Home সাহিত্য ও বিনোদন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র আয়োজনে পর্যালোচনা হয়েছে ‘সত্যজিত রায়ের চলচ্চিত্রগ্রন্থ

ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র আয়োজনে পর্যালোচনা হয়েছে ‘সত্যজিত রায়ের চলচ্চিত্রগ্রন্থ

28

ডেস্ক রিপোর্ট: ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র আয়োজন চলচ্চিত্রের বাহাস পর্বের ৩৭তম বৈঠকে পাঠ-পর্যালোচনা হয়েছে চলচ্চিত্রগ্রন্থ ‘সত্যজিত রায়: সভ্যতার সঙ্কট ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’ এর। আয়োজনটি ২১ অক্টোবর শুক্রবার, বিকেল ৫টায় কাঁটাবনের পাঠক সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র সাধারণ সম্পাদক চলচ্চিত্র নির্মাতা অদ্রি হৃদয়েশের সঞ্চালনায় আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র সভাপতি লেখক, গবেষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা বেলায়াত হোসেন মামুন। চলচ্চিত্র বাহাসের এই পর্বে আলোচক হিসেবে ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা এন. রাশেদ চৌধুরী এবং লেখক ও অনুবাদক প্রজ্ঞা তাসনুভা রূবাইয়াৎ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘সত্যজিত রায়: সভ্যতার সঙ্কট ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’ গ্রন্থটির চলচ্চিত্র সমালোচক ও লেখক মাহমুদুল হোসেন।

আলোচনায় চলচ্চিত্র নির্মাতা এন. রাশেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সত্যজিতের চলচ্চিত্র নিয়ে অনুসন্ধান এর আগে কোথাও আমরা সেরকমভাবে পায় নি, সভ্যতার সঙ্কট ও অন্যান্য প্রসঙ্গ বইটিতে যেভাবে পেয়েছি। গ্রন্থটি প্রকাশিত হলো সত্যজিতের জন্মশত বার্ষিকীকে উপলক্ষ করে। এই বইটি সত্যজিতকে গভীরতর উপলব্ধির প্রয়াস, চলচ্চিত্র বিষয়ে আগ্রহী যারা তাদের জন্য বইটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ হবে।

লেখক ও অনুবাদক প্রজ্ঞা তাসনুভা রূবাইয়াৎ বলেন, সত্যজিতের চলচ্চিত্রের চরিত্রগুলোকে দেখতে গেলে এই বইটি অবশ্য পাঠ্য একটি বই। একটা সিনেমা সত্যজিত রায় বানিয়েছেন সেটা কেন কিভাবে, একটা ফ্রেমকে সত্যজিত ধরেছেন সেটা কোন ফিলোসফির জায়গা থেকে ধরেছেন এবং চরিত্রগুলিকে কেন এভাবে পোট্রে করেছেন সেটা যদি আমি বুঝতে চাই তাহলে বইটা খুবই দারুণ। আমি পড়বার আগে কখনো ভাবি নি বইটি এভাবে আমাকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে সাহায্য করবে।

লেখক ও চলচ্চিত্র সমালোচক মাহমুদুল হোসেন বলেন, আমরা আসলে ফিল্ম সোসাইটির প্রোডাক্ট। আমরা যে লেখালেখি করি সে লেখালেখি আমরা করতামই না যদি চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন বলে একটা বস্তু না থাকতো। এখনকার সাথে একটা বড় পার্থক্য সত্তর আশি ও নব্বই দশকের শুরুর দিকটা পর্যন্ত আমরা সবাই সবার লেখা পড়তাম, একজন আরেকজনের লেখা নিয়ে মোটামুটি খোলামেলা আলোচনা করতাম। সেটা এখন তেমন আর দেখি না। আজ এই আয়োজনে চলচ্চিত্রের একটি বই নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তা সত্যিই খুব অনুপ্রেরণার। এই বইটি আমার ৩০ বছরের সত্যজিৎ বিষয়ক বোঝাপড়ার ফসল। আমি আশা করি বইটি নিয়ে আপনাদের আরও আলোচনা আমি জানতে পারবো। আমার ভালো লাগবে।

সভাপতির বক্তব্যে ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি’র সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন বলেন, বাংলাদেশ থেকে সত্যজিত চর্চায় এই ধরনের বিশ্লেষণমূলক বই এখন পর্যন্ত আর দেখা যাচ্ছে না। এই বইটিতে একজন চিন্তাশীল লেখকের, একজন নিষ্ঠাবান চলচ্চিত্র সংসদকর্মীর দীর্ঘকালের সত্যজিত চর্চার একটা জার্নি খুঁজে পাওয়া যায় এবং সেটা খুবই গভীর আর বিশ্লেষণমুখী। যা আমাদের প্রেক্ষিতে সহজলভ্য কিছু নয়।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সাহিত্যের কাজটা যারা কিছুদূর এগিয়ে নিলেন তাদের মধ্যে লেখক ও চলচ্চিত্র সমালোচক মাহমুদুল হোসেন আমাদের অগ্রজ সহযোদ্ধা। আমাদের এখানে এইভাবে সত্যজিতের উপর এর আগে কেউ এমন কাজ কেউ করেননি। এটা একটা বিরাট ব্যাপার যে দুই মলাটের মধ্যে একজন গ্রেট ফিল্মমেকারকে বা একজন মহৎ শিল্পীকে প্রায় তিরিশ বছরের একটা জার্নিতে ধরে রাখা হলো। আমার মনে হয় লেখক মাহমুদুল হোসেন তার নিজস্ব দক্ষতায় সত্যজিতের মননের খোঁজ বেশ অনেকটাই ধরে ফেলেছেন এবং এটা আমাদের জন্য লাভের হলো।