Home সারাদেশ যাত্রীসংকটে এবার বন্ধ ঢাকা-দক্ষিণাঞ্চল নৌপথে সরকারি স্টিমার চলাচল

যাত্রীসংকটে এবার বন্ধ ঢাকা-দক্ষিণাঞ্চল নৌপথে সরকারি স্টিমার চলাচল

48

ডেস্ক রিপাের্ট: যাত্রী সংকটে এবার ঢাকা-দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে চলাচল করা শত বছরের প্যাডেল স্টিমার সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি ঢাকা-মোরেলগঞ্জ-ঢাকা প্যাডেল স্টিমার সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিসি।

বিআইডব্লিউটিসির বরিশালের এজিএম কে এম ইমরান জানান, যাত্রী সংকটের কারণে সার্ভিস আপাতত বন্ধ করা হয়েছে।

স্টিমার সার্ভিসে থাকা পাঁচটি প্যাডেল স্টিমারে ভ্রমণ খুবই পছন্দ করতেন পর্যটকরা। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, সর্বশেষ সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার দুটি জাহাজ এমভি বাঙালি ও মধুমতি চলত। ঢাকা থেকে ছেড়ে এসে চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, কাউখালী, হুলারহাট, চরখালী, বড় মাছুয়া, সন্যাসী ও মোরেলগঞ্জে যাত্রী পরিবহন করত। কিন্তু ইদানীং যাত্রী কমে গেছে। এতে লোকসান হতো। এ কারণে সার্ভিস টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে এ রুটের সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নিয়মিত যাত্রীরা জানিয়েছেন, একমাত্র সরকারি জাহাজ মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত যাত্রী পরিবহনে ছিল। সপ্তাহে মাত্র দুই দিন সার্ভিস দিলেও মোরেলগঞ্জ থেকে যাত্রীরা সহজেই মালামাল নিয়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করতে পারত। এক সময়ে খুলনা পর্যন্ত সরকারি সার্ভিস ছিল। পরবর্তী সময়ে তা মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত রাখা হয়। এখন তা বন্ধের সিদ্ধান্ত হওয়ায় তারা হতাশ। যাত্রীরা জানান, অন্তত সপ্তাহে এক দিন হলেও এ সার্ভিস থাকলে তাদের ভোগান্তি কমত। গত এক সপ্তাহ ধরে সার্ভিস বন্ধ থাকায় ও মোরেলগঞ্জ থেকে কোনো বেসরকারি নৌযান লঞ্চ পরিচালনা না করায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাত্রীরা জানান, বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল নদীতে যাতায়াতে তাদের বেসরকারি লঞ্চের চেয়ে সরকারি নৌযানের ওপর ভরসা বেশি।

বিআইডব্লিউটিসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৫ থেকে ১৯৪৮ সালের মধ্যে নির্মিত ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমারগুলোকে ১৯৯৫ সালে পুনরায় সংস্কার করা হয়। বিআইডব্লিউটিসির নৌ-সার্ভিসে ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রী পরিবহনে ছয়টি জাহাজ ছিল। এগুলো হলো :এমভি বাঙালি, মধুমতি, অস্ট্রিচ, পিএস মাহসুদ, টার্ন ও লেপচা। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এসব প্যাডেল স্টিমারগুলোতে ঐতিহ্য, পর্যটন, মৌসুমে নিরাপদ যাত্রী পরিবহনের কথা বিবেচনায় রেখে ট্রিপে রাখা হয়েছিল। তাছাড়া বরিশাল থেকে খুলনা পর্যন্ত ছয়টি স্টেশনের যাত্রীদের সহজ চলাচলের জন্য এ জাহাজগুলো চলাচল করে আসছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইডব্লিউটিসির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইত্তেফাককে জানিয়েছেন, সরকারি জাহাজের অব্যবস্থাপনা, সময়সূচিতে যাত্রীদের বিড়ম্বনা, ঘাটগুলোর বেহালদশা, তিন শ্রেণির কেবিনের বেহালদশায় যাত্রী আকর্ষণ করতে পারেনি। সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) বরিশাল জেলার সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদা বলেন, প্যাডেল স্টিমার বন্ধ হয়ে গেলে পর্যটকদের পাশাপাশি নিয়মিত যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। সপ্তাহে অন্তত দুই-এক দিন এ সার্ভিস টিকিয়ে রাখার দাবি জানান তিনি।
ইত্তেফাক