Home জাতীয় নাপা সিরাপ নয়, মায়ের পরকীয়ায় প্রাণ যায় সেই দুই শিশুর, মা গ্রেফতার

নাপা সিরাপ নয়, মায়ের পরকীয়ায় প্রাণ যায় সেই দুই শিশুর, মা গ্রেফতার

41

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জে নাপা সিরাপ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে পুলিশ জানিয়েছে। পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে মিষ্টির সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দুই শিশুকে তাদের মা লিমা বেগম নিজেই হত্যা করে বলে জানা গেছে। পরে এ ঘটনা ঢাকতে বাজার থেকে নাপা সিরাপ সিরাপ এনে খাওয়ানো
হয়।
এ ঘটনাকে ‌‌‘পরিকল্পিত হত্যা’ উল্লেখ করে দুই শিশুর বাবা ইটভাটা শ্রমিক সুজন খান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) ভোরে তাদের মা লিমা বেগমকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, শিশু দুটির মা
পুলিশের সাথে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। ইতোমধ্যেই তার জবানবন্দির গ্রহনের জন্য আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজাদ রহমান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, নিহত দুই শিশুর মা লিমা বেগম কথিত প্রেমিককে বিয়ে করার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে রেখেছিলেন। এজন্য পথের বাধা সরাতে নিজের দুই সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। এসব ঘটনা পুলিশের কাছে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন লিমা।
উল্লেখ্য গত ১৩ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুরে নাপা সিরাপ খেয়ে একই পরিবারের দুই সহোদর শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। অভিযোগ ওঠার পর সারা দেশে একটি নির্দিষ্ট ব্যাচে প্রস্তুত ওষুধটির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। বাংলাদেশের বড় ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি প্যারাসিটামলের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড নাপা।
পাশাপশি দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর জেলার সকল ওষুধের দোকানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নাপা সিরাপ ও নাপা ড্রপ বিক্রি বন্ধ রাখার জন্য এক বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি।
পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে নির্দিষ্ট ব্যাচের নাপা সিরাপ পরীক্ষা করে তার মধ্যে কোনো ক্ষতিকর উপাদান পায়নি বলে প্রতিবেদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

পরে নিহত শিশুর পরিবার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সন্ধেহের দৃষ্টি যায় মিশু দুটির মায়ের দিকে এবং পিতার মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। লিমার পরকিয়া প্রেমিককেও গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।