Home রাজনীতি শহীদ কাজী আরেফ আহমেদের ২৫তম হত্যাদিবস উপলক্ষে জাসদের আলোচনা

শহীদ কাজী আরেফ আহমেদের ২৫তম হত্যাদিবস উপলক্ষে জাসদের আলোচনা

15

স্টাফ রিপোটার: মুক্তিযুদ্ধের অগ্রপথিক, জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সমাজ পরিবর্তনের বিপ্লবী আন্দোলনের নেতা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে ঐতিহাসিক গণআন্দোলন কেন্দ্রীক গণআন্দোলনের অন্যতম অগ্রসেনানী, জাতীয় বীর শহীদ কাজী আরেফ আহমেদ এবং কুষ্টিয়া জেলা জাসদের তৎকালীন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শহীদ ইয়াকুব আলী, দৌলতপুরের স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরাইল হোসেন তপসের ও সমসের মন্ডলের ২৫তম হত্যাদিবস উপলক্ষে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার, বিকাল ৪টায় জিপিও’র সামনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে জাসদ কার্যালয়ে অবস্থিত শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন জাসদ সভাপতি জনাব হাসানুল হক ইনু। বক্তব্য রাখবেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ূয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত রায়হান, রোকনুজ্জামান রোকন, নইমুল আহসান জুয়েল, মো: মোহসীন, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, জাতীয় শ্রমিক জোট সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, কাজী আরেফের ভ্রাতষ্পুত্রী জাসদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক কাজী সালমা সুলতানা, জোটের কার্যকারী সভাপতি আমিনুল আজিম বনি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ননী-মাসুদ) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমুখ।

সভাপতির ভাষণে জনাব হাসানুল হক ইনু প্রয়াত নেতা কাজী আরেফ আহমেদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, কাজী আরেফ আহমেদ একজন জাতীয় বীর, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-স্বাধীনতা আন্দোলন-মুক্তি সংগ্রাম-মুক্তিযুদ্ধের অগ্রপথিক, একজন মহান সমাজতন্ত্রী। তিনি ছিলেন সামরিক শাসন ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির ঐক্যের দিশারী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনের অন্যতম নেতা।

জনাব ইনু দেশের সমসাময়িক রাজনীতির উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, বাজার সিন্ডিকেটের ছোবলে নিত্যপণ্যে বাজার বিশৃঙ্খল। জনজীবন বিপর্যস্ত, ক্ষতবিক্ষত। বিদেশে টাকা পাচার, ব্যাংকের টাকা লুটপাট ও দুর্নীতি অর্থনীতির জন্য অভিশাপ। এই তিন অভিশাপে অর্থনীতিতে চলছে রক্তক্ষরণ। এ অবস্থায় জনগণকে স্বস্তি দিতে বাজার সিন্ডিকেট ধ্বংস ও অর্থনীতিকে গতিশীল করতে বিদেশে টাকা পাচার, ব্যাংকের টাকা লুটপাট ও দুর্নীতির অভিশাপ দূর করাই হচ্ছে এ মুহুর্তে সব চাইতে বড় অগ্রাধিকার।

জনাব ইনু বলেন, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী বিএনপি-জামাত চক্র এখনও বাংলাদেশ রাষ্ট্র, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এরা বদলায়নি, শোধরায়নি। বিএনপি-জামাত-জঙ্গিবাদী সাম্প্রদায়িক চক্র বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থায়ী বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে। রাজনীতির এই বিষফোঁড়ার স্থায়ী সমাধান বের করার জন্য সকল দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে গভীরভাবে চিন্তা করে জাতীয় রাজনৈতিক কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করতে হবে। জনাব ইনু জনগণকে স্বস্তি দিতে বাজার সিন্ডিকেটের ছোবল থেকে জনগণকে রক্ষা এবং সংঘাতের রাজনীতি অবসানে বিএনপি-জামাত এর বিষফোঁড়ার স্থায়ী সমাধানের পথও বের করতে হবে।
কমরেড দিলীপ বড়ূয়া তার ভাষণে বলেন, জঙ্গিবাদ মৌলবাদ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে জনজাগরণ তৈরি করতে হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে এই অপশক্তি রুখা যাবে না। জনগণের মাঝে ১৪ দলের যে আবেদন আছে তাকে জনজাগরণে পরিণত করতে হবে।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার তার ভাষণে বলেন, মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্যে এবং পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী যারা সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পে এ দেশকে ছেয়ে ফেলেছিলো তাদের চিন্তা চেতনার বিরুদ্ধে লড়াই, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়া এবং সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭২ সালে জাসদ গঠন করেছিলেন। কিন্তু দু:খের বিষয় সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদ মৌলবাদকে এখনো কবর দিতে পারিনি। যুদ্ধাপরাধীদেও কয়েকজনের ফাঁসি হলেও তাদেরকে চুড়ান্তভাবে পরাজিত করা যায়নি। তাই আমাদের সকলকে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হবে।
এখানে উলেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১৬ ফেব্রয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কালিদাশপুরে জাসদ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী জনসভার মঞ্চে প্রকাশ্য দিবালোকে কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গাঁ অঞ্চলের চিহ্নিত সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীরা গুলি করে জাতীয় বীর ও জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জননেতা কাজী আরেফ আহমেদ কুষ্টিয়া জেলা কমিটির তৎকালীন সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা লোকমান হেসেন, সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরাইর হোসেন তপস ও সমসের মন্ডলকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

আগামীকাল ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল ৯টায় মিরপুর মাজার রোডে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন বীরমুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে প্রয়াত নেতা কাজী আরেফ আহমেদেও সমাধিতে জাসদ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।