Home বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পানির অপচয় রোধে ডিজিটাল ‘অটো টব’

পানির অপচয় রোধে ডিজিটাল ‘অটো টব’

32

ডেস্ক রিপাের্ট: পানির অপচয় রোধে পরিবেশবান্ধব বনায়নের লক্ষ্যে ডিজিটাল ‘অটো টব’ আবিষ্কার করেছেন মানিকগঞ্জের সিংগাইরের আব্দুল হালিম। ডিজিটাল অটো টবে একবার পানি দিলে তিন মাসে আর পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া টবটিতে প্রযুক্তিসম্পন্ন একটি ডিভাইজের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে পানি দেওয়া সম্ভব বলে জানান হালিম।

সরেজমিন সোমবার দেখা গেছে, সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের ধল্লা- ফোর্ডনগর শহীদ রফিক সেতু সংলগ্ন সৌদি খেজুর নার্সারি নামে একটি দোকানে সাজানো রয়েছে শতাধিক ডিজিটাল অটো টব। পাশেই রয়েছে নার্সারির মালিক আব্দুল হালিমের গড়া একটি গবেষণাগার। তিনি দীর্ঘ দুই বছর গবেষণা করে পানির অপচয় রোধে পরিবেশবান্ধব এ টব আবিষ্কার করেন। টবটিতে পরিমাণ অনুযায়ী তরল সার প্রয়োগের মাধ্যমে ফুল ও ফলের দ্বিগুণ ফলন হয়।

এ ডিজিটাল টবগুলো এমনভাবে তৈরি, এতে কোনো ধরনের ডেঙ্গি মশার লার্ভা জন্মানোর সুযোগ নেই। পরিবেশবান্ধব এ ডিজিটাল টবের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। দেশের পাশাপাশি সৌদি আরব, দুবাই, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়াতেও এ টবের চাহিদা বেড়েছে। ইতোমধ্যে আব্দুল হালিম শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ডিজিটাল এ টবের অনুমোদন পেয়েছেন। তার এ টবের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে অনেকের। প্রতিটি টব ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। বর্তমানে বাণিজ্য মেলায় টবের স্টল রয়েছে। আব্দুল হালিম জানান, ডিজিটাল অটো টবের পানি শেষ হলে আপনার মোবাইলে নোটিফিকেশন চলে যাবে। আপনি আপনার মোবাইল ফোনের অ্যাপসের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে গাছের টবে পানি দিতে পারবেন। এ টবে একবার পানি দিলে তিন মাস চলবে। তিনি আরও জানান, প্রচলিত নিয়মে আমরা যে প্রক্রিয়ায় টবে বা ফসলি জমিতে পানি দিই এতে পানির অপচয় হয়।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এক কেজি ধান উৎপাদন করতে গড়ে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার লিটার পানি ব্যবহার হয়। এ পানির আশি ভাগই অপচয় হয়। আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এক কেজি ধান উৎপাদন করতে ৫০০ লিটার পানিই যথেষ্ট। এছাড়া ভূগর্ভস্থ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন করায় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। পানির লেয়ার নিচে যাচ্ছে ও পৃথিবীর অনেক স্থান ইতোমধ্যে দেবে গেছে। কৃষিক্ষেত্রে তার এ আবিষ্কারের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ পানির অপচয় রোধ সম্ভব। এতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপন বলেন, আব্দুল হালিমের আবিষ্কার করা ডিজিটাল অটো টব টেকসই, অর্থ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। প্রযুক্তিসম্পন্ন ডিজিটাল টবটির দেশ ও দেশের বাইরে চাহিদা রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে। এছাড়া তার আবিষ্কার করা ফিল্ড প্রযুক্তিটি কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করবে।-যুগান্তর