Home সারাদেশ বরিশাল সিটি নির্বাচন: আগামীকাল ভোট

বরিশাল সিটি নির্বাচন: আগামীকাল ভোট

57

বরিশাল অফিস: বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে বেলা টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা শেষ হয়েছে।এখন মেষ প্রস্তুতির মধ্যে ব্যস্ত মসয় পার করছে প্রার্থীরা।

বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ভোটার দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ এবং পুরুষ ভোটার এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯। নির্বাচনে সাতজন মেয়র, ১১৮ জন সাধারণ ওয়ার্ডের ও ৪২ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪ কক্ষে ভোটগ্রহণ হবে।

মুলত মেয়র পদে আলোচনায় আছেন চার প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনীত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম, জাতীয় পার্টির মনোনীত ইকবাল হোসেন এবং সাবেক ছাত্রদল নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান। নির্বাচনে এই চার প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন নগরের ভোটাররা।
এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। অতীতে বরিশাল সিটিতে দলটির প্রার্থীরা একাধিকবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এখানে বিএনপির বড় ফ্যাক্টর বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপির প্রার্থী না থাকায় তাদের ভোট চার ভাগ হবে।
বিএনপি থেকে নির্বাচিত প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর বাবার ঘনিষ্ঠ অনুসারী বিএনপির নেতাকর্মীদের ভোট কামরুল আহসান পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতীয় পার্টি থেকে লাঙল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইকবাল হোসেন তাপস। তাঁর ভাই বরিশাল দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। সে সুবাদে তিনি বিএনপির একটা ভোট পাবেন বলে আশা করছেন।

স্থানীয় একাধিক রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরিশালে গত পাঁচ বছরে বর্তমান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর কাছে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছেন। বিএনপির এই অংশ বরিশালে সাদিক আব্দুল্লাহর দাপটের অবসান চাইছে।ফলে তারা অনেকেই খোকন সেরনিয়াবাতকে ভোট দিতে পারে।
আবার বরিশালে বিএনপির একটি অংশ কট্টরপন্থী। এই অংশের অনেকেই ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিমকে ভোট দিতে পারেন।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থিতা ঠেকাতে না পেরে ১৯ জনকে বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এবার দলীয় ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়া ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা।
নির্বাচন সামনে রেখে নগরজুড়েই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। নগরের প্রতিটি গলি মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিপুলসংখ্যক পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মোড়ে মোড়ে চলছে নির্বাচনী আড্ডা, আলোচনা। নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করায় ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর বিএমপি হেডকোয়ার্টারে নির্বাচনের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেছেন, ১২৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০৬টি কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) । প্রার্থীরা যেসব কেন্দ্র নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সেগুলো যুক্ত করে মোট ১০৬টিকে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়েছে।
তিনি জানান, নির্বাচনের দিন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র‌্যাব, এবিপিএন ও আনসার মিলিয়ে মোট চার হাজার ৪০০ সদস্য মোতায়েন থাকবেন।
বরিশাল নগরের সব ভোটকেন্দ্র ও কক্ষে (বুথ) সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। আজ রবিবার ক্যামেরাগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে।এক হাজার ১৪৬টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি করে এবং প্রতিটি কেন্দ্রের প্রবেশপথে দুটি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
ক্যামেরার মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে ভোট পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণ হবে আগেরবারের মতো ইভিএমে। গত ২৯ মে দেড় হাজার ইভিএম নগরীতে এসে পৌঁছেছে।
নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সমন্বিত টহল শুরু করেছে।