Home রাজনীতি রাজশাহীতে মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ

রাজশাহীতে মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ

25

মো.পাভেল ইসলাম মিমুল রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরসহ নয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই জেলা। এখানে রয়েছে একটি সিটি করর্পোরেশন,১৪টি পৌরসভা ও ৭২টি ইউনিয়ন। আর সংসদীয় আসন সংখ্যা ৬টি।রাজশাহীতে মোট ভোটার সংখ্যা রয়েছেন ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৫৬২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭১০ এবং নারী ভোটার ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫২ জন। এ জেলায় এবার নতুন ভোটার ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৫ জন।

রাজশাহী-১ (তানোর ও গোদাগাড়ী) :

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজশাহী-১ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। শুরু হয়ে গেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে এমপি প্রার্থীরা সংসদীয় এলাকায় নিজের স্থান জানান দিতে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-১ আসন সংসদীয় আসন।

মোট ভোটার সংখ্যা ৩,৮৩,২৫৪ পুরুষ ভোটার ১,৯০,৫৭২ ও ১,৯২,৬৮২ নারী ভোটার ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দল থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি হয়েছিলেন সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী এবং ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি হয়ে বর্তমান আছেন তিনি। তবে ১৪ ও ১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। আসন্ন ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থীকেই দেখা যাচ্ছে নির্বাচনী মাঠে কাজ করতে পাশাপাশি অন্য দলের প্রার্থীদের কেউ দেখা যাচ্ছে নির্বাচনী মাঠে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তানোর গোদাগাড়ী আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হিসাবে নৌকা প্রতীক চাচ্ছেন যারা, বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী,সাবেক তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী,পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সহধর্মিনী আয়েশা আক্তার জাহান ডালিয়া, বর্তমান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আসাদুজ্জামান ও সদ্য আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত আকতারুজামান আক্তার সাবেক চেয়ারম্যান দেওপাড়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। বিএনপি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দিন।

তিনি বলেন,দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে জয়ী করবে। একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ মজিবর রহমান। গোপনে তার নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে।সরোজমিনে দেখা গেছে জামাতের কোনো নেতা প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায়,দেখা মিলছে না এবং নির্বাচনী এলাকায় কোথাও তাদের কোনো ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটানো নেই।

রাজশাহী-২ (রাসিক এলাকা) :

বায়ুদূষণের মাত্রা কমিয়ে আনার জন্য বিশ্বের এক নম্বরের খেতাব প্রাপ্ত শহর রাজশাহী সিটি করর্পোরেশন (রাসিক)। এই শহর নিয়েই গঠিত রাজশাহী-২ (সদর) আসন। ১৯৯১ সালের পর বিএনপির ঘাটি হিসেবে খ্যাত রাজশাহী সদর আসনে প্রথম নৌকার জয় হয় ২০০৮ সালের নির্বাচনে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করে সাংসদ নির্বাচিত হন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এক সময়ের রাজশাহীর ছাত্রনেতা বাদশা। তবে সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তিনবারের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে জিততে হয়েছে তাকে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জোটগত হলে আবারো নৌকা প্রতীক চাইবেন ফজলে হোসেন বাদশা। তবে এ আসনে এবার মনোনয়ন নিয়ে আগাম শুরু হয়েছে ১৪ দলীয় জোটের ঠাণ্ডা লড়াই। এবার ছাড় দিতে চায় না স্থানীয় আওয়ামী লীগ। অপরদিকে,সদর আসনে এবারও মনোনয়ন চাইবেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। তিনি মেয়র থাকাকালে ২০০১ সালে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবার স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ এ আসনে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভিকে চায়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে এবার জোটের শরীকদের ছাড় দিতে রাজি নন মহানগর আওয়ামী লীগ। এদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল,সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা,সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু। এর মধ্যে বেশি আলোচনায় মোহাম্মদ আলী কামাল,শাহীন আক্তার রেনী ও ডাবলু সরকার।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) :

আগামী অক্টোবরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। তাই আসন্ন সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।কেন্দ্রীয় হাই কমান্ডে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশায় নিজ নিজ পক্ষে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার তৎপরতাও অব্যাহত রেখেছেন তারা। আওয়ামী লীগ,বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় গিয়ে ভোটারসহ এলাকাবাসীর সাথে কুশলাদি বিনিময় করছেন। এ আসনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যারা আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন,বর্তমান এমপি আয়েন উদ্দিন,সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বেগম আক্তার জাহান,জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে তারা হলেন,বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কবীর হোসেন,রাজশাহী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু,সাবেক এমপি, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী জাহান পান্না এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রাজশাহীর কাঁটাখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মাজেদুর রহমানের নাম আলোচিত হচ্ছে। জোটগত নির্বাচন হলে এবং জামায়াতে ইসলামীকে এ আসনটি ছেড়ে দেয়া হলে সাবেক পৌর মেয়র জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমানকে প্রার্থী করা হতে পারে বলে দলটির মহানগর শাখার এক নেতা জানিয়েছেন।

এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে দলটির রাজশাহী মহানগর সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাচ্চুকে। এছাড়া বিকল্প ধারা বাংলাদেশের অঙ্গসংগঠন বিকল্প স্বেচ্ছাসেবক ধারা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি ও রাজশাহী জেলা সভাপতি ড.মো. শহীদুল্লাহ প্রামাণিক এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেলে যুক্তফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। স্থানীয় নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং মাঠের বিরোধী দল বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব জিইয়ে রয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া,আধিপত্য বিস্তার ও দলীয় বিভিন্ন ইস্যুতে জিইয়ে থাকা দ্বন্দ্বে নেতাকর্মীরাও বিভ্রান্ত।

