Home সাহিত্য ও বিনোদন ” বিষণ্ণ পংক্তিমালা “

” বিষণ্ণ পংক্তিমালা “

28

।। গোলাম কবির ।।

আমাদের কবিতা গুলো আর যৌবনের
গান গায় না, মনেহয় নষ্ট সময়ের
হাওয়া লেগে অকাল বার্ধক্য আর
বৈধব্যের কালো থাবায় ম্লান
হয়ে গেছে কবিতার রোশনাই আলো।

এখন কবির কবিতায় খুঁজে পাওয়া যায়
একসময়ের উচ্ছল চঞ্চল নদীর দীর্ঘশ্বাস,
কবিতা গুলো যেনো খাল পাড়ে
পড়ে থাকা প্রায় উলঙ্গ শরীরের
কোনো তরুণীর বিভৎস মৃত দেহের
পৃথিবীর প্রতি ঘৃণায় কুঁচকে যাওয়া
খোলা চোখের অর্থহীন তাকিয়ে থাকা।

এখন খুব ভালো করে যদি খেয়াল
করে দ্যাখ তবে দেখবে এখনকার
কবিতা গুলো আর তেমন করে
মানুষের হৃদয়কে আন্দোলিত করে না,
কবিতা গুলো স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বেরিয়ে
আসে না মগজের ভিতর হতে তীব্র
গতিতে বরং মনেহয় যেনো জোর
করে কারেন্ট জালে নদীতে মাছ ধরার
মতো করে তুলে আনতে হয়
এলোমেলো শব্দ গুলো বহু চেষ্টা করে,
তবুও কী তা আর কবিতা হয়ে ওঠে!

বাড়ে শুধু অনর্থক কতো গুলো
শব্দের এক একটা সারিবদ্ধ লাইন,
যে গুলোকে ঠিক কবিতা হিসেবে
মেনে নেয়া ভীষণ কষ্টসাধ্য ব্যাপার!
তাই তো এখন কবিতা পড়ে আনন্দের
বদলে বিষাদ নেমে আসে মগজের
খোলা বারান্দা দিয়ে এক দৌড়ে।

এখন কবিতা মানেই একজন আমি,
তুমি ও সে’র ব্যক্তিগত সুখ দুঃখের
প্রাণহীন দূর্বোধ্য সংলাপের ছড়াছড়ি,
এখনকার কবিতা গুলো আর
সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কথা বলে না,
মনেহয় আমরা আমাদের কবিতা
গুলো তেমন ভাবে লিখতে পারছি না
নিকট অতীতের কবিদের মতো,
তাই এইসময়ের কবি হিসেবে নিজেকে
ভীষণ ব্যর্থ এবং অসহায় মনেহয়
নিজেরই অযোগ্যতার জন্য।