Home জাতীয় ভাইকে খুন করে বাদী হিসেবে নিজেই খুনের বিচার চান

ভাইকে খুন করে বাদী হিসেবে নিজেই খুনের বিচার চান

34

ডেস্ক রিপোর্ট: মামলার তথ্য দাতা হিসেবে বাদীকে মূল অপরাধী হিসেবে সন্দেহ করা প্রচলিত ধারণার পরিপন্থী। কারণ ভিকটিমের পক্ষে তাকেই মামলা প্রমাণ করতে হয়। তাই বাদীকে দোষী প্রমাণ করতে যথেষ্ট ও সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রয়োজন হয়। কিশোরগঞ্জে আপন ভাইকে নৃশংসভাবে খুন করে বাদী নিজেই।

জানাযায়, পারিবারিক, জমিজমা নিয়ে বিরোধ এবং নেশা করতে বাধা দেওয়ায় এসিড মেরে, পানিতে ডুবিয়ে ঘাড় ভেঙ্গে নৃশংস ভাবে ভিকটিম স্বপন মিয়া (৩৮) কে হত্যা করল তার আপন ছোট ভাই মোঃ রিপন মিয়া(৩৫) । খুনী রিপন মিয়াই পরবর্তীতে ভাই হত্যায় বাদী হয়ে এজাহারে ০৩ জনকে আসামী করে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

তদন্তে জানা যায় যে, ভিকটিম স্বপন মিয়ার ৪ ভাই ও ১ বোন। ভাইদের মধ্যে ভিকটিমের বড় ভাই খোকন মিয়া (৪০) সৌদি প্রবাসি, ভিকটিম স্বপন মিয়া স্থানীয় বাজারে চা বিক্রেতা, সন্দিগ্ধ আসামী মোঃ রিপন মিয়া ভিকটিমের ছোট ভাই। উক্ত আসামী পূর্বেই মালয়েশিয়া প্রবাসি ছিল। ঘটনার অনুমান ২/৩ বছর পূর্বে মোঃ রিপন মিয়া মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসে। করোনার কারনে উক্ত আসামী বিদেশে না যেতে পেরে বাড়ীর পাশে মাছের খামারসহ কৃষি জমি আবাদ করতো। ভিকটিমের সবার ছোট ভাই সোহেল মিয়া (৩১) একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধি। ভিকটিম স্বপন মিয়াকে হত্যার তিন দিন পর তার ছেলের জন্ম হয়। তাই তার স্ত্রী মামলার বাদী হতে পারেননি।

পিবিআই পুলিশ সুপার, কিশোরগঞ্জ জেলা (ইউনিট ইনর্চাজ )জনাব মোঃ শাহাদাত হোসেন, এর তত্ত্বাবধানে গ্রেফতারকৃত সন্দিগ্ধ আসামী ১। মোঃ রিপন মিয়া(৩৫), পিতা-মৃত দেওয়ান আলী, ২। আব্দুর রব(৩৫), পিতা-আব্দুল আজিজ, ৩। ইমান আলী (২৮), পিতা-আব্দুল হামিদ ভূইয়া, ৪। সবুজ (৩৫), পিতা-নান্নু মিয়া,সর্ব সাং-চাঁনপুর (ডাক্তার বাড়ী), সর্ব থানা ভৈরব, জেলা-কিশোরগঞ্জকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর, নিজ নিজ বাড়ী হতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর আসামী মোঃ রিপন মিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার আপন বড় ভাই ভিকটিম স্বপন মিয়া (৩৮) কে হত্যার করেছে মর্মে স্বীকার করায় উক্ত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়। উক্ত আসামী গত ১৮ সেপ্টেম্বর জনাব মোঃ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী, বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কিশোরগঞ্জ এর নিকট তার আপন বড় ভাই ভিকটিম স্বপন মিয়া (৩৮) কে হত্যা সংক্রান্তে নিজকে জড়িয়ে জড়িত আরো ০৫ জনের নাম উল্লেখ করিয়া ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। গ্রেফতারকৃত অপর ০৩ জন আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়।

সার্বিক তদন্তে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত সন্দিগ্ধ আসামী মোঃ রিপন মিয়া(৩৫) নিয়মিতভাবে তার পরিচিত কয়েকজন বন্ধুর সাথে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করতো। এছাড়া ভিকটিম স্বপন মিয়া এর সাথে তার ছোট ভাই আসামী মোঃ রিপন মিয়ার পারিবারিক বিভিন্ন কারনসহ পৈতৃক জমিজমা বন্টন নিয়ে বিরোধ ছিল। আসামী মোঃ রিপন মিয়াকে নেশা করতে ভিকটিম স্বপন মিয়া বাধা দিত। উক্ত নেশার বিষয়টি ভিকটিমের মাকে ভিকটিম নিয়মিতভাবে জ্ঞাত করার কারণে ভিকটিমের ছোট ভাই মোঃ রিপন মিয়া ভিকটিম স্বপন মিয়ার উপর ক্ষিপ্ত ছিল।