Home রাজনীতি সমাবেশের একটাই লক্ষ্য হাসিনার পতন: মির্জা ফকরুল

সমাবেশের একটাই লক্ষ্য হাসিনার পতন: মির্জা ফকরুল

20

রংপুর অফিস: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সমাবেশের একটাই লক্ষ্য হাসিনার পতন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। নির্বাচনের পরে সকল দল নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা। শনিবার ( ২৯ অক্টোবর) রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তেব্য তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত। ব্যবসা বাণিজ্য কোথাও স্বস্তি নেই। বিশ্ব জেনে গেছে মানবাধিকার নিয়ে এই সরকার মিথ্যাচার করে। সমাবেশ দেখে সরকার ভয় পেয়েছে। ভয় না পেলে গাড়ি বন্ধ করে দিত না। এই সমাবেশের ওপর বিশ্ব মিডিয়া গুরুত্ব দিয়েছে। সমাবেশের একটাই লক্ষ্য হাসিনার পদত্যাগ। দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও জনগণের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। যা ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল। শেখ হাসিনা ও এই বিনা ভোটের সরকার সেই চেতনা ধ্বংস করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার নাকি জনগণকে ভয় পায় না তাহলে দুইদিন আগে গাড়ি বন্ধ করল কেন? বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই জেগে উঠবে এবং এই ভয়াবহ একনায়ক হাসিনা সরকারের পতন ঘটাবে। এই সমাবেশের একটাই কারণ। একজন মাত্র ব্যক্তি, একটামাত্র দল গত ১৫ বছর ধরে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করছে। বিএনপির ওপর নির্যাতন করছে। আমাদের সমস্ত দেশটাকে তারা কুঁলে কুঁরে খেয়ে ফেলছে।

ফখরুল বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম কেন হাসিনার এই বাংলাদেশে দেখার জন্য? আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম একটি স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবো সেজন্য। এখন কি আমরা ভোট দিতে পারি? আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে। এর আগে ’১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করেছে। আমরা সেই নির্বাচন বাংলাদেশে হতে দেব না।

নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সোজা কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া শেখ হাসিনার অধীনে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না; সাফ কথা। আমাদের একটাই দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমাদের দাবি সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, তাদের মাধ্যমেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোট হবে এবং জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।

আওয়ামী লীগ সরকার বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। এখন কি ঘরে ঘরে চাকরি আছে? চাকরি দিয়েছে? আওয়ামী লীগের লোক হলে চাকরি দেয়। ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিলে চাকরি হয়। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। তাই এই ঘুষখোর, এই ভোট চোরদের আর মানুষ দেখতে চায় না।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন আবার নতুন একটি ধুয়া তুলছে। জঙ্গিবাদ আবার বাংলাদেশের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এটা হচ্ছে আরেকটি চক্রান্ত। বলেছে যারা অগ্নিসংযোগ করেছে জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত তাদের রেহাই দেয়া হবে না। ওই অস্ত্র আপনাদের ভোঁতা হয়ে গেছে। ওই অস্ত্র আর চলবে না। আপনাদের আসল চেহারা সকলেই জেনে গেছে। পৃথিবীর মানুষ জেনে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকা তাদের রিপোর্টে লিখেছে এই সরকার যা বলে মিথ্যে বলে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার মানবাধিকার সম্পর্কে যে সকল রিপোর্ট দেয় তা মিথ্যে। এখানে মানবাধিকার নেই। মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে কথা বলতে দেয় না। নির্বাচনের পূর্বে সভা করতে দেয় না, নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয় না। কথায় কথায় হকিস্টিক, রামদা, আর বন্দুক নিয়ে আসে।

ফখরুল বলেন, আর এভাবে চলতে দেবে না এদেশের মানুষ। দেশের মানুষ এখন রুখে দেবে। ওই বন্দুক, ওই পিস্তল, ওই লাঠি, ওই হকিস্টিক সব ভেঙ্গে চুরমার করে দেবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির ভিত বাংলাদেশের জনগণ। আওয়ামী লীগের জনগণ নাই। তাই তারা সন্ত্রাসী ভাষায় কথা বলে। আগে হরতাল দিত বিরোধী দল। এখন হরতাল দেয় সরকারি দল। আগে সরকারি দলকে মোকাবিলা করতো বিরোধী দল। এখন বিরোধী দলকে মোকাবিলা করে সরকারি দল। রংপুরের সমাবেশ দেখে মনে হচ্ছে এখন এটা আর আন্দোলন নয়। এখন এটা বিপ্লব। শেখ হাসিনা দেশে দুর্ভিক্ষ দেখছেন। দুর্ভিক্ষ আসার আগেই হাসিনাকে বিদায় করা হবে।