Home জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

28

সংবাদ সম্মেলনে মোংলার বীর মুক্তিযোদ্ধা

স্টাফ রিপোটার: নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা কেশব লাল মণ্ডল। নির্যাতিত রামপাল ও মোংলাবাসীর পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনার পর থেকেই বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) আসনে, বিশেষ করে পুরো মোংলা উপজেলায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাবিবুর নাহারের সশস্ত্র ক্যাডাররা ত্রাসের রাম রাজত্ব কায়েম করেছে।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কেশব লাল মন্ডল। উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা বিধান চন্দ্র রায়, মিঠাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল, বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস, ইউপি সদস্য আশীষ মন্ডল, নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য পিন্টু রায়, নয়ন কুমার মন্ডল, সঞ্জয় বাছাড়, নির্মল সরকার, দেবাশীষ মন্ডল, তপন ফকির, দীপা ফকির, তাপস সরকার, বিবেক মন্ডল, অমিত সরকার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহারের কতিপয় নেতা ও ক্যাডার বাহিনীর ধারাবাহিক জুলুম, অত্যাচার, হামলা, মারধর, দখল, ভাংচুর ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এলাকার সাধারণ মানুষ জীম্মি হয়ে পড়েছে। বিপুল সংখ্যক হিন্দু পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে বন্দি জীবন যাপন করছে। ইতিমধ্যে কয়েকশ’ পরিবার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে মোংলা থেকে পালিয়ে অন্যত্র বসবাস করছে। শুধুমাত্র হাবিবুন নাহারকে ভোট না দেওয়ার কারণে এলাকায় এধরণের অস্থিতীশীল ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, বিগত ৩টি সংসদ নির্বাচনে এখানে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় হাবিবুন নাহার অনেক সহজেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু এবার দলীয় কোন বাধা না থাকায় বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মোংলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়তে হয়। নির্বাচনের শুরু থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের সমর্থক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কর্মী ও নেতাদের নানাভাবে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। এরপর ভোট গণনা শেষ হতেই সশস্ত্র দূর্বত্তরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা চালায়। বসত ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানে ভাংচুর করে। মাছের ঘের জবর দখর করে ঘেরের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাড়ির শিশু ও বৃদ্ধ মহিলারা। এমনকি তাদের সশস্ত্র দু’জন মুক্তিযোদ্ধাও মারাত্মক আহত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা, মিঠাখালী, সুন্দরবন ও চিলা ইউনিয়নে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সবচেয়ে বেশী তান্ডব চালিয়েছে। এসব তান্ডবের নেপথ্যে রয়েছে মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, সুন্দরবন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবির হোসেন ও তার সহযোগী আহাদুল মেম্বর, মিঠাখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ইস্রাফিল হাওলাদার, চিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন, চাঁদপাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ভাই হাফিজুল ও তার সহযোগী সেলিম। তারা ধারাবাহিকভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের উপর নিয়াতন ও জুলুম চালালেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কারণে আমরা নিরূপায় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ওই সকল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি দলীয় ভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।