Home রাজনীতি মমতাজ-নিক্সনদের মনে সরকারের মন্ত্রী হওয়ার খায়েশ জেগেছে–রিজভী

মমতাজ-নিক্সনদের মনে সরকারের মন্ত্রী হওয়ার খায়েশ জেগেছে–রিজভী

34

স্টাফ রিপোটার: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিনাভোটে বছরের পর বছর ধরে এমপি পদবী উপভোগ করার পর মমতাজ-নিক্সনদের মনে হয়তো নিশিরাতের সরকারের মন্ত্রী হওয়ার খায়েশ জেগেছে। কিন্তু তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বেশি লোভ ভালো নয়। রাষ্ট্রীয় টাকা খরচ করে সংসদে বসে এমন পাগলামি-খিস্তিখেউর অব্যাহত থাকলে সেদিন আর বেশি দূরে নয়, জনরোষ থেকে বাঁচতে পুরো নিশিরাতের সরকারকেই জনচক্ষুর অন্তরালে চলে যেতে হতে পারে।

আজ শুক্রবার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন,‘দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকা বন্যা কবলিত। সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জসহ ১৫টি জেলার ৯৫টি উপজেলা এবারের প্রলয়ংকারী বন্যায় ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বন্যা কবলিত মানুষরা চরম দুর্ভোগের আবর্তে হাবুডুবু খাচ্ছেন। বন্যার করাল গ্রাসে তাদের সর্বস্ব-সবকিছু ভেঙে-চুরে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। কোন কোন এলাকায় কিছুটা পানি নামতেই মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে পেটের পীড়া-ডায়ারিয়া-কলেরা-রোগ বালাই। নিজেদের বাড়িঘরের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকে। কেউ কেউ এলাকায় ফিরে বিধ্বস্ত ও শূণ্য ভিটা দেখে অনেকে ডুকরে কেঁদে উঠছেন। চারদিকে ত্রানের জন্য হাহাকার করছে মানুষ। সেদিকে সরকারের ভ্রুক্ষেপ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জনগনের দল বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতা কর্মীরা এই বন্যার শুরু থেকে উদয়াস্ত ত্রান কর্মকান্ডে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। প্রতিটি দুর্গত এলাকায় আমাদের নেতাকর্মীরা সামর্থ অনুযায়ী ত্রাণ বিতরণ করছেন। আমাদের কেন্দ্রীয় ত্রান টিম ছাড়াও স্থানীয় নেতাকর্মীরা বানভাসিদের সাহায্য সহযোগিতা করছেন। দুর্গত মানুষদের ত্রাণ সহায়তা ও রান্না করা খাবার বিতরণ করছেন তারা। সেখানেও ক্ষমতাসীনরা বাধা দিচ্ছে। আর সরকার ত্রাণের পরিবর্তে ব্যস্ত পদ্মা সেতু নিয়ে তথাকথিত উন্নয়নের গল্প প্রচারে। তাই আবারো প্রমাণ হয়েছে জনগণের দুঃখ দুর্দশা বিপদ আপদে একমাত্র বিএনপিই তাদের পাশে থাকে। আর আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা ব্যস্ত থাকে লুটপাট-অপকর্ম আর অপপ্রচারে সরকার ব্যস্ত আখের গোছাতে।’

রিজভী বলেন,‘একদিকে এই বন্যা পরিস্থিতি আবার দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ চরম সংকটে দিনাতিপাত করছে। কিন্তু পত্রিকায় খবর এসেছে সুইস ব্যাংকে যেকোন সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি অর্থ জমা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৫৫ ভাগ। প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা এই একটি ব্যাংকেই জমা আছে। এরা একদিকে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। এবারের বাজেটেও এই পাচারকৃত অর্থ দেশে আনার জন্য বিশেষ কর রেয়াতের ঘোষণা দিয়েছে যা অর্থ পাচারকে উৎসাহিত করা ছাড়া ভিন্ন কোন ফল বয়ে আনবে না। বিশাল বিশাল মেগা প্রজেক্টের বরাদ্দ অব্যাহত আছে। এই সকল প্রকল্পের ব্যয় তার প্রারম্ভিক ব্যয়ের তুলনায় আট থেকে দশ গুণ করে বাড়ছে। জনগণের টাকা দেদারসে লুটপাট করে একদল মানুষ রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। মানুষের ভাত-কাপড়ের অধিকার যেভাবে কেড়ে নেয়া হয়েছে একইভাবে জনগণের ভোটের অধিকারকেও যাদুঘরে পাঠানো হয়েছে।’

তিনি বলেন,‘ফ্যাসিবাদী সরকারের অপশাসনে সমাজে মারাত্মক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটলেও তাতে নজর নেই। শিক্ষকদেরকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে মারা হচ্ছে। মানুষ যখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে সংগঠিত হচ্ছে, তখন তারা ইভিএমের নামে ভেলকিবাজি শুরু করেছে। এই কমিশন ভোটারদের সাথে নির্মম প্রবঞ্চনা আর কপোটতা ছাড়া কিছুই করবে না। এরা ভোট-নির্বাচনকে বিপজ্জনক চোরগর্তের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের মিথ্যার বাড়াবাড়ি কোন বিজয় আনতে পারে না।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ,আসাদুল করিম শাহিন,আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী,ডা:জাহিদুল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।