Home সারাদেশ হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ : প্রশাসন নীরব

হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ : প্রশাসন নীরব

27

দৌলতপুরে এমপির বাড়ীর নীচে পদ্মা নদীতে অবাঁধে অবৈধভাবে প্রভাবশালী মহলের বালি উত্তোলন

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্’র বাড়ী থেকে মাত্র একহাজার গজ দুরে অবস্থিত পদ্মা নদী থেকে অবাঁধে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের মহা উৎসবে মেতেছে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা। এতে হুমকির মুখে পড়ছে সরকারের শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মাপাড়ের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর কামারপাড়ার নীচে অবাঁধে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হলেও প্রশাস রয়েছে নীরব।
এলাবাসীরা জানান, এমপি’র বাড়ীর পাশে পদ্মা নদী থেকে ফিলিপনগর গ্রামের সোহেল রানা ওরুফে রসুন রানা, মাহাবুব মাষ্টার, আব্দুর রশিদ, কালাম মেম্বার (সাবেক), শিপন সবজি সহ ক্ষমতাশীল দলের স্থানীয় নেতা কর্মীরা মিলেমিশে পদ্মা নদী থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১’শ থেকে ১৫০’শ ট্রলি বালি উত্তোলন করছে। এতেকরে হুমকির মুখে পড়েছে মহিষকুন্ডি-রায়টা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। অবৈধভাবে বালি উত্তোলনকারীরা এমপি’র আস্থাভাজন ও সরকার দলীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ও প্রতিবাদ করার সাহস করেনা কেউ। ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, এমপি’র নিকটজন ও ক্ষমতাশীল দলের প্রভাবশালী নেতা মাহাবুব মাষ্টার ও রসুন রানা পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
এভাবে পদ্মা নদী থেকে অবাঁধে ও অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করা হলে বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে ব্লক দিয়ে নির্মাণ করা ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর থেকে ফিলিপনগর পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ আগামী বন্যা মৌসুমে ধ্বসে পড়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। ফলে শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন পদ্মার ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারানো ভূক্তভোগী পদ্মাপাড়ের মানুষ। প্রশাসনের কাছে তাদের দাবী অবিলম্বে বন্ধ করা হোক অবৈধ বালি উত্তোলন।
এদিকে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে মাহাবুব মাষ্টার বলেন, রসুন রানা জড়িত থাকতে পারে, এরসাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
অপরদিকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সাথে জড়িত সোহেল রানা ওরুফে রসুন রানার সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
পদ্মা নদীর বাঁধের নীচে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাঈম উদ্দিন সেন্টু বলেন, পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে এটা ঠিক। তবে কে বা কারা কোন ক্ষমতার জোরে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বালি উত্তোলনের বিষয়ে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্’র সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা আমি ইউএনও কে বলেছি, ওসি কে বলেছি। তিনি আরোও বলেন, আমি একদিনের জন্য বাড়ী গিয়েছিলাম, দুইটা জায়গা একটা বৈরাগীচর আর একটি আবেদের ঘাটের নীচে এই দুইটা জায়গায় শুনেছি আমি, রাতের অন্ধকারে তুলে এগুলো। দিনের আলোতে বালি উত্তোন করা হয় এটা আপনি জানেন কিনা? কিংবা বালি উত্তোলন বন্ধে আপনার পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে এমপি বলেন, পদক্ষেপ হিসেবে বার বার নিষেধ করা হয়েছে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কোন প্রয়োজন নাই, এটা আমাদের নোটিশের বাইরে বলে জানান তিনি।
পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল জব্বার বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। তবে বালি উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন তিনি।