Home সাহিত্য ও বিনোদন শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শিশুতোষ গীতি আলেখ্য ‘ওরা অকারণে চঞ্চল’ অনুষ্ঠিত

শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শিশুতোষ গীতি আলেখ্য ‘ওরা অকারণে চঞ্চল’ অনুষ্ঠিত

83

স্টাফ রিপোটার: বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শিশুশিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে গীতি আলেখ্য ‘ওরা অকারণে চঞ্চল’। বাংলা সাহিত্যের প্রধানতম লেখকদের মধ্যে অন্যতম পাঁচজন কবি যাঁরা গান ও সুরে বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করেছেন তাদেঁর রচিত কিছু গান ও গানের সাথে নৃত্য দিয়ে সাজানো হয় শিশুতোষ গীতি আলেখ্য ‘ওরা অকারণে চঞ্চল’। আজ ২০ জুন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ও প্রযোজনা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় গীতিআলেখ্য পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে।
পরে শিশুদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও শিশুবন্ধু জনাব লিয়াকত আলী লাকী। তিনি বলেন- ‘আমাদের মোট জনগোষ্ঠির ৪৫ ভাগই শিশু, শিশুদের জন্য আমরা নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছি’। পরে নতুন পূর্ণাঙ্গ একটি শিশু বিভাগ করার ঘোষণা দেন মহাপরিচালক।
তিনি আরো বলেন- “শিশুরা চঞ্চল’, শিশুমনের এই চাঞ্চল্যই জরুরি, যা তাদের দ্রুত জ্ঞানার্জনে সহায়তা করে থাকে। এই শিশুতোষ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা যাদেঁর গান শুনবো তাদেঁর সৃষ্টিকর্মের প্রতি শিশুদের আগ্রহ তৈরী ও সৃষ্টিশীল মনন তৈরীর লক্ষ্যেই এ আয়োজন”।
অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক সোহাইলা আফসানা ইকো।
পঞ্চকবি যাদেঁর লেখনীতে শিশু ভাবনা, কল্পনা ও আকাঙ্খার অধিকতর প্রতিফলন হয়েছে – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন, অতুল প্রসাদ সেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের রচিত গান ও নৃত্য দিয়ে সাজানো অনুষ্ঠানমালা গীতিআলেখ্য ‘ওরা অকারণে চঞ্চল’ পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশুদল।
পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চারটি গান পরিবেশিত হয় – ‘আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্র ছায়ায় লুকোচুরি খেলা’ হা রে রে রে …’রিম ঝিম ঘন ঘন রে’ দলীয় পরিবেশনা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশুসঙ্গীত দল।
এর পর পরিবেশিত হয় কবিগুরুর গানের সাথে দলীয় নৃত্য ‘ওরা ওকারণে চঞ্চল ‘।
পরে পরিবেশিত হয় দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা গান ‘নূতন রতনে ভূষণে যতনে’ । প্রকৃতিকে নিয়ে তাঁর লেখায় রয়েছে বাংলার অপূর্ব বর্ণনা। এসব গান শিশুমনকে আকৃষ্ট করে, এমনি একটি বসন্তের গান এটি ‘নূতন রতনে ভূষণে যতনে’ ।
বাংলা ভাষা নিয়ে খুব কম গানই রচিত হয়েছে, ফলে ভাষা নিয়ে যে গানটি সবার মনে স্থায়ী আসন পেতে রয়েছে সেটি হলো ’মোদের গরব মোদের আশা’। যার রচয়িতা অতুল প্রসাদ সেন। স্বদেশকে নিয়ে লেখা তাঁর ভক্তিরসের গানগুলো সবার কাছেই প্রিয়। তাঁর স্মরণে একাডেমির শিশু সংগীত দল পরিবেশন করেন ‘মোরা নাচি ফুলে ফুলে”।
বাংলা গানে চির উজ্জল গীতিকার ও সুরকার হিসেবে রজনীকান্ত সেন বা কান্তকবি বাঙালির অন্তরের মনি কোঠায় স্থান করে নিয়েছেন তার সরল বাণী ও প্রচলিত সুরকে আশ্রয়ের জন্য। তাঁর লেখা – ‘মায়ের দেয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নে রে ভাই’ দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন শিশু সংগীত দল। তৎকালীন ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনে সারা ভারত জুড়ে সারা জাগিয়েছিল এই গানটি।
বাংলাদেশের জাতীয় কবি, একইসাথে প্রেম ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম শিশুদের জন্য লিখেছেন ছড়া, কবিতা, গান, গল্প নাটক আরো কত কী ..! তাঁর সৃষ্টিকর্মের জন্যই তিনি বাঙালির হৃদয়ে স্থায়ী আসন পেতে আছেন। পরে পরিবেশিত হয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান – ‘দূর দ্বীপবাসিনী, চিনি তোমারে চিনি,’ ‘শুকনো পাতার নূপূর পায়ে’..
পরের কবির লেখা গানের সাথে পরিবেশিত হয় নৃত্য ‘মনের রং লেগেছে’। পরিবেশন করে একাডেমির শিশু নৃত্যদল। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন তাহফিম জুনাইরা আনশী, নাবিদ রহমান তূর্য, তামিম আহমেদ বৃন্ত এবং তৃয়াশী সরকার।