দলীয় একটি সূত্র জানায়,এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন কে পাবেন তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসনে ব্যর্থ হলে এবং তৃণমূলের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রার্থী মনোনয়ন না দিলে জয় পাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ আসনে বিএনপির প্রবীণ নেতা ও অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কবীর হোসেন প্রার্থী হলে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তার অনুসারীরা মনে করছেন। তবে দলের ভেতরে জিইয়ে থাকা দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠতে না পারলে জয় পাওয়া কঠিন হবে বলে মনে করছেন তারা।

দলীয় একটি সূত্র জানায়,কবীর হোসেন বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ। শারীরিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে পারলে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে পারেন বলে তার অনুসারীরা আশা করছেন। বিএনপির একটি সূত্র জানায়, দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ক্লিন ইমেজ,বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত নয়,দলের ভেতরে গ্রুপিং-লবিং সৃষ্টির সাথে জড়িত নয়,ত্যাগী এবং জনপ্রিয়তা রয়েছে- এমন নেতাদের প্রাধান্য দেয়া হবে। এছাড়া বিকল্প স্বেচ্ছাসেবক ধারা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহসভাপতি ও রাজশাহী জেলা সভাপতি ড. শহীদুল্লাহ প্রামাণিক এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি যুক্তফ্রন্টের ব্যানারে এ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা উপজেলা) :

বাগমারা উপজেলা নিয়ে রাজশাহী-৪ আসন। এ আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ১০৬টি। এখানে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৭ জন ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১১ জন। এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক,জিন্নাতুন নেসা তালুকদার (সাবেক এমপি) এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ-সভাপতিও সাবেক বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু। বিএনপির আবু হেনা, ইসলামী আন্দোলনের তাজুল ইসলাম খান ও সরদার সিরাজুল করিম।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) :

রাজশাহীর পুঠিয়া-দুর্গাপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন রাজশাহী-৫। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ আসনটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের দখলে থেকেছে। কখনো জাতীয় পার্টি,কখনো আওয়ামী লীগ আবার কখনো বিএনপির দখলে। এর মধ্যে ৯১ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত এখানে এমপি ছিলেন আওয়ামী লীগের। আর ৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির দখলে ছিলো এ আসনটি। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনটি ফের দখলে আসে আওয়ামী লীগের। দলের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (বর্তমান) কাজী আব্দুল ওয়াদুদ দারা। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও বিনাভোটে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হলে নৌকার টিকিট বাগিয়ে এমপি হয়ে যান জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মুনসুর রহমান।
এ আসনে এবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অন্তত ডজন খানেক নেতা মনোনয়ন পাওয়ার আশায় মাঠে নেমেছেন। এর মধ্যে কেউ রয়েছেন নবীন আবার কেউ প্রবীণ। ফলে বড় দুই দলের নেতায় নেতায় দ্বন্দ্বে জাঁতাকলে দিশেহারা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের দুইবারের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারার সঙ্গে বর্তমান এমপি ডা. মুনসুর রহমানের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। আর বিএনপির দুইবারের সাবেক সাংসদ নাদিম মোস্তফার সঙ্গে বিএনপির প্রবীণ নেতা অধ্যাপক নজরুল ইসলামের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। যা এখনো বিদ্যমান। এছাড়াও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ,বর্তমান রাজশাহী জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ওবায়দুর রহমান ও আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি প্রয়াত তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুকের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য বদরুল ইসলাম তাপস।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এমপি মুনসুর ও সাবেক এমপি দারার অবস্থান মাঠ পর্যায়ে শক্তিশালী। নিজের অবস্থান ধরে রাখতে সময় পেলেই ছুটে যাচ্ছেন এলাকায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে এবার বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন বিএনপির অন্তত হাফ ডজন নেতা। বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা এখনো চূড়ান্ত না হলেও হাই কমান্ডের নির্দেশে ভোটের মাঠে নেমেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই। বিশেষ করে নিজের পক্ষে সমর্থন পেতে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে। তবে এবার ক্লিন ইমেজের নেতা চান বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা। ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এলাকা ছাড়েন তিনি। ফলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে নাদিমের স্থলে মনোনয়ন দেওয়া হয় পুঠিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম মন্ডলকে। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে নজরুল ইসলাম পরাজিত হন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নাদিম মোস্তফা ও নজরুল ইসলাম মন্ডল দলের মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়াও রাজশাহী-৫ আসনে এবার মনোনয়ন চাইবেন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবু বকর সিদ্দিক, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম সাকলাইন,বিএনপির নেত্রী মাহবুবা হাবিবা,বিএনপি নেতা ইসফা খায়রুল হক শিমুল ও দুর্গাপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াহেদ মোল্লার ছেলে সিরাজুল কবির সনু।

রাজশাহী-৬ (চারঘাট ও বাঘা) :

চারঘাট ও বাঘা উপজেলা নিয়ে রাজশাহী-৬ আসন। এ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ১০৭টি। এর মধ্যে চারঘাটে ৫২টি ও বাঘায় ৫৫টি। এখানে মোট ভোটার ৩ লাখ ৪ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৯৭ জন ও পুরুষ ভোটার ১লাখ৫২ হাজার ৬০১ জন। এ আসনের চারঘাট উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭২৫ জন। আর বাঘায় ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৭৩। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম,বাঘা উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাবলু,বর্তমান বাঘা পৌর মেয়র আক্কাস আলী ও সাবেক এমপি রায়হান আলী।

ইসলামী আন্দোলনের আব্দুস সালাম সুরুজ ও জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন এ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। এ আসনে বিএনপি থেকে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবু সাঈদ চাঁদ নানান প্রতি কূলতার মাঝেও নির্বাচনের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন গোপনে। ফলে এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে আবু সাঈদ চাঁদের।