Home স্বাস্থ্য বিএসএমএমইউতে ১মবারের মতো গরীব রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে এনজিওগ্রাম সেবা প্রদান

বিএসএমএমইউতে ১মবারের মতো গরীব রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে এনজিওগ্রাম সেবা প্রদান

29

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হৃদরোগ বিভাগে প্রথমবারের মত গরীব রোগীদের ফ্রি এনজিওগ্রাম করা হয়েছে। সোমবার সকালে হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাবে এ সেবা দেয়া।

এই কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর পূণ্য স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপিং, মেডিসিন, সার্জারি, ডেন্টাল, বেসিক সাইন্স অনুষদ ভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের উদ্যোগে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবা দেওয়া, সার্জারি সেবা দেওয়া, ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে সি ভাইরাসের ওষুধ বিতরণ, প্লাস্টিক সার্জারির উদ্যোগে শহীদ শেখ জামাল ফ্রি প্লাস্টিক সার্জারি ক্যাম্পের আওতায় জন্মগত মুখমণ্ডলের বিকৃতি, ঠোট কাটা ও তালু কাটা রোগীদের অস্ত্রপ্রচার, কার্ডিওলজি বিভাগের উদ্যোগে বিনামূল্যে অস্বচ্ছল রোগীদের এনজিওগ্রাম ও এনজিওপ্লাস্টি, বিনামূল্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার সার্জারি, স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে বিসা হিস্ট্রেকটোমি, মিয়োমেকটোমির মতো গুরুত্বপূর্ণ সার্জারি, বিনামূল্যে ল্যাপকল সার্জারিসহ বিভিন্ন সেবা দেওয়া হয়। এ বছর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ মোট ৩৭১৫ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছেন। এরমধ্যে মেডিসিন অনুষদভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকবৃন্দ ২৩৩১ জন রোগীকে, সার্জারি অনুষদভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকবৃন্দ ১২৫৪ জন রোগীকে এবং ডেন্টাল অনুষদভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকবৃন্দ ১৩০ জন রোগীকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছেন।হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ রসুল আমীন প্রথম এনজিওগ্রাম করেন

এছাড়া জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা, শোকের প্রতীক কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও তবারক বিতরণ, বাদ ফজর থেকে বাদ জোহর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানপন্থী ষড়যন্ত্রকারীরা আবার রাজপথে সক্রিয় হচ্ছে। এরাই সেই চক্র যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রেখেছিল।

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের তারা দেশে বিদেশে পুরস্কৃত করেছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের দিন ১৫ আগস্টে তারা কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করতো। আজ সময় এসেছে স্বাধীনতায় বিশ্বাসী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী সব পক্ষকে সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের রুখে দাঁড়ানোর। জাতীয় শোক দিবসে আমাদের শপথ হোক আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের রুখবো এবং নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করবো।
বিভিন্ন কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আলী আসগর মোড়ল, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, বেসিক সাইন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শিরিন তরফদার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ডা. এসম মোস্তফা জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যানরা, শিক্ষক, বিভিন্ন অফিস প্রধানরা, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় শোক দিবসের দিন আজ ১৫ আগস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতাল (ইনডোর), ফিভার ক্লিনিক, পিসিআর ল্যাব ও জরুরি বিভাগ খোলা ছিল। এছাড়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা কনভেনশন সেন্টারে স্থাপিত ফিল্ড হাসপাতালের কার্যক্রমও যথারীতি চলছে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার (২০ আগস্ট) অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। এতে সভাপতিত্ব করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।