ডেস্ক রিপোর্ট: মার্কিন দূতাবাস বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া অনিরাপদ। রোহিঙ্গা গণহত্যার ষষ্ঠ বার্ষিকীতে শুক্রবার এক বিবৃতিতে একথা বলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র তাদরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদেরওপর বার্মা সেনাবাহিনীর সহিংসতা, ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যাভিযানের ছয় বছর পূর্ণ হয়েছে। সাড়ে সাত লক্ষ রোহিঙ্গাকে বহনযোগ্য অল্পকিছু জিনিস নিয়ে পালাতে বাধ্য করেছিল শাসকদের এই গণহত্যা। বাংলাদেশের জনগণ সহানুভূতি ও মানবতার হাত বাড়িয়ে তাদের স্বাগত জানিয়েীছল। প্রায় এক মিলিয়ন উদ্বাস্তুর প্রতি আতিথেয়তা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের জনগণ। আমরা এই উদারতার প্রশংসা করি।
বিবৃতিতে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে তার এই প্রচেষ্টায় মসর্থন জানাতে সমবেত হয়েছিল। আমেরিকার জনগণ ২০১৭ সাল থেকে এই অঞ্চল জুড়ে উদ্ভুত মানবিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় ২.১ বিলিয়নের ডলারেরও বেশী অবদান রেখেছে। এর ভেতর রোহিঙ্গা শরনার্থী এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ১.৭ বিলিয়ন ডলারের বেশী সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ । আমাদের এই সমর্থন অবিচল রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলেন, বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে আশ্রয় খুঁজে ফেরা রোহিঙ্গারা দীর্ঘকাল ধরে ভুগছে। মর্যাদার সাথে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাওয়া, সপরিবারে শান্তিতে বাস করা এবং অর্থ ও উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপনের সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার। সেই লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি, আন্তর্জাতিক আদালতের সমর্থনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার, নৃশংস অপরাধীদের জন্য জবাবদিহিতা এবং সংকটের সমাধান খুঁজে পেতে প্রকিশ্রুতিবদ্ধ।
দূতাবাস বলেন, বার্মার অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠির জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহবান জানাই। আমাদের অবশ্যই বাংয়লাদেশ সরকার এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে। বিশ্বজুড়ে অন্যান্য সংকট যেহেতু সীমিত সম্পদের জন্য প্রতিদ্বন্দিতা করে, সেই কারনে রোহিঙ্গারা তাদের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী এবং নিজ পরিবারের অর্থনৈতিক কল্যাণে কীভাবে অবদান রাখতে পারে তা চিহ্নিত করার গুরুত্ব বাড়ছে। এর মাঝে রয়েছে আয়-উৎদপাদনমূলক কর্মকান্ড এবং আনুষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের সুযোগ, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের নিজেদের ভবিষ্যতে আরও বড় অবদান রাখার লক্ষ্যে রোহিঙ্গা সামাজিক সংস্থাগুলিতে তাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করা। আমরা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে সর্বোত্তম চর্চা , ধ্যা-ধারণা এবং সংস্থান বিনিময় উন্মুখ।

মার্কিন দূতাবাস আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া অনিরাপদ। তাই আমরা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়, পুনর্বাসনের মাধ্যমে দ্বায়িত্ব ভাগ করে নিয়ে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার সর্বঙ্গীন সমাধানে অবদান রাখছি।আন্তর্জাতিক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখার অন্যান্য দেশগুলোর উদারতাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আশা করি, ঐতিহ্যগতভাবে পুনর্বাসন দেয়া দেশগুলোর বাইরেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টায় যোগ দেবে। ২০০৯ সাল থেকে , যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ এই অঞ্চল থেকে প্রায় ১৩,০০০ রোহিঙ্গাকে স্বাগত জানিযেছেন।

যেহেতু এই সংকট সপ্তম বছরে পর্দাপন করছে, সমগ্র অঞ্চল জুড়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে বা শেষ করতে সম্ভাব্য সব বিকল্প খুঁজতে আমাদের অবিচল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।