নাম ছিল তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু। তাদের যে কেউ একজন হয়তো সাধারণ সম্পাদক হবেন। কিন্তু সেবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একেবারেই চমক হিসেবে এসেছিলেন জিল্লুর রহমান। জিল্লুর রহমান জাতির পিতা বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করতেন এবং বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি দলকে সংগঠিত করার জন্য এবং দলের বিশৃঙ্খলা প্রতিহত করার জন্য জিল্লুর রহমানের মত প্রবীণ নেতাকে সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়ে এসেছিলেন। সেরকমভাবেই মনে করা হচ্ছে যে, যখন অনেক আলোচিত প্রার্থী থাকে সেরকম বাস্তবতায় আলোচিত নয় এমন কাউকে চমক হিসেবে নিয়ে সামনে আনা হয়, যার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠবে না। এবার সাধারণ সম্পাদক পদে অনেক নাম আলোচনা হচ্ছে এবং সকলেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে দাবিদার। এরকম একটি পরিস্থিতির কারণে দল পরিচালনা কৌশল হিসেবে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে খায়রুজ্জামান লিটন আসতে পারেন বলে অনেকেই মনে করছেন। এর পিছনে কারণ হলো একাধিক।

১. জাতীয় নেতার সন্তান: তিনি জাতীয় চার নেতার অন্যতম এ এইচ এম কামরুজ্জামানের সন্তান এবং জাতীয় চার নেতার সন্তানদের মধ্যে এখন রাজনীতিতে একমাত্র সক্রিয়। আগে জাতীয় চার নেতার সন্তানদের মধ্যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ নাসিম সক্রিয় ছিলেন এবং কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিতেন। কিন্তু এদের দুইজনের মৃত্যুর পর এখন রাজনীতিতে সক্রিয় এবং নেতৃস্থানীয় থাকা নেতা হলেন খায়রুজ্জামান লিটন। এইজন্য জাতীয় চার নেতার সন্তান হিসেবে আওয়ামী লীগে তার একটা আলাদা অবস্থান আছে।

২. অন্তপ্রাণ রাজনীতিবিদ: খায়রুজ্জামান লিটন অন্তপ্রাণ একজন রাজনীতিবিদ। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি সারা জীবন নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

৩. শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্য: খায়রুজ্জামান লিটন কখনোই শেখ হাসিনার আনুগত্যের বাইরে যাননি এবং শেখ হাসিনার আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। এটি তার একটি বড় যোগ্যতা এবং শেখ হাসিনার একান্ত বিশ্বস্ত যারা আওয়ামী লীগের মধ্যে পরিচিত তাদের অন্যতম হলেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

এছাড়াও আরেকটি বড় যোগ্যতা হলো যে, আওয়ামী লীগে তাকে নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। আওয়ামী লীগের কোন গ্রুপিং, উপদল, কোন্দল ইত্যাদি তিনি করেন না। যার ফলে এবার সাধারণ সম্পাদক পদে যদি চমক হিসেবে লিটনের নাম আসে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।