Home রাজনীতি সরকারের দুঃশাসন ও দুর্নীতির কারণেই ভিসা নীতি ও স্যাংশন : ফখরুল

সরকারের দুঃশাসন ও দুর্নীতির কারণেই ভিসা নীতি ও স্যাংশন : ফখরুল

26

স্টাফ রিপোটার: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকা আমাদের ওপর ভিসা নীতি দেয়, স্যাংশন দেয়। এটা আমাদের জন্য আনন্দের নয়, লজ্জার কথা। স্বাধীন সার্বভৌমত্ব একটি রাষ্ট্রে অন্য দেশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। শুধুমাত্র সেই দেশের সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতির কারণে। তাদের দুর্বৃত্তায়নের কারণে। এটা আমেরিকা দিয়েছে গণতন্ত্র ফিরে আনার লক্ষ্যে।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে “বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র বাংলাদেশের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার আগে এই দেশে এক দলীয় বাকশাল কায়েম হয়েছিল। সমস্ত দলগুলোকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। দেশের সমস্ত পত্রিকা গুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সরকার নিয়ন্ত্রিত শুধুমাত্র চারটি পত্রিকা রেখেছিল। মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মানুষের মত প্রকাশের সিদ্ধান্ত, মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার এই জিনিসগুলো নিয়েই বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার যে দর্শন বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ তা তিনি এনেছিলেন। জিয়াউর রহমান বলেছিলেন ‘গণতন্ত্রকে যদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায়, তাহলে রাজনীতিতে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল পাওয়া যায়’।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ শুরু করেছিলেন। গ্রাম সরকার, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। উদ্দেশ্যই তার হচ্ছে, জনগণকে ক্ষমতায়িত করা। আজকের এই অবস্থানের ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান কিন্তু অত্যান্ত প্রাসঙ্গিক।

“যখন পাকিস্তানি সৈন্যরা এদেশের মানুষের উপরে নির্মম অত্যাচার বর্বরতা শুরু করল, তখন দেশের জনগণ দিশেহারা হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতৃত্ব তখন ব্যর্থ হয়েছিল সুনির্দিষ্ট পর্যায়ে গিয়ে। সেদিন কিন্তু পথ দেখিয়েছিলেন একজন সৈনিক। একজন অখ্যাত মেজর। আমি এখানে কাউকে ছোট করতে চাইনি। কিন্তু জিয়াউর রহমানকেতো অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। তিনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। ইট ইজ ট্রুথ। এটাতো ধ্রুব তারার মত। এটা মিথ্যা বলে কিভাবে? তাকে কিভাবে মন থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করে।”

তিনি বলেন, দেশে যখন সামরিক শাসন আসলো, যখন গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হলো, স্বৈরাচারী এসে গেল, তখন কিন্তু তারই উত্তরসূরী, একজন গৃহবধু জাতীয়বাদের পতাকা, বাংলাদেশের পতাকা, শহীদ জিয়ার সেই আদর্শ পতাকা নিয়েই মাঠে-ঘাটে বেরিয়ে পড়েছিলেন। দীর্ঘ নয় বছর লড়াই সংগ্রাম করেছিলেন। তিনি সফল হয়েছিলেন গণতন্ত্রকে আবার ফিরে নিয়েছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, এ দেশে রাজনৈতিক দলের দাবিতে আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এনেছিলেন। কিন্তু ২০০৯ সালে এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ২০১২ সালে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। আদালত বলেছিলেন, আরো দু বার এই ব্যাবস্থায় ভোট করা যেতে পারে। কিন্তু তারা তা গায়ের জোরে বাতিল করেছে। এককভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য, এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। সেদিন কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন প্রেস কনফারেন্সে , “এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের মধ্য দিয়ে দেশে দীর্ঘ স্থায়ীভাবে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতার জন্ম দেয়া হলো”। তা প্রমাণিত হয়েছে প্রতিটা নির্বাচনের পূর্বে আমাদেরকে লড়াই করতে হয়। কিভাবে নির্বাচনে যাব নির্বাচনে যাব কিনা।

তিনি বলেন, আজকে এমন একটা অবস্থায় পৌঁছে গেছে আওয়ামী লীগ, তারা সম্পূর্ণভাবে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জনগণের আশে পাশে তারা নেই। জোড় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারা সমস্ত সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা ও সেমিনার কমিটি আহবায়ক মোঃ ইসমাইল জবিউল্লাহ’র সভাপতিত্বে ও বিএনপি প্রচার সম্পাদক ও সেমিনার কমিটি সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় এতে বিএনপির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।