Home সারাদেশ সাংবাদিক নাদিম হত্যা ঘটনায় র‍্যাব-পুলিশের হাতে গ্রেফতার ১৫

সাংবাদিক নাদিম হত্যা ঘটনায় র‍্যাব-পুলিশের হাতে গ্রেফতার ১৫

20

বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ রুবেল মিয়া: জামালপুরের বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা ঘটনায় থানায় ২২ জনের বিরদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পরিবার । এদিকে শনিবার সকালে পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তী দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের চরতিস্তাপাড়া বোনের বাড়ী থেকে বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু, মনিরুজ্জামান মনির @মনিরুল,জাকিরুল ইসলাম ও সন্ধ্যায় বগুড়া থেকে রেজাউলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

তবে সাদুরপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য আনোয়ার হোসেনের ছেলে গোলাম কিবরিয়া সুমন (৪০), বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার নামাপাড়া গ্রামের মরহুম জফিরুল হকের ছেলে মো: তোফাজ্জল (৪০), মরহুম আজিজুল এর ছেলে মো: আইনাল হক (৫৫), সাদুরপাড়া ইউনিয়ন বালুর গ্রাম মরহুম বাচ্চু খার ছেলে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: কফিল উদ্দিন (৫৫), দক্ষিণ কুতুবের চর এলাকার সিরাজের ছেলে ফজলু(৩৫),শহীদ, মালিরচর নয়াপাড়ার মো. মিলন (২৫), মোল্লাপাড়ার মসজিদ পাড়ার মো. মকবুল (৩৫), সরদার পাড়ার মেরুরচরের মো. ওহিদুজ্জামান (৩০) সহ ১১ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে এবং অন্য ২ আসামীকে নিয়ে বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে শনিবার (১৭ জুন) রাত ৯ টায় নিশ্চিত করেছেন জামালপুর পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ।

শনিবার বিকালে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আসামিদের হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয় বলে জানান আদালত পরিদর্শক মো. মফিজ উদ্দিন। পরে বিচারক তানভীর আহমেদ রিমান্ডের শুনানির জন্য রোববার দিন রাখেন আর আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে জানান পরিদর্শক।

কথা হলে জামালপুর সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে জানান , সাংবাদিক নাদিমের হত্যাকান্ডটি পৈশাচিক এবং নারকীয়। আমরা ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তিন দিন টানা অভিযান চালিয়ে ১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।

ইতিমধ্যেই ভিকটিমের স্ত্রী ২২ জনকে আসামি করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে। আমরা অন্যান্য আসামিদেরও খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।

আমাদের প্রতিটা টিম এখনও নিরলস ভাবে আসামি গ্রেফতার এ কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে শনিবার (১৭ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, র‌্যাবের অভিযানে মাহমুদুল আলম ওরফে বাবু (৫০), মো. মনিরুজ্জামান মনির ওরফে মনিরুল (৩৫), জাকিরুল ইসলাম (৩১) ও মো. রেজাউল করিম (২৬) নামে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যার আসামি। বাকী ৩ জন বাবুর সন্ত্রাসী গ্রুপের অন্যতম সহযোগী।

ঘটনার দিন রেজাউল দৌড়ে গিয়ে নাদিমকে ধাক্কা দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলেই বাবুর নির্দেশে তারা নাদিমকে বেদম প্রহার করতে থাকে। চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর পরিকল্পনাতেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

জানা যায় , গত বুধবার (১৪ মে) রাত ১০টার দিকে জামালপুরের বকশীগঞ্জের পাটহাটি মোড় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে মোটরসাইকেল থামিয়ে কিলঘুষি মারা হয় বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির উপজেলা প্রতিনিধি নাদিমকে । এ সময় তাকে টেনেহেঁচড়ে রাস্তার অপর প্রান্তে নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায় অপরাধীরা।

ঘটনার সময় ওই গলিতে অন্ধকারে আড়ালে দাঁড়িয়েছিলেন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবু। সেসময় তার ছেলে ফয়সাল, রিফাত, রেজাউল, মনির, সাইদসহ আরও কয়েকজন ছিলেন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে বকশীগন্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাদিমকে জামালপুর হাসপাতালে প্রেরণ করেন । জামালপুর হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থার অবনতি দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় ।

পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকালে তিনি মারা যান। ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন বাবু। শুক্রবার (১৬ জুন) সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে বাবুকে বহিষ্কার করা হয় ।

আরো জানা যায় , সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই হুমকি পাচ্ছিলেন সাংবাদিক নাদিম। তিনিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন চেয়ারম্যান। যদিও সেই মামলা খারিজ করে দেয় আদালত।