Home রাজনীতি ভাসানী অনুসারী পরিষদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রশ্ন

ভাসানী অনুসারী পরিষদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রশ্ন

44

স্টাফ রিপোটার: গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক ভাসানী অনুসারী পরিষদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষনেতারা। তারা বলছেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ রাজনৈতিক দল কিনা আমাদের জানা নেই।

গণতন্ত্র মঞ্চের এক শীর্ষনেতা এ বিষয়ে যুগবার্তা ডট কমকে বলেন, কোনো ব্যক্তির নামে একটি সংগঠনকে রাজনৈতিক দলে পরিনত করা আসলেই বেমানান। আমরাতো আন্দোলনে শরিক হতে কাউকে নিষেধ করিনি। তবে, যে উদ্দেশ্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদ গঠন করা হয়েছিলো তা থেকে তাদের বিচ্যুতি ঘটেছে বলে আমি মনে করি।

এ সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাবেকমন্ত্রী ও জাপার একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার ভাসানী অনুসারী পরিষদ নিয়ে যুগবার্তাকে বলেন, মূলত মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীকে স্মরণ করা বা স্মৃতিচারণ করার জন্যই এ সংগঠনটি তৈরী করা হয়েছিলো। এখন এ সংগঠনের নেতারা কেনো সরাসরি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে কাজ করছে তা আমার জানা নেই।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুগবার্তাকে বলেন, আমি যখন এ সংগঠনের দায়িত্বে ছিলাম, তখন এ সংগঠনের ব্যানারে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি করিনি। বিভিন্ন সেমিনার এবং মওলানা ভাসানী স্মৃতিচারণ করে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করতাম। এখন এটি কেনো রাজনৈতিক ব্যানারে আনা হচ্ছে তা রফিকুল ইসলাম বাবলু (ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক) ভালো বলতে পারবে।

গত ৮ জানুয়ারি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৫টি অরাজনৈতিক সংগঠন নিয়ে ‘সমমনা গণতান্ত্রিক জোট‘ গঠিত হলে তখনও বিষয়টি জোটের অন্যান্য শরিকসহ গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হয়। সমালোচনার মুখে এক পর্যায়ে এ জোটের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘পেশাজীবি গণতান্ত্রিক জোট ‘।

গত বছরের ৮ আগষ্ট জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন নিয়ে গঠিত হয় গণতন্ত্র মঞ্চ। এই দলগুলোর মধ্যে সকলের রাজনৈতিক অতীত পরিচিতি থাকলেও ভাসানী অনুসারী পরিষদের ছিলো নবীন। কোনো রাজনৈতিকদল না হয়েও গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক হয় এ সংগঠনটি।

যদিও সংগঠনটির সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু দাবি করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদ একটি রাজনৈতিক দল। তিনি বলেন, আমরা ২ জুলাই থেকে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা রাজনৈতিক দল না হলে কোনো জোট করতে পারতাম না।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষনেতা ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নূরুল হক নুর যুগবার্তাকে বলেন, আসলে কোনো রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, বর্তমানে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত একনায়কতন্ত্র সরকারের বিরুদ্ধে যারাই আমাদের সাথে শরিক হবে সবাইকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করবো। তবে, তারা (ভাসানী অনুসারী পরিষদ) কেনো এ নামে রাজপথে আমাদের সাথে আছে তা আমার জানা নেই। গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও আমাদের সাথে শরিক হতে পারে।

এ বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ মূলত একটি সংগঠন। একজন ব্যক্তির নাম করে একটি সংগঠনকে রাজনৈতিকভাবে আত্মপ্রকাশ করা তাদের স্বাধীনতার বিষয়। এখন জনগণ তাদের কিভাবে নেবে ভবিষ্যৎ বলে দিবে। তবে, আমার জানামতে, তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। আমি গণতন্ত্র মঞ্চের একজন শীর্ষনেতা হয়ে এরচেয়ে বেশি কিছু মন্তব্য করা আমার সমীচীন হবে না।

নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক ও গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষনেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ রাজনৈতিক দল কিনা তা সংগঠনটির নেতারাই ভালো বলতে পারবেন। দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে কোনো রাজনৈতিক দলের বাইরে সামাজিক সংগঠনকেও আমরা আমাদের শরিক করতে পারি।

এবিষয়ে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম বাবলুকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি, এমনকি ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও উত্তর দেননি।