Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ১৫% কর প্রত্যাহারের দাবিতে নো ভ্যাট এডুকেশনের আলোচনা সভা

১৫% কর প্রত্যাহারের দাবিতে নো ভ্যাট এডুকেশনের আলোচনা সভা

62

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি কলেজ সমূহের উপর আরোপিত ১৫% কর প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল শুক্রবার রাতে নো ভ্যাট এডুকেশনের” চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় উন্মুক্ত মতবিনিময় সভা (ভার্চুয়াল) অনুষ্ঠিত হয়।  উন্মুক্ত মতবিনিময় সভায় (ভার্চুয়াল) আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকি, পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম অধ্যাপক ড. গণেশ চন্দ্র রায়, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ আকমল হোসেন, ২০১৫ সালের ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আরেফিন মাহমুদুল হাসান ধ্রুব। নো ভ্যাট এডুকেশনের সংগঠক মুক্ত রেজোয়ান সঞ্চালনাকালে বলেন, বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্হাকে পণ্যে রূপান্তর করার যে অপচেষ্টা তা রুখে দিয়ে ২০১৫ সালে সরকারকে ভ্যাট প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছিলাম। এবারো পূর্বের মতোই আমরা বলতে চাই, শুধু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় যেখানেই শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তর করার নূন্যতম চেষ্টা চলবে সেখানেই “নো ভ্যাট অন এডুকেশন” প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এ স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ রয়েছে ” বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে। যদি তাই হয় তবে কি করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের মালিক পক্ষ মুনাফা অর্জন করে? ২০১০ সালের আইন অনুযায়ী বলা চলে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মালিক পক্ষ যে মুনাফা অর্জন করছে তা সম্পূর্ণ রূপে অবৈধ। গতকালের প্রস্তাবিত ১৫% করের মাধ্যমে সরকার ঐ অবৈধ মুনাফা অর্জনের সুযোগ করে দিচ্ছে এবং অবৈধ মুনাফাকে বৈধ করার চেষ্টা করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি শিক্ষাখাতে প্রস্তাবিত বাজেট বিগত বাজেটের মোট জিডিপির তুলনায় ০.০৩৬% কমেছে। এই বাজেট কোনভাবেই শিক্ষাবান্ধব বাজেট হতে পারেনা । স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকি বলেন, শিক্ষা কোনো ব্যবসা নয়। এটি সামাজিক সেবা। এখানে কর আরোপ অযৌক্তিক। এছাড়া আইনও সেটি সমর্থন করে না। এটি চালু হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুরোপুরি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপ নেবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার মান।পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম অধ্যাপক ড. গণেশ চন্দ্র রায় বলেন, ২০১৫ সালে সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তা প্রত্যাহার করা হয়। ওই সময় সরকারের যুক্তি ছিল, আরোপিত ভ্যাট মালিককে দিতে হবে। আমার প্রশ্ন হলো, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখানে তো লাভ হওয়ার কথা নয়। তাহলে কর দেবে কোথা থেকে? এটি সাংঘর্ষিক হবে। শেষ পর্যন্ত এটি শিক্ষার্থীদের ওপর বর্তাবে এবং বেসরকারি পর্যায়ে শিক্ষার ব্যয় আরও বাড়বে। লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ আকমল হোসেন বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ সমূহের কর্তৃপক্ষ করের অর্থ মূলত শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করে নেয়া হবে। কারণ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের একমাত্র উৎস হচ্ছে টিউশন ফি।অথবা প্রতিষ্ঠানগুলো আগের চেয়ে কম সেবা প্রদান করবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীদের একটা বিপুল অংশ। শেষ পর্যন্ত অভিভাবকদের উপরেই করের বোঝা এসে পরবে। পরিণামে উচ্চ শিক্ষায় ঝরে যাবে অনেক সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থী। ২০১৫ সালের ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আরেফিন মাহমুদুল হাসান ধ্রুব বলেন, এমন অন্যায্য সিদ্ধান্ত অতীতেও ছাত্রসমাজ মেনে নেয়নি, এখনো তারা মেনে নিবে না। শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ করার কোনো পাঁয়তারা করা হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। শিক্ষার্থীরা ক্ষোভের সাথে বলেন, শিক্ষা খাতের সাথে বিভিন্ন খাত যোগ করে জনগণের চোখে ধুলা দেয়া হচ্ছে। দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। বাড়তি বিভিন্ন খাতের সাথে শিক্ষা খাতকে সংযোগ করে জনগণের চোখে ধুলা দেয়া হচ্ছে। উন্মুক্ত আলোচনা সভাতে ফেইসবুক লাইভের মাধ্যমে কমেন্ট করার মধ্য দিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নানা সংকট ও সমস্যা নিয়ে কথা তুলে ধরেন ।