Home কৃষি সিডিএ’র সহায়তায় কেঁচো সার উৎপাদন করে লাখ টাকা আয়

সিডিএ’র সহায়তায় কেঁচো সার উৎপাদন করে লাখ টাকা আয়

56

আব্দুল্লাহ আল নোমান,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: কেঁচো সার উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কৃষাণীরা। সফলতা পাওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বীও হয়েছেন অর্ধ শতাধিক কৃষাণী । সারের গুণগত মান ভালো হওয়ায় স্থানীয় কৃষক ও নিজেদের চাহিদা পূরণ করে এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের চাহিদা পূরণ করছে তাদের উৎপাদিত কেঁচো সার। বর্তমানে সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে একেক পরিবারে পনেরশো থেকে ২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে বলে জানা গেছে।

কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন (সিডিএ) দিনাজপুর এর আর্থিক সহায়তায় উপেজেলার গাংগুয়া জৈব কৃষি চর্চা নারী উন্নয়ন জনসংগঠনের ৩৬ জন নারীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গত বছর এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এ সংগঠনের সহায়তায় গড়ে তোলা হয়েছে কেঁচো সার তৈরির শেড। বাড়ির কাজ শেষ করে অবসর সময়ে এটা নিয়েই ওই নারীদের ব্যস্ততা পূর্ন সময় কাটে। কারণ কেঁচো সার উৎপাদন ও বিপণনে তাদের সংসারে এনেছে স্বচ্ছলতা।

জনসংগঠনের সদস্য হাজেরা জানান, সিডিএ’র সহযোগিতায় গত বছর আমরা ২০ হাউস তৈরি করি। এ শেড থেকে যে সার উৎপাদন হয় সে সার আমরা ১২-১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। এ পর্যন্ত আমরা এই শেড থেকে লক্ষাধিক টাকার অধিক কেঁচো সার বিক্রি করেছি।

আশরাফি নামের আরেক সদস্য জানান, এর আগে আমরা বাড়িতে স্লাবে এ সার উৎপাদন করতাম । এখন বাড়িতে না করে আমরা আমাদের সংগঠনের সদস্যরা একত্রিত হয়ে এ শেডের ভিতরে জৈব সার উৎপাদন করছি এবং আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছি।

পয়গাম আলী নামের এক সদস্য জানান, শেডের ভিতরে অর্থাৎ বাড়িতে কেঁচো সার উৎপাদন যেমন সহজ তেমনি এর চাহিদাও বেশি। এ কাজ থেকে বিনা ঝামেলায় অতিরিক্ত আয় হয়, পাশাপাশি নিজেদের জমিতেও ব্যবহার করছি এ সার। এর সার ব্যবহারের চাহিদা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো জানান, বে- সরকারি উন্নয়ন সংস্থার পাশাপশি কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে আমরা অনেক দুর এগিয়ে যাব।

সিডিএ’র মহলবাড়ি ইউনিট ব্যবস্থাপক আহসান হাবিব বলেন, ‘উচ্ছিষ্ট, গোবর, তরকারির খোসাসহ আবর্জনা দিয়ে কেঁচোর মাধ্যমে প্রক্রিয়া করে আদর্শ ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করা হয়। এগুলো ফসলের জন্য খুবই উপকারী। গত বছর আমরা আমাদের এনজিও থেকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে এই জনসংগঠনের সদস্যদের এ টিনের শেডে ২০টি হাউস তৈরি করে দিই। এখন তারা এখান থেকে সার উৎপাদনের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে আর্থিকভাবে ভালোই স্বাবলম্বী হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, স্থানীয় কৃষকদের মাঝে কেঁচো সারের চাহিদা অনেক বেশি। কেঁচো সার উৎপাদনে বিভিন্ন সংগঠনের নারীদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। বিভিন্ন সেমিনার ও উঠান বৈঠকে আমরা কৃষকদের জৈব সার ব্যবহারে এবং কৃষকদের রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে কম্পোস্ট সারের ব্যবহার বাড়াতে পরামর্শ দিয়ে থাকি।