Home সারাদেশ সুন্দরবন উপকূলে জালে ধরা ভোল মাছের দাম সাড়ে ১৮ লাখ টাকা

সুন্দরবন উপকূলে জালে ধরা ভোল মাছের দাম সাড়ে ১৮ লাখ টাকা

21

মোংলা থেকে মোঃ নূর আলমঃ বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন উপকূলে জালে ধরা পড়া দুটি ভোল মাছ বিক্রি হয়েছে সাড়ে ১৮ লাখ টাকা। ফারুক নামের এক জেলের জালে ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ধরা পড়ে বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক দাঁতিনা ভোল মাছ দুটি। ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে ৬৩ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের এ মাছ দুইটির মূল্য উঠেছে হয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের “মেসার্স জয়মনি ফিস” আড়ৎ মালিক আল আমিন এই দুটি মাছ ক্রয় করে মোংলায় নিয়ে আসে। জেলে ফারুকের জালে মাছ দুটি ধরা পড়ে গত শুক্রবার রাতে। মাছ দুটি এক নজর দেখতে মোংলা মাছ বাজারের উৎসুক লোকজন ভিড় জমায়। গত বছর অক্টোবরের প্রথম দিকে ৫ মাসের জন্য বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরের আলোরকোলসহ পাঁচটি চারাঞ্চলে শুটকীর তৈরীর জন্য মাছ আহরণে যান মোংলার জয়মনির ঘোল এলাকার জেলে ফারুক হোসেন। মৌশুম এখন শেষ পর্যায়, তাই এতো দিন ফারুক হোসেন’র জালে তেমন কোন বড় মাছ না পেলেও বৃহস্পতিবার রাতে সাগরের গহীনে মাছ ধরতে গেলে তার জালে দুইটি বড় আকারের বিরল প্রজাতির দাতিনা ভোল মাছ ধরা পড়ে। শেষ রাতে সাগর থেকে এসে সেটি কিনারে নিয়ে সাগর পাড় দুবলার চরে মৎস্য আড়তে নিলামে উঠানো হয়।ওই নিলামে ২০ থেকে ২৫ জন দরদাতার মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা মোংলা বাজারের মাছ ব্যাবসায়ী আল আমিন মাছ দুইটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনে নেয়। তার মধ্যে বড় মাছটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম, দাম হাকা হয় ১১ লাখ এবং ছোট আকারের মাছটির ওজন হয় ২৭ কেজি, দাম ধরা হয়েছে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক এ মাছ দুটির প্রতি কেজি মাছের মূল্য পড়েছে ২৯ হাজার ১শ’ ৩৩ টাকা। ব্যবসায়ী আল আমিন মাছ দুটি সঠিক পদ্ধতিতে প্রসেসিং ও প্যাকেটজাত করে চট্রগ্রামের মাছের বড় বাজারে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় “জয়মনি ফিস” আড়ৎ মালিকরা। তবে শুধু মাত্র মাছের মুল্য যে এতোটা তা নয়, এ মাছের মধ্যে বিশেষ ধরণের ফুলকী বা প্যাটা রয়েছে, যার মুল্য কেজি প্রতি প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা। আর এ ধরণের মাছ যেমন দাতিনা, কইয়া ভোল, দাতিনা ভোল, লাল ভোল ও জাবা মাছের ফুলকী বহু মুল্যবান বলে জানায় মাছ ব্যাবসায়ীরা।

মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও মৎস্য সমবায় সমিতি সভাপতি মোঃ আফজাল ফরাজী বলেন দাতিনা ভোল মাছটি এ অঞ্চলে খুবই কম পাওয়ায় যায়। মোাংলা পশুর নদী বা সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে আগে দুই-একটি মাছ পাওয়া গেলেও এখন কিছু দুর্বৃত্ত সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ মারার ফলে এদিকে এখন আর এ মুল্যবান মাছ পাওয়া যায় না। মূলত এ মাছের ফুলকী-প্যাটা ও বালিশের কারণে দাম প্রচুর বেশি। এই মাছের প্যাটা ও বালিশ বিদেশে রপ্তানী হয় এবং এ দিয়ে নাকি মেডিসিন তৈরি করা হয় বলে জানায় সমিতির এ নেতা। দীর্ঘ ১০ বছরেও বিরল প্রজাাতির দাতিনা ভোল মাছ মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আসেনি। তবে দুবলার চর থেকে ক্রয় করা এ মাছ দুটি চট্রগ্রামে আরো বেশী দামে বিক্রি হবে বলে জানায় ব্যাবসায়ীদের।