Home সারাদেশ মোবাইলের টর্চ ও মোমবাতির আলোয় চলছে চিকিৎসা

মোবাইলের টর্চ ও মোমবাতির আলোয় চলছে চিকিৎসা

22

শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

ডেস্ক রিপোর্ট: গত ২৫ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অর্ধশত বছরের এই হাসপাতালের জরাজীর্ণ বিদ্যুত্ব্যবস্থা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় বিগত দুই সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের অতি গুরুত্বপূর্ণ সার্জারি বিভাগের মিনি ওটিগুলো চলছে মোবাইলের টর্চ লাইটের সাহায্যে। এমনকি কখনো কখনো মোমবাতির আলোয় চলছে চিকিৎসা। বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ রয়েছে সিটি স্ক্যান, এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা।
শেবাচিম হাসপাতালে বিদ্যুত্সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফিরোজ আলম জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে অস্বাভাবিকভাবে পানি প্রবেশ করে নিচ তলার প্রায় দুই ফুট প্লাবিত হয়। এতে আন্ডারগ্রাউন্ডের (মাটির নিচে) বিদ্যুৎ সংযোগের তার বিকল হয়ে পড়ে। দুটি ফেইজ পুড়ে যায়। ফলে হাসপাতালের বি ব্লকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে মেরামতের পর ঐ ফেইজ ঠিক হলেও তা স্থায়ী হয় নি। এছাড়া গত ৯ নভেম্বর বিকালে জি ব্লকের ফেইজ দুটিও বিকল হয়। সেগুলোও মেরামত করা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৫০ বছরেরও বেশি এই হাসপাতালের বয়স। প্রতিষ্ঠাকালে এই হাসপাতালের সব বিদ্যুতের লাইন মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হয়েছিল। অনেক পুরোনো হয়ে যাওয়ায় তারগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এখন আর মাটির নিচ থেকে বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া হবে না। ভবনের ভেতরেই সরাসরি বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু এ কাজে অর্থ ও সময়ের প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমানে যে দুটি ব্লকে বিদ্যুত্সংযোগ নেই সেগুলো মেরামত করতে ২৪ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। আশাকরি চলতি সপ্তাহে মেরামতের কাজ শুরু হবে। এদিকে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশাল জেলা সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা দ্রুত হাসপাতালের বিদ্যুত্ব্যবস্থা সচল করে চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন।

অনেক রোগী বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। হাসপাতালে কর্মরত নার্সসহ অন্যরা জানান, যতক্ষণ ডিউটিতে থাকতে হয় ততক্ষণ মোবাইলের টর্চ অন করে কিংবা মোমবাতি জ্বালিয়ে থাকতে হচ্ছে।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে হাসপাতালের জি ও বি ব্লকে বিদ্যুত্সংযোগ নেই। এতে ঐ দুই ব্লকে মেডিসিন, সার্জারি, ডেন্টাল, মানসিক ও রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ঐ ওয়ার্ডগুলোতে বিদ্যুত্সংযোগের ব্যবস্থা করতে গণপূর্তকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু এ কাজটি করতে সময়ের প্রয়োজন বলে তারা দাবি করেছেন।
ইত্তেফাক