Home জাতীয় সর্বাত্মক রেশনিং-এর ব্যবস্থা চালু করার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান

সর্বাত্মক রেশনিং-এর ব্যবস্থা চালু করার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান

28

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে উল্লেখিত দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি প্রকাশ দত্ত। পরিচালনা করেন যুগ্ম সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টিটু। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বেলায়েত হোসেন নয়ন, সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিক্সা চালক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক শেখ হানিফ, যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা পোশাক প্রস্তুতকারক শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম মানিক, পাদুকা শিল্প শ্রমিক সংঘের আহ্বায়ক ইসহাক আলী প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ বলেন সাম্রাজ্যবাদী লগ্নিপুঁজি ও এদেশীয় দালাল পুঁজির বেপরোয়া মুনাফার স্বার্থে সরকার জাতীয় মজুরি কমিশন গঠন ও জাতীয় নিম্নতম মজুরি ঘোষণার কার্যকরী কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। নিম্নতম মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরে ঘোষিত মজুরির ক্ষেত্রেও সরকার মালিকদের চাওয়া বাস্তবায়ন করে চলেছে। আবার মজুরি ঘোষিত হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন করে না মালিক পক্ষ। তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে হোটেল সেক্টর। দেশ আজ শ্রমিকের শ্রম শোষণে কয়েদখানায় পরিণত হয়েছে। যার জলজ্যান্ত প্রমাণ হচ্ছে পাদুকা শিল্প সেক্টর। এখানে কখনো কখনো সকাল ৯ টায় কাজ শুরু করে পরের দিন সকাল ১০টায় তা শেষ করতে হয়। যা দাস যুগকেও হার মানাচ্ছে।
বক্তাগণ আরো বলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম লাগামহীনভাবে অব্যাহত গতিতে বেড়ে চলায় যখন প্রয়োজন ঘোষিত মজুরি পর্যালোচনা করে শ্রমিকদের রক্ষায় নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা, ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত মহার্ঘ্যভাতা প্রদান এবং রেশনিং-এর ব্যবস্থা করা। তখন সরকারের মালিক তোষণনীতির কারণে এই সকল আইন স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত বিষয়গুলোকে পাশ কাটিয়ে সরকার চলেছে। আজ শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে অনিরাপদ, চাকরির ক্ষেত্রে অনিশ্চিত, প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের সাথে আসছে লাশের সারি, বাজারদরের সাথে টিকতে না পারায় সন্তানের লেখা-পড়া বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় নামমাত্র চিকিৎসা টুকুও নিতে পারছে না, একজনের পরিবর্তে আজ বৌ-বাচ্চা মিলে কাজ করেও সংসার চালাতে পারছে না। এই বাস্তব চিত্রকে আড়াল করে বিদেশী প্রভুর পূজা আর তাদেরই স্বার্থের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গাল ভরা বুলি আউড়িয়ে চলেছে এদেশের সরকার। একইসাথে শ্রমিক অঙ্গনে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং দলীয় সন্ত্রাসের পাশাপাশি আন্দোলনরত শ্রমিক ও নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে চলেছে। আজ প্রয়োজন শ্রমিক শ্রেণির স্বীয় স্বার্থে জাতীয় মজুরি, বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে নিম্নতম মজুরি, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন ও সরকারের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলা। পাশাপাশি শ্রমিক অঙ্গনে ক্রিয়াশীল সাম্রাজ্যবাদী সংস্থা, এনজিও, দালাল নেতৃত্বের স্বরুপ উন্মোচন করা।
সবশেষে সভাপতির বক্তৃতায় ধারাবাহিক সংগ্রাম আর ধর্মঘটের পথে দাবি আদায়ের স্বীকৃত পথে শ্রমিক শ্রেণিকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সমাবেশ শেষ হয়।