Home রাজনীতি মানবতার অস্তিত্বকেও সরকার এখন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে : রিজভী

মানবতার অস্তিত্বকেও সরকার এখন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে : রিজভী

37

স্টাফ রিপোটার: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অফিস-আদালতে বিদ্যূৎ সাশ্রয়ের জন্য সময়সূচি সংকুচিত করতে গিয়ে এখন মানুষের জীবন বাঁচাতে সবচেয়ে জরুরী যে জিনিস ঔষুধ সেই ঔষুধের ফার্মেসিও রাত ১২টার পর বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মানবতার অস্তিত্বকেও তারা এখন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ছুটি সপ্তাহে দুইদিন করা হয়েছে, এটি নজীরবিহীন ঘটনা, পৃথিবীর কোথাও এর দৃষ্টান্ত নেই। এই সরকার প্রকৃত শিক্ষা বিরোধী সরকার। এরা পরীক্ষায় নকলকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন সম্পর্কে এরা উদাসীন বলেই দুইদিন ছুটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, লোডশেডিংকে যাদুঘরে পাঠিয়েছেন বলে আওয়ামী নেতা ও মন্ত্রীরা জাতির সামনে যে নর্তন-কুর্দন করেছেন সেটির বিষাদময় পরিণতি এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। রাজধানীসহ শহরগুলোতে ৫/৬ ঘন্টা লোডশেডিং তো থাকছে, কিন্তু গ্রামের মানুষ রাতের বেশীর ভাগ সময় অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। এরা জনস্বার্থকে তাচ্ছিল্য করতে কোন দ্বিধা করে না। জনগণের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা না করেই নিত্যপণ্যের দাম জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি করছে। আজও সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ৭ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরা ন্যায়নীতির কোন তোয়াক্কা করে না বলেই জনগণের ক্রয়ক্ষমতাকে বিবেচনায় নেয় না।

তিনি বলেন, এই নব্য বাকশালীদের আমলে গণমাধ্যমের গলায় এমনিতেই ফাঁসির দড়ি ঝুলছে। এখন সেই ফাঁসির দড়িতে টান দেয়ার জন্য নানা ধরণের কালাকানুনের অন্ত নেই। গতকাল মন্ত্রীপরিষদ সাংবাদিকদের জরিমানার বিধান রেখে আবারো নতুন করে আইন অনুমোদন করেছে। এটি মূলত: সাংবাদিক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করারই আরেকটি পদক্ষেপ। এরা কখনোই একটি বহুমাত্রিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজের বিকাশকে সহ্য করেনি। তাই স্বাধীনতার পর থেকেই এদের হাতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও স্বাধীন মত প্রকাশ চরম দলন-পীড়ণের শিকার হয়।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, গতকাল দেশব্যাপী বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে বিভিন্ন অঞ্চলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। ঢাকা জেলাধীন কেরানীগঞ্জ (দক্ষিণ) শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ১০/১২ জন নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে। সন্ত্রাসীরা স্থানীয় বিএনপি’র একটি মার্কেটেও ব্যাপক ভাংচুর চালায়। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পুলিশ কর্তৃক বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে বেধড়ক লাঠিচার্জ করলে ৫/৬ জন গুরুতর আহত ও শতাধিক নেতাকর্মী আহত, ৫০টির অধিক মোটরসাইকেল ভাংচুর ও ১৫/২০টি মোটরসাইকেল আটক করে।

মেহেরপুর জেলাধীন গাংনীতে ছাত্রলীগ কর্তৃক বিএনপি অফিসে হামলা ও বিএনপি নেতা কমরেড নাসির, মোঃ মন্টু, যুবদল নেতা সাইদুল, এনামুল, চপল, রুবেল পারভেজ, শমসের, তমসের আলী, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এডাম ওরফে সুমন, জামাল, রুবেল এর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরসহ নোয়াখালীতে বিএনপি নেতা ভিপি জসিম উদ্দীন, যুবদল নেতা রায়হান, ডা. মাঈন উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা মাজেদুল কবির মুন্নাা, রিপনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে বাগেরহাটের রামপালে উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম রবিকে গ্রেফতার করে। এছাড়া সন্ত্রাসীদের হামলায় বিএনপি নেতা মাহফুজ মাসুম বিল্লাল ও ওয়াদুদ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
উল্লিখিত ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি। আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।