Home রাজনীতি ব্যানার-ফেস্টুনে গণসংযোগ শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দ্বাদশ নির্বাচনে ‘নৌকা’ আলোচনায় যারা

ব্যানার-ফেস্টুনে গণসংযোগ শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দ্বাদশ নির্বাচনে ‘নৌকা’ আলোচনায় যারা

115

বিশেষ প্রতিনিধি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আগে-ভাগেই মাঠপর্যায়ে প্রচার-প্রচারনার মাধ্যমে তোড়জোড় শুরু করেছে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অপেক্ষাকৃত তরুণদের মনোনয়ন দেয়া হবে। তারা বলছেন, আসন্ন নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকায় থাকবে ক্লীন ইমেজ ও তরুণদের নাম। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বর্তমান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ হবে। তাই প্রতিটি আসনে জনপ্রিয় ও ক্লীন ইমেজের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে হাইকমাণ্ড। এবারের নির্বাচন কম করে হলেও ১২২টি সংসদীয় আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের চিন্তা-ভাবনা করছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারনী মহল। তাদের মধ্যে কিছু সংসদ সদস্য রয়েছেন, তাঁরা কয়েকবার নির্বাচিত হয়েছেন।

কিন্তু এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে তেমন সম্পর্ক নেই। সেখানে আমাদের সাংগঠনিক অবস্থান মজবুত হলেও প্রার্থী পরিবর্তন হবে।যে সকল সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাদের পরিবর্তীতে অপেক্ষাকৃত তরুণদের দল মনোনয়ন দিবে। এছাড়াও বয়সের কারণে যারা বিভিন্ন রোগ-শোকে ভুগছেন তারাও দ্বাদশ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাবেন না। তবে গত একাদশ নির্বাচনে মাঠ চষে বেড়িয়েও যারা নৌকার মনোনয়ন পাননি, এবারও আগে-ভাগে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায় নিয়মিত যাতায়তের পাশাপাশি খোজঁখবর নিচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীদের। শুধু তাই নয়, এলাকার কেউ অসুস্থ কিংবা বিপদে পড়লে তাদের পাশে দাড়িঁয়ে মানবতার পরিচয় দিচ্ছেন অনেকে।

জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহার সময় এবং পরে নিজ নিজ সংসদীয় আসনের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং জনপ্রিয়তা অর্জনে তারা এলাকায় যাচ্ছেন, গণসংযোগ করছেন। বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে নবীন-প্রবীণ মনোনয়নপ্রত্যাশী সব নেতার নজর এখন এলাকার দিকে। এসব নেতা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় যাওয়া-আসা করছেন। বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে তাদের জনসংযোগ বেড়েছে। একইসাথে তারা দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নিয়মিত এলাকার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি যোগ দিচ্ছেন সামাজিক অনুষ্ঠানে। সরকারি দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী এইসব নেতাদের অনেকে এলাকায় ইতিমধ্যে বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছেন। মনোনয়নের দৌড়ে পুরনো প্রার্থীদের সামনে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারা। তাদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা যেমন রয়েছেন তেমনি আছেন ছাত্রলীগ কিংবা অঙ্গসংগঠনের নেতাও। ক্ষুদ রাজধানীতে গণসংযোগে নেমে পড়েছেন বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। সম্ভাব্য এসব প্রার্থীদের মধ্যে ড. মো. আওলাদ হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের পর ঢাকা-৪ নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ভোটকেন্দ্র ভিত্তিক ইউনিটে গনসংযোগ কর্মসুচি শুরু করেছেন। বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এবং আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেতে গনসংযোগ কর্মসুচি করছেন তিনি। সর্বশেষ গত ২৪ জুলাই রোববার সন্ধ্যা ৭ টায় পশ্চিম জুড়াইন ৪ নং ইউনিট (পাইপ রাস্তা) আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: ফিরোজ জামানের বাসভবন সংলগ্ন খোলা চত্বরে ৫৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত মুফতির সভাপতিত্বে ৫৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আয়োজনে ঢাকা-৪ নির্বাচনী এলাকায় কর্মীসভা ও গনসংযোগ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ড. মো: আওলাদ হোসেন। ঢাকা-৬ আসনে এবার নৌকার মনোনয়ন চাইবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করীম রেজা। গেণ্ডারীয়া-সুত্রাপুর,ওয়ারী এবং আংশি কোতুয়ালী এলাকা নিয়ে এই আসনটি গঠিত। তার দাবি, ঢাকা-৬ আসনের প্রতিটি মানুষ ও এলাকার ভোটারদের সাথে নিবিড় সর্ম্পক রয়েছে। এই এলাকায় ছোট থেকে বড়ও হয়েছেন তিনি। মনোনয়ন পেলে জয়ি হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আসনটি উপহার দিতে পারবেন রেজাউল করীম রেজা। তবে ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: শাহে আলম মুরাদ দ্বাদশ নির্বাচনে বরিশাল-২ আসনে নৌকার মনোনয়ন চাইবেন। ক্লীণ ইমেজের এই নেতা জানান, স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি কাজ করছি। দলকে গুছিয়ে রেখে এলাকার মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মমতাময়ী মা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার উপর আস্থা রাখবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে রাজধানীর বাইরের জেলাগুলোতে যারা গণসংযোগ করছেন তাদের মধ্যে-ফরিদপুর-১ আসন (বোয়ালমারী- মধুখালী-আলফাডাঙ্গা) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জনপ্রিয় ছাত্রনেতা লিয়াকত শিকদার। তিনি নীরবে দীর্ঘ দিন ধরে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বেশ জনপ্রিয় তিনি এলাকায়। মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেতে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির।স্থানীয় নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় প্রতিনিয়ত আলোচনা-মতবিনিময়সহ নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন তিনি। এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দৌড়ে অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন গোলাম সারোয়ার কবির। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার (নরসিংদী-৫) আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।বাগেরহাট-৪ আসনে আলোচিত হয়ে উঠেছেন সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ.এম. বদিউজ্জামান সোহাগ। নৌকার মনোনয়ন পেতে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে ঈদের পর গণসংযোগ শুরু করছেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির অন্যতম সদস্য শহীদুল্লাহ্ মুহাম্মদ শাহ নূর। কিশোরগঞ্জ-২(কটিয়াদী-পাকুন্দীয়া) আসনে নৌকার মনোনয়ন পেতে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন আলোচিত পুলিশ অফিসার (সাবেক অতিরিক্ত ডি আই জি বাংলাদেশ) বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাহার আকন্দ। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট হত্যা মামলা,২১ আগস্ট ও জেলহত্যাসহ অসংখ্য আলোচিত মামলা সাহসীকতার সাথে তদন্ত করেন। তিনি মটখলা এবং বুরুদিয়া, আচমিতা, মসুয়া, জালালপুর, সহস্রাম ধুলদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বীরমুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাদের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে নিজেকে তুলে ধরছেন। এছাড়াও দেশে প্রতিটি সংসদীয় আসনে দ্বাদশ নির্বাচনে ‘নৌকা প্রতীক’ মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।