ডেস্ক রিপোর্ট: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, এমপি এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মধ্যে বৃহস্পতিবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন রাশিয়াকে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু উল্লেখ করে বলেন, দুদেশের বন্ধুত্বের সূচনা হয়েছিল ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অনন্য ভূমিকার মাধ্যমে। তিনি বলেন ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক মস্কো সফর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি স্থাপন করে। বঙ্গবন্ধুর আহ্ববানে মুক্তিযুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন অপসারণের মাধ্যমে বন্দরটিকে জাহাজ চলাচলের উপযোগী করতে সহায়তা করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। ২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়ায় সরকারি সফরের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা এবং পরবর্তীতে দেশ গঠনে অবদান রাখতে পেরে সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরসূরি দেশ হিসেবে রাশিয়া গর্ববোধ করে। তিনি দু’দেশের বর্তমান সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্ঠ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প যথাসময়ে সম্পন্ন করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে তার সরকার অত্যন্ত আগ্রহী। রাশিয়া বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থায় জ্বালানী, খাদ্য ও সার সরবরাহের অভিপ্রায় ব্যক্ত করে। দু’দেশ শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা করে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে রাশিয়ার সহযোগিতা কামনা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ বলেন, রাশিয়া নিয়মিতভাবে মায়ানমার সরকারের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছে এবং রাশিয়া ও মায়ানমারের মধ্যে আসন্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি তিনি আবারও তুলে ধরবেন।

এছাড়াও, দু’পক্ষ ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা, জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে পারষ্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।আলোচনা শেষে দুই মন্ত্রী একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, রাশিয়ান ফেডারেশনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ দু’দিনের সরকারি সফরে আজ সন্ধায় ঢাকা পৌঁছালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। রাশিয়ার কোন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।