Home জাতীয় ১৯৭৭ সালে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবী

১৯৭৭ সালে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবী

36

স্টাফ রিপোটার: ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে তৎকালীন সেনা উপ প্রধান থেকে সেনা প্রধান সেনা ছাউনি ব্যবহার করে তথাকথিত রাষ্ট্রপতি জিয়া। রাষ্ট্রপতির পদ পাকাপোক্ত করতে সেনাবাহিনীর মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করার জন্য ১৭টি ক্যু করে তার একটি হল ০২ অক্টোবর ১৯৭৭। এই ক্যুর মাধ্যমে অন্যায়ভাবে শত শত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি ও জেল দেয়া হয়। ০২ অক্টোবর ৭৭ সালের ঘটনার বিচারের লক্ষে একটি তদন্ত কমিশন গঠন, ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবীতে ১৬ অক্টোবর শনিবার সকাল ১১ ঘটিকায় রাজধানীর শাহবাগ চত্তরে ক্ষতিগ্রস্থ’ পরিবারের পক্ষে ‘ফোজিত শেখ ক্রিয়েশন’ এক মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি এম এ জলিল।
প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেত আব্দুল মতিন ভুইয়া, বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজাহান আলম সাজু, মহাসচিব শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট, উত্তম কুমার বড়ূয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ।

বক্তব্য রাখেন, কাজী আরেফ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মাসুদ আহমেদ, স্বপন কুমার সাহা-ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ ন্যাপ, শিশু কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান মিন্টু,

আলহামরা নাসরীন হোসেন লুইজা চেয়ারম্যান বর্ণগ্রুপ, ডা. আব্দুল মান্নান, দেওয়ান খায়রুল ইসলাম, নকিব হক, মো. বাবুল- গণজাগরণ মঞ্চ এবং অয়ন মজিদ। এছাড়াও ১৯৭৭ সালে ভুক্তভোগী সদসদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কর্পোরাল হাফিজ আব্দুল মজুমদার, সার্জেন্ট এনামুল হক এনাম, কর্পোরাল সানাউল্লাহ, সার্জেন্ট নূরুল হক-ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার, কর্পোরাল নূরুল ইসলাম, সার্জেন্ট জসিম উদ্দিন আহমেদ, আলহাজ্ব আবুল হোসেন রাসেল, সার্জেন্ট জিসি মো. ইউনুছ মিয়া। এছাড়াও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, নিহত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের পরিবারের সদস্যবর্গ।

বক্তারা বলেন, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার নেতৃত্ব দেন জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে সেনা ছাউনি ব্যবহার করে রাষ্ট্রপতি জিয়া এই পদকে পাকাপোক্ত করার জন্য ১৭টি সেনা ক্যু ঘটিয়ে বিশেষভাবে ০২ অক্টোবর ১৯৭৭ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সেনাদের হত্যা করে, অনেককে জেলে পাঠায় এবং অনেককে গুম করে। বক্তারা ০২ অক্টোবর ৭৭ সালে ঘটনার তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আহŸান জানান- বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার কাছে এবং শিশু শেখ রাসেলের হত্যার জন্য জিয়া মোস্তাকের মরণোত্তর বিচারের দাবী জানান।

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার তদন্ত কমিশন গঠন ও রিপোর্ট প্রকাশের দাবিতে শনিবার সকাল ১১ঘটিকায় (১৬ অক্টোবর, ২০২১ইং) রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আলোকচিত্র মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশের আরও একটি কালো অধ্যায় ১৯৭৭ সালের ০২ অক্টোবর। সেদিন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কে মিথ্যা ও প্রহসনমূলক বিচারের নামে ফাঁসি দিয়ে হত্যা, লাশ গুম, কারাদণ্ড ও চাকুরিচ্যুতির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি করা হয়। সেদিনের আসল ঘটনা ও এর সাথে জড়িতদের সম্পর্কে জাতি জানতে চায়। আমরা জানতে চাই, সেদিন আসলে কী ঘটনা ঘটেছিলো, তাদেরকে কেন এবং কীভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল, তাদের কবর দেয়া হয়েছিল কিনা, হয়ে থাকলে কোথায় তাদের কবর। এসব চিহ্নিত করা এবং এসবের তালিকা করতে একটি স্বাধীন শক্তিশালী তদন্ত কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। আমরা অবশ্যই খুনিদের বিচার চাই এবং তাদের মুখোশ জাতির সামনে তুলে ধরার দাবি জানাই।

আয়োজক আলোকচিত্র শিল্পী ফোজিত শেখ বাবু বলেন- ১৯৭৭ সালে প্রহসনমূলক সেনা অভ্যুত্থানে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তারা মা মাটি দেশকে ভালোবাসেন এবং বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে ভালোবাসেন। সুতরাং এই সরকার যদি এই বিচার না করে বাংলার জমিনে কেউ এর বিচার করবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এই বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

১৯৭৭ সালের ০২ অক্টোবর বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় ২২শত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। আমরা এসব কুখ্যাত ও ঘৃণিত খুনিদের মুখোশ জাতির সামনে তুলে ধরার দাবি জানাই। সেই সাথে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট আবেদন জানাই।