Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের সভাপতিকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র

শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের সভাপতিকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র

37

স্টাফ রিপোটার: রাজধানীর টিকাটুলির ঐহিত্যবাহী শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয় নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। মাস্টার রোলে নিয়োগপ্রাপ্ত খন্ডকালীন কতিপয় শিক্ষকদের দাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মৃতিবিড়জিত এ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষক ষড়যন্ত্র করে বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি ও অধ্যক্ষসহ বেশিরভাগ শিক্ষকদের জিম্মি করে ইচ্ছেমত কলেজ পরিচালনা করতে চাচ্ছে। তাদের নানা ষড়যন্ত্রের বলি হয়ে ইতিমধ্যেই গভর্নিং বডির সভাপতি মো: রিয়াজ উদ্দিন তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। ওই কলেজে কর্মরত একাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও গভর্নিং বডির সদস্যদের সাথে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষক হামিদা খাতুন, নাসরিন সুলতানা, নুসরাত জাহান এবং মাস্টার রোলে নিযুক্ত বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক আকলিমা আকতার, সৈয়দা
মেহনাজ নাইয়ারাকে দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্রেণিতে নিয়মিত ফলাফল খারাপ হওয়ায় সতর্কও করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরাও অভিযোগ করেন। কোচিং বাণিজ্যের কারণে ইংরেজি শিক্ষক না হয়েও তিনি জোর করে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ে পাঠদানে বাধ্য করতেন। কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটুক্তি করার প্রতিবাদে ২০২১ সালে শিক্ষক-শিক্ষর্থীরা মানববন্ধন করলেও মেহনাজ তাতে ইচ্ছাকৃতভাবে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের যোগফল ভুল করে গতবছর একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ বঞ্চিত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

খন্ডকালীন আরেক শিক্ষক রেখামন্ডল সরকারি নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষার্থীদের প্রায়শ শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এজন্য একাধিকবার তাকে সতর্ক করে কমিটি।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, রিয়াজউদ্দিন দায়িত্ব নেয়ার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ছিলো ২ হাজারের মত। বর্তমানে তা প্রায় তিন হাজারে দাঁড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে এসএসসি ও এইচএসসির কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এছাড়া তিনি ডিবেটিং ক্লাব, কারাতে প্রশিক্ষণ, হ্যান্ডবল, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও পুরো ক্যাম্পাসকে সিসি টিভির আওতায় আনয়নসহ নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড করেছেন। তার প্রচেষ্টায় কলেজের ৬ কোটি টাকার ফান্ড দেড় বছরে আড়াই কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে ৮ কোটিতে দাঁড়ায়। ইতিমধ্যেই কলেজে জাতির পিতার মুর‌্যালও স্থাপন করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাথমিক শাখার একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, রিয়াজ উদ্দিন স্যার কেন পদত্যাগ করেছেন সেটা আমার জানা নেই। তবে তার বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগের কথা বলা হয় তাহলে বলবো সবই মিথ্যাচার। একটা ভুতুড়ে পরিবেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মাত্র দেড় বছরে আলোকোজ্জ্বল করেছেন তিনি। আমাদের কিছু শিক্ষক আছেন তারা বিদ্যালয় চলাকালে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কোচিং বাণিজ্য করতেন। স্কুল চলাকালে বিনানুমতিতে বাসায় চলে আসতেন। রিয়াজ স্যার এসব অনিয়ম বন্ধ করেছেন। এ কারণে শিক্ষকদের ওই অংশ ক্ষুব্ধ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারে। যদি কোন অভিযোগ হয় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো সঠিক তদন্ত করুন। তদন্ত করলে সত্যটা বেরিয়ে আসবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যাপীঠ হিসেবে এর উন্নয়নে মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করেছি। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠসহ সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়ন করেছি। সুউচ্চ ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশাপাশি এখানে এসএসসি ও এইচএসসি কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। ফলাফল আগের তুলনায় ভালো হয়েছে। শিক্ষকদের সময়মত উপস্থিতি ও সময়মত বিদ্যালয়ে ত্যাগ নিশ্চিতকরণসহ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে, কতিপয় শিক্ষক এই শৃঙ্খলা মানতে চায় না তারা ইচ্ছেমত আসে আবার চলে যায়। শিক্ষার্থীদের স্কুল সময়ে বাইরে কোচিং বাণিজ্য করে। এই কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার কারণে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে বাইরের কিছু লোকের প্ররোচনায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আমি স্বেচ্ছায় সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। আমি নিশ্চিত তদন্তে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হবো।